ইসরায়েল-ইরান মহাযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে? খামেনেইয়ের আদেশের অপেক্ষায় বিশ্ব!

পশ্চিম এশিয়া আবারও নতুন করে সংকটের দিকে এগোচ্ছে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে প্রথম দফার যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র কয়েক দিন পেরোতেই পরিস্থিতি এমন দিকে মোড় নিচ্ছে যে, যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায় যেকোনো মুহূর্তে শুরু হতে পারে। এবার আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, প্রথম হামলা ইসরায়েলের দিক থেকে নয়, বরং ইরানের দিক থেকেই আসতে পারে। ইরানের বেশ কয়েকটি শহরে গত কয়েক দিন ধরে রহস্যজনক বিস্ফোরণ এবং আকাশে সন্দেহজনক বস্তুর উপস্থিতি পরিস্থিতিকে আরও উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলেছে।
বুশেহর এবং তেহরানের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে, ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইন্টারসেপ্টর মিসাইল নিক্ষেপ করেছে এবং কিছু আবাসিক এলাকায় আগুন লাগার খবরও পাওয়া গেছে। যদিও ইরান সরকার এসব ঘটনা নিয়ে কোনো স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে এই নীরবতা একটি বড় সামরিক অভিযানের ইঙ্গিত হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, ইরান এই হামলাগুলোকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সতর্কতা এবং ইরানের প্রস্তুতি
বিশ্বজুড়ে বেশ কয়েকটি প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা সতর্ক করেছে যে, দুই দেশের মধ্যে পরিস্থিতি দিন দিন যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে। সূত্র অনুযায়ী, ইরান গত যুদ্ধের শিক্ষা কাজে লাগিয়ে তাদের প্রস্তুতি আরও জোরদার করেছে। চীন ও রাশিয়ার সহযোগিতায় ইরান তাদের সামরিক সক্ষমতায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি এনেছে।
গত যুদ্ধ থেকে শিক্ষা, এখন প্রস্তুতি সম্পূর্ণ:
ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে গত ১২ দিনের সংঘাত ইরানের সেনাবাহিনীর জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জিং ছিল। ইরান তাদের বিমানবাহিনী, বিমান প্রতিরক্ষা এবং রাডার সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা স্পষ্টভাবে দেখতে পেয়েছিল। ইসরায়েলের অধিকাংশ বিমান হামলা সফল হয়েছিল কারণ ইরানের রাডার সময়মতো হামলাগুলো শনাক্ত করতে পারেনি।
এখন ইরান এই দুর্বলতা দূর করতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে:
চীন থেকে ৪০টি J-10 ফাইটার জেট কেনা হয়েছে, যা এখন বিমানবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
উন্নত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চীন থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে এবং সেগুলোকে কৌশলগতভাবে স্থাপন করা হয়েছে।
রাশিয়ার সহযোগিতায় রাডার নেটওয়ার্ক আপগ্রেড করা হয়েছে, যার ফলে এখন শত্রুর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা সহজ হয়ে গেছে।
ইরানের সতর্কতা এবং বিমানক্ষেত্র বন্ধ:
ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মৌসাভি সম্প্রতি বলেছেন যে, যদি তাদের সামরিক জবাব দেওয়ার প্রয়োজন হয়, তবে তা আগের চেয়ে আরও দ্রুত এবং ধ্বংসাত্মক হবে। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে এবার ইরানের প্রতিক্রিয়া সীমিত নয়, বরং চূড়ান্ত হবে।
ইরান তাদের পশ্চিমা ও কেন্দ্রীয় আকাশসীমা ৪ঠা জুলাই পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে এই সিদ্ধান্ত আসন্ন সামরিক অভিযান বা পাল্টা হামলার প্রস্তুতির অংশ হতে পারে। এতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে ইরান এখন যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত।