মহরম ও উল্টোরথ পাশাপাশি থাকায় কোনো ভাবেই সাম্প্রদায়িক মোড় নিতে না পারে মহরম কমিটিদের নিয়ে ডায়মন্ড হারবার প্রশাসনিক বৈঠক

বাইজিদ মন্ডল ডায়মন্ড হারবার:- সামনে উল্টোরথ,তার ঠিক পরের দিনই পবিত্র মহরম! উল্টোরথ এবং মহরম পাশাপাশি থাকায় কোনও ভাবেই যেনো তাকে কেন্দ্র করে অশান্তি না ছড়ায়।পরিস্থিতি যাতে কোনও ভাবেই সাম্প্রদায়িক মোর নিতে না পারে তা নিয়ে শুক্রবার ডায়মন্ড হারবার প্রশাসনিক অফিসের সভাকক্ষে আয়োজিত হলো প্রশাসনিক বৈঠক। এদিন এই বৈঠকে এলাকার সকল মহরম কমিটির কর্মকর্তা ও সদস্যদের নিয়ে মহরম কে কেন্দ্র করে যাতে অতি উৎসাহ দেখানো না হয় ও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেগুলি ওই কমিটির সদস্য দেরই দেখার নির্দেশ দিলেন প্রশাসনের আধিকারিক রা।উপস্থিত ছিলেন ডায়মন্ড হারবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিতুন কুমার দে, ডায়মন্ড হারবার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সাকিব আহমেদ, ডায়মন্ড হারবার ১ নম্বর ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক শেখ দিন ইসলাম,ডায়মন্ড হারবার বিধায়ক পান্নালাল হালদার, ডায়মন্ড হারবার বিধানসভার পর্যবেক্ষক তথা সমাজসেবী সামিম আহমেদ,দুই নম্বর ব্লক সভাপতি অরুময় গায়েন,দুই নম্বর ব্লক পূর্তকর্মধ্যক্ষ অভিষেক ব্যানার্জি,এক নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গৌতম অধিকারী,এক নম্বর ব্লক পূর্তকর্মাধ্যক্ষ সন্দ্বীপ সরকার প্রমুখ।

এই বৈঠক থেকে বিধায়ক ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে বলতে শোনা যায় যে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এবার থেকে যে সমস্ত মহরম কমিটি গুলি আছে সেই কমিটি গুলোর নাম প্রশাসনের খাতায় নথিভুক্ত করতে হবে। এই সভায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে কীভাবে মহরম ও রথযাত্রা পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পালিত হতে পারে, সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে সকলের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, মহরমের তাজিয়া শোভাযাত্রার সময় কোনওভাবেই ডিজে ব্যবহার করা যাবে না।তাছাড়াও, শোভাযাত্রার নির্ধারিত পথ যাতে নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ থাকে, সে বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যেখানে গাছের ঝুঁকে থাকা ডাল তাজিয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে, সেসব গাছের ডাল কেটে পরিষ্কার করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বৈঠকের শেষে মহরম মাঠ পরিদর্শন করেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

বিধানসভার পর্যবেক্ষক সমাজসেবী সামিম আহমেদ সকল মহরম কমিটির উদ্দেশ্যে বলেন আমরা মুসলিম পরিবারের সন্তান, মুসলিম ধর্মীয় নীতি অনুসরণ করে,মহরমের দিন ধর্মীয় উৎসব পালন করা দরকার। আমরা মহরম এর দিনে মদ্যপ অবস্থায় প্রবেশ করবনা,পাশাপাশি ঐ দিনে এমন কোনো কাজ করবনা যেটা ধর্মের বাহিরে ও অন্য কোনো সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে কোনো কষ্ট বা ক্ষতি না হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিতুন কুমার দে বলেন সরকারি ভাবে যে আমরা দায়িত্ব টা পেয়েছি,যে যে স্তরে কাজ করে,সেটা স্বচ্ছতার সঙ্গে পালন করতে হবে। যেনো এমন কোনো ঘটনা ঘটে যেটা ইউনিফর্মের উপর দাগ বা লজ্জিত হবে,এই আত্মসম্মান বোধটা যদি থাকে তাহলে কিন্তু অবশ্যই সেটা অন্য মাত্রায় পৌঁছায় পুলিশিংটা। এবং ডায়মন্ড হারবার প্রশাসনিক সকল সহকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন এখানে বেশির ভাগ দেখা যায় কোনো পরিস্থিতিতে একটা দাঙ্গা তৈরি হয়,সেটা আমাদের ব্যর্থতা ও সেটা আমাদের জন্য লজ্জা। পাশাপাশি কোথাও যদি বিদ্যুতের তার ঝুলে থাকে বা বৈদ্যুতিক সংযোগে ত্রুটি থাকে, তা অবিলম্বে মেরামত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের এই সুপরিকল্পিত ও মানবিক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে মহরম কমিটির প্রতিনিধিরাও শান্তিপূর্ণ ও শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে উৎসব পালনের অঙ্গীকার করেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *