পাকিস্তান নিয়ে কি মোদি সরকারের নীতি বদল? এই সিদ্ধান্তের গুরুত্ব বুঝে নিন

পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কের মধ্যে তিক্ততা বেড়েছিল। ভারত ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর মাধ্যমে শুধু পিওকে-তে সন্ত্রাসী শিবির ধ্বংস করেনি, বরং পাকিস্তানের ভেতরে ঢুকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলাও চালিয়েছিল। পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেটের বিষয়ে সরকারের অবস্থান আগে থেকেই স্পষ্ট। ভারতের ক্রিকেট দল পাকিস্তানে গিয়ে খেলে না এবং পাকিস্তান ক্রিকেট দলের ভারত সফরেরও অনুমতি নেই।
তবে, সম্প্রতি মোদি সরকার পাকিস্তানি দলকে নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (MHA), পররাষ্ট্র মন্ত্রক (MEA), এবং ক্রীড়া মন্ত্রক যৌথভাবে পাকিস্তানের হকি দলের ভারত সফরের অনুমোদন দিয়েছে। এর সঙ্গে সঙ্গে, পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের জন্য ভিসা প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। হকি ইন্ডিয়া এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে এবং বলেছে যে তারা সরকারের নির্দেশাবলী মেনে চলবে।
ক্রিকেটের উল্টো সরকারের অবস্থান
ক্রিকেটের বিপরীতে, কেন্দ্রীয় সরকার বৃহস্পতিবার বিহারে অনুষ্ঠিতব্য পুরুষ এশিয়া কাপ এবং এই বছরের শেষে মাদুরাই ও চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য এফআইএইচ জুনিয়র বিশ্বকাপ হকির জন্য পাকিস্তানের হকি দলগুলোকে ভারতে আসার অনুমতি দিয়েছে। এর আগে পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার পর সম্পর্কের নতুন টানাপোড়েনের পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানি দলের ভারত সফর নিয়ে নানা জল্পনা চলছিল। তবে, সরকারের এই সিদ্ধান্ত সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো, ভারত সরকার ক্রিকেটের বিপরীতে কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল।
কেন সরকার এই সিদ্ধান্ত নিল?
মনে করা হচ্ছে যে, সরকারের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির নিষেধাজ্ঞার কারণে নেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক ক্রীড়া নিয়মাবলী এবং অলিম্পিক চার্টারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। ক্রীড়া মন্ত্রকের সূত্র অনুযায়ী, ভারত বহু-জাতীয় টুর্নামেন্টে কোনো দেশকে নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে, কারণ এমনটা করলে অলিম্পিক চার্টার লঙ্ঘন হবে। এমনটা হলে ভারতকে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) থেকে শাস্তির সম্মুখীন হতে হতে পারে।
দ্বিপাক্ষিক আয়োজনে এখনও নিষেধাজ্ঞা
তবে, পহেলগামে ২০২২ সালের ২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলা (যেখানে ২৬ জন নিহত হয়েছিল) এবং এর পরবর্তী ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর কারণে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে উত্তেজনা থাকা সত্ত্বেও, সরকার খেলাধুলা এবং রাজনীতিকে আলাদা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ক্রীড়া মন্ত্রক স্পষ্ট করে দিয়েছে যে বহু-জাতীয় আয়োজনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হবে, তবে দ্বিপাক্ষিক ক্রীড়া আয়োজনে এখনও নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।