৪০৯ জনের রক্তে বিষাক্ত রাসায়নিক! কিডনি-লিভারের মারাত্মক ক্ষতি, চাঞ্চল্য ছড়াল শহরে

৪০৯ জনের রক্তে বিষাক্ত রাসায়নিক! কিডনি-লিভারের মারাত্মক ক্ষতি, চাঞ্চল্য ছড়াল শহরে

উত্তরপ্রদেশের কানপুরে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট সামনে এসেছে। কানপুরের ৩২৮ জনের রক্তে ক্রোমিয়াম এবং ১২ জনের রক্তে পারদের মতো বিষাক্ত পদার্থ পাওয়া গেছে। এছাড়াও, কানপুর দেহাতে ৬৪ জনের রক্তে ক্রোমিয়াম এবং ৫ জনের রক্তে পারদের উপস্থিতি মিলেছে। এই দুটি উপাদানের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতির কারণে কিডনি ও লিভারের মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে, যা পুরো এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

এই রিপোর্টটি ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল (NGT)-এর একটি প্রতিবেদনের পর প্রকাশিত হয়েছে। NGT-এর রিপোর্টের ভিত্তিতে কানপুর স্বাস্থ্য বিভাগ যখন শিল্পাঞ্চলের আশেপাশে বসবাসকারী মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে, তখনই তাদের রক্তে ক্রোমিয়াম এবং পারদের মতো ক্ষতিকারক উপাদানগুলো ধরা পড়ে। এই ফলাফল দেখে স্বাস্থ্য বিভাগও হতবাক হয়ে যায়। কানপুরের সিএমও-এর মতে, NGT-এর রিপোর্ট আসার পর স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের কানপুর এবং কানপুর দেহাতের শিল্পাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দেয়।

বিষাক্ত পদার্থের উৎস ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব
২৩ ও ২৪শে জুন স্বাস্থ্য বিভাগের একটি দল কানপুরের পাঞ্চি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া, রুমা, জাজমৌ, তেজাব মিল ক্যাম্পাস, রাখি মান্ডি এবং ঔরাইয়া এলাকার মানুষের শরীর থেকে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে। রিপোর্ট আসার পর স্বাস্থ্য বিভাগ নিশ্চিত করে যে, শরীরে ক্রোমিয়াম এবং পারদের মাত্রা অত্যন্ত বেশি। কানপুরের ৩২৮ জনের রক্তে ক্রোমিয়াম এবং ১২ জনের রক্তে পারদের মতো বিষাক্ত পদার্থ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে, কানপুর দেহাতে ৬৪ জনের রক্তে ক্রোমিয়াম এবং ৫ জনের রক্তে পারদের উপস্থিতি মিলেছে। এই পরীক্ষা নারী ও পুরুষ উভয়ের উপর করা হয়েছে, এবং কানপুর দেহাতে ২০ জনের রক্তে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে।

ডাক্তারদের মতে, শরীরে ক্রোমিয়াম এবং পারদের মাত্রা বাড়লে স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে, ত্বকের ক্যান্সার, শ্বাসকষ্ট, কিডনি এবং লিভারের কার্যকারিতা প্রভাবিত হতে পারে। কানপুরের সিএমও ড. উদয়নাথ জানিয়েছেন যে, মানবদেহে এই উপাদানগুলো পাওয়ার প্রধান কারণ হলো রাসায়নিক মিশ্রিত জল পান করা। শিল্পাঞ্চলের রাসায়নিক বর্জ্য নদী-নালায় ফেলে দেওয়া হয়, যার ফলে হ্যান্ডপাম্পের জলও দূষিত হয়ে পড়ে এবং মানুষ সেই জলই পান করে। বর্তমানে রিপোর্ট আসার পর বিভাগ মানুষকে মাল্টিভিটামিন দিয়ে শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছে, তবে এই গুরুতর সমস্যার মোকাবিলায় পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *