ময়লা পোশাকে থানায় হাজির মহিলা, নাম শুনেই ঘাম ছুটল অফিসারদের

ময়লা পোশাকে থানায় হাজির মহিলা, নাম শুনেই ঘাম ছুটল অফিসারদের

মন্দসর জেলার গান্ধীসাগর থানা এলাকার নাভলি গ্রামের বাসিন্দা ললিতা বাই দেড় বছর পর হঠাৎ বাড়ি ফেরায় তাকে দেখে হতবাক হয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। পুলিশও বিস্মিত হয়। ললিতার হত্যার অভিযোগে চার যুবক ঝাবুয়ার জেলেও বন্দী আছে।

তার কথিত মৃতদেহের সৎকারও করা হয়েছিল। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। এখন পুলিশের সামনে চ্যালেঞ্জ হলো, যে মহিলার মৃতদেহের সৎকার করা হয়েছিল, তিনি কে ছিলেন। এদিকে, ললিতা গান্ধীসাগর থানা পুলিশকে যে গল্প শুনিয়েছে, তা জেনে সবাই হতবাক হয়ে গেছে। ললিতা তার নথি পুলিশকে দেখিয়েছে। ললিতা দুই সন্তানের জননী। বাড়ি ফেরায় তার দুই সন্তান খুব খুশি। ঘটনাটি ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের।

আসলে ঘটনাটি ২০২৩ সালের আগস্ট মাসের। ললিতা কাউকে কিছু না বলে চলে গেলে তার বাবা রমেশ গান্ধীসাগর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ঝাবুয়া জেলার থান্দলা থানা এলাকার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায় একটি ট্রাক এক মহিলাকে পিষে দিয়ে চলে যায়। ললিতার পরিবারের সদস্যরা ভাইরাল ভিডিওর খবর জানতে পেরে থান্দলা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেন। ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহটি ললিতার বলে শনাক্ত করা হয়। পুলিশ হত্যার অভিযোগে ভানপুরার বাসিন্দা ইমরান, শাহরুখ, সোনু এবং এজাজকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠায়। চারজন ঝাবুয়া জেলে বন্দী আছে এবং মামলাটি আদালতে বিচারাধীন।

বাড়ি ফিরে আসা ললিতা পুলিশকে জানায় যে সে দুই দিন ভানপুরার বাসিন্দা শাহরুখের সাথে ছিল। সে তাকে কোটায় নিয়ে যায় এবং সেখানে পাঁচ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেয়। এরপর সে কোটাতেই বন্দী ছিল। সুযোগ পেয়েই পালিয়ে এসে বাড়িতে ফিরে আসে। ললিতা জানায়, ‘আমি স্থানীয়দের কাছে গ্রামে পৌঁছানোর জন্য সাহায্য চেয়েছিলাম। আমার কাছে মোবাইল ছিল না, তাই আমি আমার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি।’

এদিকে, থান্দলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্রিজেশ মালব্য জানান, কয়েক মাস আগে দিল্লি-মুম্বাই এক্সপ্রেসওয়েতে এক মহিলার ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল। তার মুখ এবং শরীর পাথর দিয়ে মারাত্মকভাবে থেঁতলানো ছিল। আমরা সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে মৃতার ছবি পরিচয়ের জন্য পাঠিয়েছিলাম। গান্ধীসাগর থেকে আমরা একটি ফোন পাই। কিছু লোক আসে এবং মৃতার পরিচয় ললিতা বাই হিসেবে নিশ্চিত করে। তারা জানায় যে তাদের মেয়ে ভানপুরের শাহরুখের সাথে পালিয়ে গিয়েছিল। শাহরুখ, ইমরান, সোনু এবং এজাজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। আমি এই বিষয়ে মন্তব্য করতে পারি না।’

এদিকে, গান্ধীসাগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তরুণ ভরদ্বাজ এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান যে ললিতা বাই ফিরে এসেছেন। পুলিশ তার পরিচয় যাচাই করেছে। আমরা কখনো ভাবিনি যে সে বেঁচে আছে এবং বাড়ি ফিরবে। আমরা দেড় বছরে কী কী বলা হয়েছে, তার সূত্রগুলো মেলানোর চেষ্টা করছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং থান্দলা থানা পুলিশকে নতুন ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। পরবর্তী তদন্ত থান্দলা পুলিশ করবে।’

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *