‘আমি কি ভারতে ফিরে যাব?’ ১৬ লাখের চাকরি ছেড়ে কানাডায় গিয়ে সর্বস্বান্ত তরুণী!

আপনারা নিশ্চয়ই গুরুজনদের কাছে প্রায়শই শুনেছেন যে, জীবনের বড় সিদ্ধান্তগুলো তাড়াহুড়ো করে নেওয়া উচিত নয়। ভেবেচিন্তে পদক্ষেপ না নিলে পরে পস্তাতে হয়। এমনই কিছু ঘটেছে ২৮ বছর বয়সী এক প্রবাসী ভারতীয় তরুণীর সাথে। দুই বছর আগে ভারতে ১৬ লক্ষ টাকা বার্ষিক বেতনের একটি ভালো চাকরি ছেড়ে তিনি কানাডা চলে গিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন কানাডায় গিয়ে জীবন আরও আনন্দময় হবে, কিন্তু ঘটল ঠিক উল্টোটা। যেখানে ভালো দিনের স্বপ্ন দেখেছিলেন, এখন সেখানে নিজের সিদ্ধান্ত নিয়েই অনুতপ্ত তিনি।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২৮ বছর বয়সী এই তরুণী এখন তার স্বপ্ন নিয়ে খুবই চিন্তিত এবং নিজের সিদ্ধান্তে অনুতপ্ত। ভারতে ১৬ লক্ষ টাকা বার্ষিক আয়ের চমৎকার একটি চাকরি ছেড়ে দুই বছর আগে কানাডায় পৌঁছান তিনি। সেখানে একটি রিমোট জব পেলেও, এখন তিনি তার কর্মজীবন এবং আর্থিক অনটনে ভুগছেন। তার এই দুর্দশার কথা হয়তো কেউ জানতেও পারত না, যদি না তিনি নিজের এই অভিজ্ঞতা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতেন। তার কথা শুনে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারকারীরা নানা পরামর্শ দিচ্ছেন; কেউ ভারতে ফিরে আসার কথা বলছেন, আবার কেউ কানাডাতেই কঠোর পরিশ্রম করার কথা বলছেন।
কানাডায় চাকরি পেলেও জীবনে আনন্দ নেই, সঙ্গীও বেকার
বর্তমানে এই প্রবাসী ভারতীয় তরুণী কানাডায় বার্ষিক ৮২,০০০ কানাডিয়ান ডলার (প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা) আয় করছেন। যেকোনো ভারতীয়র কাছে এই বেতন অনেক বড় মনে হতে পারে। কিন্তু তরুণী বলছেন, তার অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার তুলনায় এই বেতন কম। তার কর্মক্ষেত্রে চাকরির সুযোগও খুবই সীমিত। তিনি তার পোস্টে জানিয়েছেন যে, গত দুই বছরে তিনি তার নিজের ক্ষেত্রে খুব কম সুযোগ পেয়েছেন, এবং সেগুলোও সফল হয়নি।
তরুণীর সমস্যা এখানেই শেষ নয়। তার সঙ্গী, যিনি কানাডার অ্যানিমেশন শিল্পে বার্ষিক ৯০,০০০ কানাডিয়ান ডলার আয় করতেন, তিনিও এখন বেকার। কানাডায় অ্যানিমেশন শিল্পের অবস্থা এমনিতেই খারাপ, আর এখন এই দম্পতি আর্থিক সংকটে ভুগছেন। তরুণী তার পোস্টে লিখেছেন, “কখনও কখনও ভাবি ভারতে ফিরে যাই, কিন্তু আমার আয় দিয়ে অবসর নেওয়া সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।” এরপর তরুণীর পোস্টে প্রচুর প্রতিক্রিয়া আসে। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “৮৫,০০০ ডলারের বেতন ঠিক আছে, কিন্তু কানাডার চাকরির বাজার এখন মন্দা। আমার পরামর্শ হল AI-তে দক্ষতা অর্জন করুন, কারণ এটি ভারতেও শীঘ্রই প্রভাব ফেলবে।”
অন্য একজন ব্যবহারকারী বলেছেন, “কানাডা এখন অর্থনৈতিকভাবে আর ততটা আকর্ষণীয় নেই। আগামী ২-৪ বছর পরিস্থিতি ভালো হবে না। ভারতে ফেরা ভালো হতে পারে।” অনেকে আবার ভিন্ন মতামতও দিয়েছেন। একজন ব্যবহারকারী পরামর্শ দিয়েছেন, “কানাডায় নতুন দক্ষতা শিখুন এবং ভালো বেতনের চাকরি খুঁজুন। ভারতে ফিরে গেলে সব সমস্যা সমাধান হবে না।” অন্য একজন বলেছেন যে, তার সঙ্গীর ভ্যাঙ্কুভারের মতো শহরে অ্যানিমেশনের চাকরি খোঁজা উচিত। তিনি আরও বলেন, “ভারতে অ্যানিমেশনের চাকরি কম এবং কাজের পরিবেশও ভালো নয়। কানাডায় কঠোর পরিশ্রম করুন, সেখানে সুযোগ আছে।”