কলকাতা গণধর্ষণ মামলা: অভিযুক্তের একটার পর একটা গোপন তথ্য ফাঁস, কীভাবে প্রভাবশালীরা সাহায্য করতে চাইল?

কলকাতা গণধর্ষণ মামলায় একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে। গত ২৫শে জুন দক্ষিণ কলকাতার একটি আইন কলেজে সংঘটিত গণধর্ষণের ঘটনার পর মূল অভিযুক্ত মনোজিত মিশ্র বাঁচতে চেয়ে অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করেছিল। পুলিশি তদন্তে জানা গেছে, ঘটনার পরের দিন অর্থাৎ ২৬শে জুন মনোজিত তার কিছু ‘মেন্টর’কে ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে স্পষ্ট প্রত্যাখ্যান করা হয় এবং তাকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।
মোবাইল টাওয়ার ডেটা থেকে নিশ্চিত তথ্য
পুলিশ সূত্র অনুযায়ী, ঘটনার পর মনোজিত মিশ্র দক্ষিণ কলকাতার রাসবিহারী, দেশপ্রিয় পার্ক, গড়িয়াহাট, ফার্ন রোড এবং বালিগঞ্জ স্টেশন রোড-এর মতো এলাকায় ঘোরাফেরা করছিল। মোবাইল টাওয়ার ডেটা থেকেও নিশ্চিত হয়েছে যে, সে কসবা থানার কাছেও গিয়েছিল। এসবের উদ্দেশ্য ছিল কারো কাছ থেকে সুপারিশ বা সাহায্য পাওয়া, যাতে তার গ্রেফতারি এড়ানো যায়।
নিরাপত্তা রক্ষীর ঘরে গণধর্ষণ
তদন্তে আরও জানা গেছে যে, মনোজিত এবং তার দুই সঙ্গী প্রমিত মুখার্জি ও জ্যাব আহমেদ এই অপরাধের পূর্ব পরিকল্পনা করেছিল। কল ডিটেইল রেকর্ড থেকে জানা গেছে যে, ২৫শে জুনের আগে এই তিনজন একে অপরের সাথে নিয়মিত যোগাযোগে ছিল। ঘটনার রাতে তারা কলেজ ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা রক্ষীর ঘরে নির্যাতিতা মহিলাকে গণধর্ষণ করে। অথচ, গার্ড পিনাকী ব্যানার্জীকে বাইরে থাকতে বলা হয়েছিল। এরপর তিনজন সেখানেই মদ পান করে এবং গার্ডকে চুপ থাকার হুমকি দেয়।
অভিযুক্তদের কোনো অনুশোচনা নেই
শুধু তাই নয়, অপরাধের পরেও এই অভিযুক্তদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা দেখা যায়নি। পুলিশের মতে, গণধর্ষণের কয়েক ঘণ্টা পর তিন অভিযুক্ত ইএম বাইপাসের একটি ধাবায় খেতে যায় এবং পরের দিন সকালে নিজেদের বাড়িতে ফেরে। এই বর্বরতা এবং নির্লজ্জতা পুরো শহরকে নাড়িয়ে দিয়েছে। পুলিশ এখন মামলায় আরও তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করছে এবং দ্রুত চার্জশিট দাখিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।