এবার আপেলের দাম ঠিক করবে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক! কাশ্মীরি ও হিমাচলি আপেল আরও দামি হবে?

আপেল প্রতিদিন খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, কিন্তু এবার এর দাম নির্ধারণ করবে ভূ-রাজনীতি। এই বছর আগস্ট থেকে শুরু হতে যাওয়া আপেল মরসুমে ভারতে আপেলের দামে আন্তর্জাতিক সমীকরণের গভীর প্রভাব পড়তে চলেছে। ভারত এতদিন তুরস্ক, ইরান এবং আফগানিস্তান থেকে সবচেয়ে বেশি আপেল আমদানি করত, কিন্তু এখন সেখান থেকে আমদানি করা কঠিন হয়ে উঠছে।
তুরস্ক, যা গত আর্থিক বছরে ভারতের বৃহত্তম আপেল রপ্তানিকারক ছিল (প্রায় ৯৭ মিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য), এখন ভারতীয় ব্যবসায়ীদের পছন্দের তালিকায় নেই। এর পেছনে কারণ হলো তুরস্কের ভারত-বিরোধী মনোভাব এবং পাকিস্তানকে সমর্থন।
আফগান ও তুর্কি থেকে আমদানি বন্ধ
অন্যদিকে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত ১ মে থেকে বন্ধ, যার ফলে আফগানিস্তান থেকে আপেলের সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। আফগানি আপেল সাধারণত সস্তা এবং জনপ্রিয় হয়, যা পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হত। এর তুলনায় কাশ্মীর এবং হিমাচলের আপেলের দাম প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
আজাদপুর মান্ডি (এশিয়ার বৃহত্তম ফল ও সবজি বাজার)-এর ফল ব্যবসায়ী পবন ছাবরা জানান যে, আফগানি আপেলের উপর কোনো আমদানি শুল্ক লাগে না, কারণ এগুলি সাউথ এশিয়া ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্টের আওতায় আসে। এমন পরিস্থিতিতে এখন দেশীয় আপেল আরও দামি হতে পারে।
কাশ্মীরি ও হিমাচলি আপেল আরও দামি হবে
অন্য এক আমদানিকারক জানান যে, ইরানে চলমান অস্থিতিশীলতার কারণে সেখান থেকে আপেল আনাও ঝুঁকিপূর্ণ। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা সাধারণত ইরানি রপ্তানিকারকদের জন্য ৪৬% কমিশনের উপর এজেন্টের মতো কাজ করে থাকেন, যার ফলে তাদের জন্য এই ব্যবসা আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে।
ভারতে আপেলের প্রধান উৎপাদন হয় জম্মু-কাশ্মীর এবং হিমাচল প্রদেশে, এবং মোট উৎপাদন প্রায় ২৪ লক্ষ মেট্রিক টন। কিন্তু অভ্যন্তরীণ চাহিদা এর চেয়ে বেশি, তাই আমদানি জরুরি হয়ে পড়ে। গত আর্থিক বছরে ভারত প্রায় ৩৪,০০০ টন আপেল আমদানি করেছে, যার মূল্য ছিল ৪৫০ মিলিয়ন ডলার – এটি বার্ষিক ১২% বৃদ্ধি।