ভারতের ওপর আমেরিকার বড় বাজি, জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকে প্রতিরক্ষা চুক্তি দ্রুত শেষ করার দাবি মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হ্যাগসেথের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করেছেন। এই বৈঠকে হ্যাগসেথ ভারতের কাছে স্থগিত থাকা প্রতিরক্ষা চুক্তিগুলো দ্রুত সম্পন্ন করার এবং প্রতিরক্ষা শিল্প সহযোগিতা বাড়ানোর প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন।
আমেরিকা চায় ভারতের সঙ্গে বকেয়া প্রতিরক্ষা চুক্তিগুলো দ্রুত শেষ হোক। এতে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও জোরদার হবে। দুই নেতা এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের হুমকি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা প্রতিরক্ষা বিক্রি, ‘১০ বছরের প্রতিরক্ষা কাঠামো’ (10 Year Defence Framework) স্বাক্ষর এবং উন্নত প্রযুক্তি নীতির পর্যালোচনা নিয়েও আলোচনা করেছেন।
আমেরিকা ও ভারতের প্রতিরক্ষা চুক্তি: বর্তমান অবস্থা
ভারত ও আমেরিকা জ্যাভলিন অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল এবং স্ট্রাইকার আর্মার্ড ভেহিকেল-এর সহ-উৎপাদন ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছে। এছাড়াও, ভারত আমেরিকা থেকে অতিরিক্ত ছয়টি পি-৮আই মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফ্ট (P-8I maritime patrol aircraft) কেনার বিষয়েও বিবেচনা করছে। আমেরিকা চায় ভারত তাদের থেকে আরও বেশি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনুক। তারা মনে করে যে এতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা কমাতে সাহায্য করবে। জয়শঙ্কর হ্যাগসেথকে জানিয়েছেন যে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘এটি কেবল পারস্পরিক স্বার্থের উপর ভিত্তি করে নয়, বরং আমরা সক্ষমতা এবং দায়িত্বের গভীর সমন্বয়ে বিশ্বাস করি। আমরা মনে করি যে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে আমরা যা করি, তা এর কৌশলগত স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও জয়শঙ্করের বৈঠক
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর কোয়াড (Quad) দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিতে আমেরিকা গিয়েছিলেন। এই সফরের সময় তিনি মার্কিন সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনাও করেছেন। এরই ফাঁকে তিনি তার মার্কিন প্রতিপক্ষ মার্কো রুবিওর সঙ্গেও দেখা করেন। রুবিও ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে শক্তিশালী বলে অভিহিত করেন এবং ইউএস-ইন্ডিয়া কমপ্যাক্ট (USIndia COMPACT) বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন। এটি বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, অবৈধ অভিবাসন (illegal immigration) এবং মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে সহযোগিতা বাড়াবে। জয়শঙ্কর বলেন যে তারা বাণিজ্য সহ দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক বিষয়গুলো নিয়েও তাদের মতামত আদান-প্রদান করেছেন।