“ও এত সুন্দর দেখতে হয় কী করে?”; প্রচণ্ড হিংসা, বন্ধুর মুখে অ্যাসিড ছুঁড়ল বান্ধবী

“ও এত সুন্দর দেখতে হয় কী করে?”; প্রচণ্ড হিংসা, বন্ধুর মুখে অ্যাসিড ছুঁড়ল বান্ধবী

মধ্যপ্রদেশের জবলপুর থেকে এক মর্মান্তিক ঘটনা সামনে এসেছে। এক বান্ধবী নিজেরই প্রিয় বন্ধুর উপর অ্যাসিড হামলা করেছে। সে কেন এমন করল, তার কারণ শুনলে আপনিও অবাক হয়ে যাবেন।

নিজের বান্ধবী সুন্দর দেখতে এবং তার অনেক উন্নতি হচ্ছে দেখে অন্য বান্ধবীর মনে প্রচণ্ড হিংসা হচ্ছিল। শুধু তাই নয়, একটি ছেলের কারণেও তাদের মধ্যে বিবাদ চলছিল। এই কারণেই সে তার বান্ধবীকে বিকৃত করার পরিকল্পনা করে। বর্তমানে পুলিশ এই ঘটনায় এক তরুণ এবং এক তরুণীকে গ্রেপ্তার করেছে এবং পরবর্তী তদন্ত চলছে।

পুলিশ সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিবিএ পড়া ২৩ বছর বয়সী শ্রদ্ধা দাস এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রী ২১ বছর বয়সী ইশিতা সাহু একে অপরের ভালো বন্ধু ছিল। কিন্তু গত দুই মাস ধরে তাদের মধ্যে কথা বলা বন্ধ ছিল। শ্রদ্ধা দাস দেখতে খুবই সুন্দরী ছিল, তার সম্প্রতি চাকরি হয়েছিল। তার কাছে দামি ফোন এবং বিলাসবহুল জীবনযাপন ছিল। এই সব দেখে ইশিতার মনে ধীরে ধীরে তার প্রতি হিংসার জন্ম নিতে শুরু করে। এর মধ্যেই দুজনের জীবনে একটি ছেলের প্রবেশ এই ঘটনাকে আরও একটি নতুন মোড় দেয়।

কীভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছিল?

শ্রদ্ধা দাস দেখতে সুন্দরী হওয়ায় ইশিতার মনে তার প্রতি হিংসা তৈরি হতে শুরু করেছিল। এই ক্ষোভ মনে রেখে ইশিতা শ্রদ্ধাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পুলিশ জানিয়েছে, ইশিতা এই ঘটনার পরিকল্পনা প্রায় ১৫ দিন আগেই করেছিল। সে গুগলে মুখ নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন ধারণা খুঁজেছিল। শেষ পর্যন্ত সে অ্যাসিড দিয়ে মুখ বিকৃত করার পদ্ধতি বেছে নেয়। ইশিতা তার পরিচিত বন্ধু অংশ শর্মার সাহায্যে কলেজের ভুয়ো লেটারহেড এবং কলেজের সীল ব্যবহার করে ভুয়ো কাগজপত্র তৈরি করে। এরপর সে সিভিক সেন্টারের একটি দোকানে পৌঁছায়, যেখানে দোকানদার প্রথমে অ্যাসিড দিতে অস্বীকার করে, কারণ তার কাগজপত্র নিয়ে কিছু সন্দেহ হয়েছিল। তখন অংশন ফোন করে নিজেকে একটি বেসরকারি কলেজের অধ্যাপক পরিচয় দিয়ে ইশিতাকে অ্যাসিড দিতে বলে।

শ্রদ্ধার ৫০% মুখ পুড়ে গেছে!

ঘটনার দিন ইশিতা চমক দেওয়ার অজুহাতে শ্রদ্ধাকে বাড়ির বাইরে ডেকেছিল। তবে শ্রদ্ধা অস্বীকার করলে, ইশিতা বেড়াতে যাওয়ার জন্য জেদ করতে থাকে। তবে শ্রদ্ধা আবারও অস্বীকার করলে, ইশিতা ‘সারপ্রাইজ দেখাব’ বলে একটি জার থেকে অ্যাসিড বের করে তার মুখে ছুঁড়ে মারে। এতে শ্রদ্ধার প্রায় ৫০% মুখ পুড়ে গেছে এবং তাকে গুরুতর অবস্থায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল ইশিতা!

এই পুরো ঘটনায় পুলিশ প্রধান অভিযুক্ত ইশিতা সাহু এবং তার সহযোগী অংশ শর্মাকে গ্রেপ্তার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। ইশিতার মা সরিতা সাহু জানিয়েছেন যে, ইশিতা গত অনেক দিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল। তারা মেয়ের চিকিৎসাও করিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, ইশিতা মাকে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছিল এবং নিজেও আত্মহত্যা করার কথা বলেছিল, যার কারণে মা খুব চিন্তিত ছিলেন। এখন এই মামলায় দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পরবর্তী তদন্ত চলছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *