সাইবার জালিয়াতির সবচেয়ে বড় চক্র গ্রেপ্তার, ৩০০০ কোটি টাকা প্রতারণা!

সাইবার জালিয়াতি বর্তমানে দেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতিদিন সাইবার জালিয়াতির খবর সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এর মধ্যেই রাজস্থানের ভরতপুর পুলিশ দেশের সবচেয়ে বড় সাইবার জালিয়াতির চক্রকে ধরেছে। এই চক্র থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া থেকে পরিচালিত হচ্ছিল। প্রতারকরা বেঙ্গালুরুতে একটি কো ম্পা নি খুলেছিল, যেখানে প্রতারণার টাকা পরিচালিত হত।
পুলিশ কো ম্পা নির দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে, যাদের জিজ্ঞাসাবাদে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। পুলিশ জানতে পেরেছে যে, ১০০-টিরও বেশি জাল কো ম্পা নি খোলা হয়েছিল। এর মাধ্যমে প্রতারণার টাকা ঘুরিয়ে দেওয়া হত। এই কো ম্পা নিটি এখন পর্যন্ত ৩০০০ কোটি টাকার প্রতারণা করেছে। এই কো ম্পা নি গেমিং প্ল্যাটফর্ম এবং বিনিয়োগ প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করত।
৪০০ কোটি টাকার লেনদেন মাত্র ৪টি অ্যাকাউন্টে, কীভাবে শুরু হল এই জালিয়াতি?
কো ম্পা নিটির নাম ‘অ্যাবানডেন্স’ (Abundance)। এই কো ম্পা নির একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নিয়ে এখনও পর্যন্ত ৫,০০০-এরও বেশি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, কিন্তু ব্যাংকগুলো কোনো অভিযোগের নিষ্পত্তি করেনি এবং অ্যাকাউন্টটিও ফ্রিজ করেনি। পুলিশ এখন পর্যন্ত ২৬টি জাল কো ম্পা নির অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করেছে। মাত্র চারটি অ্যাকাউন্টে ৪০০ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পুলিশ জানতে পেরেছে।
এই সাইবার জালিয়াতির গল্পটি শুরু হয়েছিল এই বছরের এপ্রিলে, যখন ধোলপুরের বারি পুলিশ থানায় একজন শিক্ষক অভিযোগ দায়ের করেন যে তার সঙ্গে ১৫ লাখ টাকার প্রতারণা হয়েছে। এরপরই এই সাইবার জালিয়াতির তদন্ত শুরু হয়। পুলিশ লেনদেনের পথ অনুসরণ করে এবং শত শত অ্যাকাউন্টের সন্ধান পায়। এরপর পুলিশ মূল কো ম্পা নি অ্যাবানডেন্স সম্পর্কে তথ্য পায়।
এই কো ম্পা নির সদর দফতর বেঙ্গালুরুতে। কো ম্পা নিটি ‘ট্রাই-পে’ (Tri-Pay) নামে একটি পেমেন্ট অ্যাপ পরিচালনা করে। এর একটি বড় কর্পোরেট ব্যাংকে একটি মাত্র অ্যাকাউন্ট চলছিল, যার বিরুদ্ধে ৫,০০০ অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এরপরও ব্যাংক অ্যাকাউন্টটি চালু রেখেছে। পুলিশের হাতে ধরা পড়া কো ম্পা নির এক পরিচালক জানিয়েছেন যে, জাল কো ম্পা নিগুলোর অ্যাকাউন্টে যে টাকা আসত, তা সে প্রতিদিন ১ কোটি টাকা করে মূল কো ম্পা নির অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করত।
ভরতপুর রেঞ্জের আইজি কে রাহুল প্রকাশ জানিয়েছেন যে এই সাইবার জালিয়াতি চক্রটি অনেক রাজ্য এবং দেশে বিস্তৃত। এই কেলেঙ্কারিটি অনেক বড় হতে পারে, তাই পুলিশ সদর দফতরকে অনুরোধ করা হয়েছে যে এর তদন্ত একটি সক্ষম রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সংস্থা দ্বারা করানো হোক।