আয়কর রিটার্ন যাচাই করতে চান? সহজে কাজ সম্পন্ন করতে এই টিপসগুলো অনুসরণ করুন

আয়কর বিভাগ কর্তৃক জারি করা সার্কুলার অনুযায়ী, বর্তমানে প্রতিটি করদাতার জন্য তাদের আয়কর রিটার্ন (ITR) দাখিল করার সময় চলছে। প্রত্যেকের জন্য আইটিআর দাখিল করা তাদের দায়িত্ব ও নৈতিকতা। আয়কর বিভাগ অনুযায়ী, ৩০ দিনের সময়সীমার মধ্যে রিটার্ন যাচাই না হওয়া পর্যন্ত দাখিল প্রক্রিয়া আসাম্পূর্ণ থাকে।
আইটিআর যাচাইকরণ কেন জরুরি?
যদি আপনার আইটিআর যাচাই না করা হয়, তাহলে কর বিভাগ এটিকে এমনভাবে বিবেচনা করে যেন এটি কখনোই দাখিল করা হয়নি। এই ত্রুটির ফলে নানা রকম পরিণতি হতে পারে, যার মধ্যে বিলম্বের জন্য ধারা 234F এর অধীনে ৫,০০০ টাকা জরিমানা, বকেয়া করের উপর ১% মাসিক সুদ এবং বিলম্ব অব্যাহত থাকলে সম্ভাব্য আইনি সমস্যা অন্তর্ভুক্ত।
এই ধরনের আর্থিক প্রভাব আইটিআর যাচাইকরণের গুরুত্ব তুলে ধরে। এছাড়াও, অর্থ ফেরতে (রিফান্ড) উল্লেখযোগ্য বিলম্ব হতে পারে, যা করদাতাদের জন্য অসুবিধা এবং সম্ভাব্য নগদ প্রবাহের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
আপনার আইটিআর কীভাবে যাচাই করবেন?
যাচাইকরণ প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য আয়কর বিভাগ বেশ কয়েকটি বিকল্প সরবরাহ করে। সবচেয়ে সহজ উপায়গুলির মধ্যে একটি হল আধার ওটিপি (OTP) ব্যবহার করা, যেখানে আধার লিঙ্ক করা মোবাইল নম্বরে ওয়ান-টাইম পাসওয়ার্ড পাঠানো হয়। এই পদ্ধতিটি ই-ফাইলিং পোর্টালে তাৎক্ষণিক যাচাইকরণের অনুমতি দেয়।
১. ডি-ম্যাট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ইভিসি (EVC): ডি-ম্যাট অ্যাকাউন্টধারী ব্যক্তিরাও ইভিসি (ইলেকট্রনিক ভেরিফিকেশন কোড) তৈরি করতে পারেন। এই বিকল্পটি সক্রিয় বিনিয়োগকারীদের জন্য আদর্শ যারা পোর্টালের সাথে ডি-ম্যাট বিবরণ সংযুক্ত করেছেন এবং বিশেষভাবে শেয়ার বাজারের বিনিয়োগকারীদের জন্য উপকারী যারা নিয়মিতভাবে তাদের পোর্টফোলিও অনলাইনে পরিচালনা করেন।
২. আধার ওটিপি (OTP): আপনার আধারের সাথে লিঙ্ক করা মোবাইল নম্বরে একটি ওটিপি (ওয়ান-টাইম পাসওয়ার্ড) পাঠানো হয়। আপনার আইটিআর তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে ই-ফাইলিং পোর্টালে এই ওটিপিটি প্রবেশ করান।
৩. ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ইভিসি (EVC): আরেকটি বিকল্প হল পূর্বে যাচাই করা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ইভিসি তৈরি করা। অনেক প্রধান ব্যাংক তাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এই পরিষেবা প্রদান করে।
৪. এটিএম (ATM)-এর মাধ্যমে ইভিসি (EVC): কিছু ব্যাংক এটিএম-এর মাধ্যমেও ইভিসি তৈরি করার অনুমতি দেয়। ইভিসি নিবন্ধিত মোবাইল নম্বরে পাঠানো হয়, যা যাচাইকরণের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, সব ব্যাংক এই সুবিধা সমর্থন করে না, তাই আগে আপনার ব্যাংক থেকে যাচাই করে নেওয়া উচিত।
৫. ডিজিটাল সিগনেচার সার্টিফিকেট (DSC): কিছু করদাতার জন্য, যেমন ৫০ লাখ টাকার বেশি আয় সম্পন্ন কো ম্পা নি এবং ব্যক্তিদের জন্য, ডিজিটাল সিগনেচার সার্টিফিকেট (DSC) প্রয়োজন হয়। এটি একটি সুরক্ষিত পদ্ধতি, তবে এর জন্য বৈধ ডিএসসি টোকেন কেনা এবং ইনস্টল করা জরুরি।
৬. নেট ব্যাংকিং: নেট ব্যাংকিং আলাদা কোডের প্রয়োজন ছাড়াই ই-ফাইলিং সাইটে সরাসরি প্রবেশাধিকার দিয়ে একটি সহজ যাচাইকরণ পদ্ধতি প্রদান করে। এর সরলতা এবং ব্যবহারের সুবিধার কারণে এটি অনেকের কাছে পছন্দের একটি পদ্ধতি।
৭. ফিজিক্যাল ভেরিফিকেশন (ITR-V): যারা অ-ডিজিটাল বিকল্প পছন্দ করেন, তারা বেঙ্গালুরুর সেন্ট্রালাইজড প্রসেসিং সেন্টারে (CPC) স্বাক্ষরিত ITR-V স্বীকৃতি ফর্ম পাঠিয়ে ফিজিক্যাল যাচাইকরণের বিকল্প বেছে নিতে পারেন। ফর্মটি ৩০ দিনের মধ্যে CPC-তে পৌঁছাতে হবে। ফিজিক্যাল যাচাইকরণ প্রক্রিয়ায় সাধারণত ২-৩ সপ্তাহ সময় লাগে এবং করদাতারা ই-ফাইলিং পোর্টালে ‘রিটার্ন/ফর্ম দেখুন’ এর অধীনে স্থিতি ট্র্যাক করতে পারেন।
আপনার আইটিআর যাচাই হয়েছে কিনা, তা কীভাবে জানবেন?
একবার আপনার আইটিআর সফলভাবে যাচাই হয়ে গেলে, সিস্টেম একটি লেনদেন আইডি (transaction ID) সহ একটি নিশ্চিতকরণ বার্তা প্রদর্শন করে। আপনি আপনার নিবন্ধিত ইমেল আইডি-তেও একটি ইমেল পাবেন। ভবিষ্যতে রেফারেন্সের জন্য এই লেনদেন প্রমাণটি সুরক্ষিত রাখা গুরুত্বপূর্ণ। এই নিশ্চিতকরণ নির্দেশ করে যে আপনার ট্যাক্স রিটার্ন সুষ্ঠুভাবে প্রক্রিয়া করা হয়েছে, যা করদাতাদের মানসিক শান্তি নিশ্চিত করে।
৩০ দিনের কঠোর যাচাইকরণ নিয়ম মেনে, করদাতাদের নিশ্চিত করা উচিত যে তারা তাদের আইটিআর আসাম্পূর্ণ না রাখেন। দাখিল প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার জন্য এই সাতটি পদ্ধতির যেকোনো একটি বেছে নিয়ে, করদাতারা জরিমানা, বিলম্ব এবং অপ্রয়োজনীয় চাপ থেকে বাঁচতে পারেন।