ধর্মস্থানের ভেতরেই সারি সারি লাশ পুঁতে ফেলা হয়েছে! কঙ্কালের ছবি নিয়ে সাবেক কর্মীর অভিযোগ, চাঞ্চল্য

মাঙ্গলুরুতে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে, যা পুরো কর্ণাটকে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে। ধর্মস্থল থানায় একজন ব্যক্তি পৌঁছে দাবি করেছেন যে, তাকে বহু বছর ধরে অসংখ্য লাশ সরাতে বাধ্য করা হয়েছে। তার এই বিস্ফোরক বয়ান অনেক চাপা পড়া অপরাধের রহস্য উন্মোচন করতে পারে।
৩ জুলাই অভিযোগকারী পুলিশ সুপার (SP)-এর কার্যালয় এবং ধর্মস্থল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর ৪ জুলাই ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS)-এর অধীনে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগকারী আরও জানিয়েছেন যে, তিনি সম্প্রতি দাফনের স্থানগুলোর একটিতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তিনি কিছু মৃতদেহের কঙ্কাল বের করেছেন এবং সেগুলোর ছবি তুলে কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছেন। পুলিশ অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রেখেছে এবং তিনি আইনি সুরক্ষা চেয়েছেন।
অপরাধীদের নাম প্রকাশ্যে আসবে
অভিযোগকারী অপরাধীদের পরিচয় জানাতে এবং যে জায়গাগুলোতে লাশ দাফন করা হয়েছে, সেগুলোর অবস্থান জানাতে প্রস্তুত। এর ফলে এক বিশাল রহস্যের পর্দা উঠতে পারে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি মাথার খুলি ও কিছু কঙ্কালের অবশেষের দুটি রঙিন ফটোকপি থানায় জমা দিয়েছেন। অভিযোগ জমা দেওয়ার সময় তার আইনজীবী একটি লিখিত বিবৃতিতে বলেছেন যে, যাদের হত্যা করা হয়েছে তাদের ছবি পরে আদালতে জমা দেওয়া হবে।
পুলিশ এখনও নিশ্চিত করেনি যে কঙ্কালের অবশেষগুলো আসল কিনা। একই সঙ্গে, নিহতদের সঠিক সংখ্যাও জানা যায়নি। তবে, এই ঘটনা ধর্মস্থলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। এই শহরটি তার আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের জন্য পরিচিত, কোনো অপরাধমূলক ঘটনার জন্য নয়।
কর্ণাটক ছেড়ে অন্য রাজ্যে গা ঢাকা দিয়েছেন অভিযোগকারী
খবর অনুযায়ী, ওই ব্যক্তি ১৯৯৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ধর্মস্থলে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, তাকে অপরাধ-সম্পর্কিত মৃতদেহ সরানোর জন্য বাধ্য করা হয়েছিল। তিনি আশঙ্কা করছেন যে তার জীবন ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তাই তিনি সপরিবারে শহর ছেড়ে একটি প্রতিবেশী রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছেন।
দক্ষিণ কন্নড়ের SP ড. অরুণ কে. শুক্রবার একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। তিনি জানান, অভিযোগকারী দাবি করেছেন যে তিনি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে নিহতদের মৃতদেহ চুপচাপ সরিয়ে দিয়েছেন। এখন তিনি অনুশোচনায় ভুগছেন এবং অপরাধে জড়িত ব্যক্তিরা এবং যেখানে মৃতদেহ দাফন করা হয়েছে, সেই জায়গাগুলো সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য দিতে ইচ্ছুক, যদি তাকে এবং তার পরিবারকে আইনি সুরক্ষা দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঠছে। সত্যিই কি এত বছর ধরে মৃতদেহ চুপচাপ দাফন করা হয়েছে? যদি হ্যাঁ, তবে এর পেছনে কারা ছিল? পুলিশ এখন এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজছে। এই ঘটনা ধর্মস্থলের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় প্রমাণ হতে পারে।