‘সাহস থাকলে বাংলায় হিন্দি চাপিয়ে দেখাক BJP!’ এক মঞ্চে রাজ-উদ্ধব, কেন টেনে আনলেন বাংলার প্রসঙ্গ?

দীর্ঘ ২০ বছর পর মুম্বাইয়ে এক মঞ্চে দেখা গেল ঠাকরে ভাইদের, রাজ ঠাকরে এবং উদ্ধব ঠাকরে। হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টার বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্রে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। সেই একই মঞ্চ থেকে তাদের মুখে শোনা গেল বাংলার কথাও। শনিবার রাজ ঠাকরের সঙ্গে এক যৌথ সমাবেশে বিজেপি এবং মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীসকে আক্রমণ করে উদ্ধব ঠাকরে সাফ জানিয়ে দিলেন, “আমরা কোনো ভাষার বিরোধী নই। কিন্তু জোর করে চাপাতে গেলে, শক্তি দেখাব।” একই সঙ্গে বাংলার প্রসঙ্গ টেনে বাল ঠাকরের পুত্র বলেন, “সাহস থাকলে বাংলায় হিন্দি চাপিয়ে দেখাক বিজেপি!” কিন্তু ঠিক কোন প্রেক্ষাপটে তিনি একথা বললেন?
বিজেপি-নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্র সরকার সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল, যেখানে ইংরেজি ও মারাঠি মাধ্যমের প্রাথমিক স্কুলগুলিতে (প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত) হিন্দিকে তৃতীয় ভাষা হিসেবে বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়ে দেবেন্দ্র ফড়নবীস সরকার পরে সেই সিদ্ধান্ত বদল করে হিন্দিকে ‘ঐচ্ছিক’ বলে ঘোষণা করে।
হিন্দি চাপানোর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠ
এই প্রসঙ্গে ফড়নবীসকে জবাব দিতে গিয়ে উদ্ধব ঠাকরে বলেন, “আপনি বলেছেন ভাষা-বাজি বরদাস্ত করবেন না। তাহলে দেখান, একজন মারাঠিও কি মহারাষ্ট্রের বাইরে গিয়ে কারো উপরে মারাঠি ভাষা চাপিয়েছে?” এরপরই কটাক্ষের সুরে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন উদ্ধব। তিনি বলেন, “সাহস থাকলে বাংলা বা তামিলনাড়ুতে গিয়ে হিন্দি চাপিয়ে দেখাক বিজেপি!” উদ্ধবের কথায়, “আমরা বাংলার মানুষের সঙ্গে একাত্ম। তামিল ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতিও আমাদের শ্রদ্ধা রয়েছে। কেন্দ্র বারবার হিন্দিকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, যা এক ধরনের উপনিবেশবাদ। এই মানসিকতা আমরা মেনে নেব না।”
এর আগে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্টালিন এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার হিন্দি চাপানোর প্রবণতার বিরোধিতা করেছেন। মমতা বলেছিলেন, “প্রত্যেক রাজ্যের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে। বিজেপি এটা ঠিক করবে না যে কে কী ভাষা শিখবে।” যদিও বিতর্কের আবহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অবশ্য দাবি করেছেন, “হিন্দি কোনো ভাষার প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং সকল ভারতীয় ভাষার বন্ধু।”