ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়লো দম্পতির স্বপ্ন! জমি কেনার জন্য রাখা ৩০ লাখ টাকা ভেসে গেল বন্যায়…

ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়লো দম্পতির স্বপ্ন! জমি কেনার জন্য রাখা ৩০ লাখ টাকা ভেসে গেল বন্যায়…

হিমাচল প্রদেশের থুনাগ বাজারের বাসিন্দা শিক্ষক মুরারি লাল ঠাকুর এবং তাঁর স্ত্রী রশনি দেবীর জীবন ৩০ জুন-এর ভয়াবহ বন্যায় সম্পূর্ণ তছনছ হয়ে গেছে। সম্প্রতি ২০ জুন তাঁরা ৩০ লাখ টাকায় একটি প্লট কেনার চুক্তি করেছিলেন, যার রেজিস্ট্রি হওয়ার কথা ছিল ৭ জুলাই। এই স্বপ্ন পূরণ করতে তাঁরা তাঁদের সারা জীবনের সঞ্চয়, শ্বশুরবাড়ির লোক, ভাই এবং অন্যান্য আত্মীয়দের কাছ থেকে অনেক কষ্টে ৩০ লাখ টাকা জোগাড় করেছিলেন। এই সমস্ত টাকা এবং তাঁদের গহনা একটি ট্রাঙ্কে ঘরে রাখা ছিল।

কালো রাতের তাণ্ডব
৩০ জুনের রাতে থুনাগ বাজারে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বন্যায় সবকিছু ভেসে গেছে। মুরারি লালের বাড়ি, বাজার এবং সবচেয়ে দুঃখজনকভাবে, সেই ট্রাঙ্কটিও, যেখানে তাঁদের সারাজীবনের উপার্জন এবং ধার করা টাকা ছিল, জল ও ধ্বংসস্তূপে বিলীন হয়ে গেছে। এখন মুরারি লাল তাঁর সমস্ত শক্তি দিয়ে বাজারের ধ্বংসাবশেষে সেই ট্রাঙ্কটি খুঁজছেন, যেখানে তাঁর সবকিছু ছিল।

চোখে জল, পরনে শুধু একজোড়া পোশাক
চোখে জল নিয়ে মুরারি লাল বলেছেন, “এটাই ছিল আমাদের সারাজীবনের সঞ্চয়। কিন্তু ৩০ জুনের কালো রাতে আসা বন্যা সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।” তিনি জানান যে সেই রাতে তাঁদের কাছে শুধু পরনের কাপড়ই বেঁচে ছিল, এবং পকেটে ছিল মাত্র ৬৫০ টাকা। তাঁর মেয়ে লোকেশা, স্ত্রী রশনি এবং স্বয়ং মুরারি লাল—তিনজনের কাছে এখন শুধু একজোড়া পোশাকই বেঁচে আছে। বাকি সবকিছু জল এবং ধ্বংসাবশেষে হারিয়ে গেছে। রশনি দেবী, যিনি নিজেও একজন শিক্ষিকা, এই ট্র্যাজেডিতে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা তো শিক্ষক, অন্যদের পথ দেখাই। কিন্তু আজ আমরা নিজেরাই অন্ধকারে। এক মুহূর্তে সবকিছু শেষ হয়ে গেল। এখন না আছে বাড়ি, না টাকা, আর না ভবিষ্যতের কোনো স্পষ্ট দিকনির্দেশ।”

আশার ক্ষীণ আলো
তবে, এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও আশার একটি ছোট আলো অবশিষ্ট রয়েছে। রশনি দেবী বলেন যে তাঁরা সরকার, সমাজ এবং ঈশ্বরের কাছ থেকে সাহায্যের আশা করছেন। তাঁরা আশা করেন যে হয়তো কোনো একদিন কেউ তাঁদের জানাবে যে তাঁদের ট্রাঙ্কটি পাওয়া গেছে এবং তাঁদের আশ্রয়স্থল আবার তৈরি হবে। এই ট্র্যাজেডি মুরারি লাল এবং রশনি দেবীর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ, কিন্তু তাঁরা এখনও তাঁদের ভবিষ্যতের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *