আপনি যদি সুরক্ষিত বিনিয়োগ (Investment) এবং ভালো রিটার্ন (Return) পাওয়ার মতো কোনো স্কিমে আপনার সঞ্চয় বিনিয়োগ করতে চান, তবে পোস্ট অফিসের দ্বারা পরিচালিত স্কিমগুলির উপর নির্ভর করতে পারেন। এই স্কিমগুলিতে সরকার নিজেই বিনিয়োগকারীদের অর্থের সুরক্ষার গ্যারান্টি দেয়, পাশাপাশি এগুলিতে দুর্দান্ত সুদও পাওয়া যায়। পোস্ট অফিস প্রতিটি বয়স এবং প্রতিটি শ্রেণীর জন্য আলাদা আলাদা ছোট সঞ্চয় প্রকল্প (Small Saving Scheme) পরিচালনা করে এবং এর মধ্যে একটি বিশেষ স্কিম হলো কিসান বিকাশ পত্র যোজনা (Kisan Vikas Patra Scheme), যা বিনিয়োগকারীদের মাত্র ১১৫ মাসে টাকা দ্বিগুণ করার গ্যারান্টি দেয়। আসুন, এই স্কিমে বিনিয়োগ এবং এর সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।

১০০০ টাকা থেকে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন
আজকের দিনে সবাই কঠোর পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করেন এবং এর কিছু অংশ সঞ্চয় করে বিনিয়োগ করেন, যাতে ভবিষ্যতে তাদের আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হতে না হয়। পোস্ট অফিসের কিসান বিকাশ পত্র স্কিমকে (Post Office KVP Scheme) সবচেয়ে জনপ্রিয় করে তোলে এর টাকা দ্বিগুণ হওয়ার সুবিধা। এছাড়াও, এতে বিনিয়োগে কোনো ঝুঁকি নেই। এই স্কিমের অধীনে বিনিয়োগকারীরা সর্বনিম্ন ১০০০ টাকা থেকে অ্যাকাউন্ট খুলে বিনিয়োগ শুরু করতে পারেন, যখন সর্বোচ্চ বিনিয়োগের কোনো সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। অর্থাৎ, আপনি আপনার ইচ্ছামতো যত খুশি বিনিয়োগ করতে পারেন।

বিনিয়োগে ৭.৫০% দুর্দান্ত সুদ
টাকা দ্বিগুণকারী পোস্ট অফিসের এই কিসান বিকাশ পত্র স্কিমে (Kisan Vikas Patra Scheme) সরকারের পক্ষ থেকে দুর্দান্ত সুদ দেওয়া হয়, যা বর্তমানে ৭.৫০ শতাংশ। কেভিপি (KVP) স্কিমে বিনিয়োগের উপর এই সুদের হার বার্ষিক ভিত্তিতে দেওয়া হয়। এই স্কিমের মেয়াদ পূর্তির সময়কাল ১১৫ মাস। এছাড়াও, কেভিপি (KVP) স্কিমের অধীনে বিনিয়োগকারীরা একক এবং যৌথ উভয় ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন।

একজন ব্যক্তি একাধিক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন
এই সরকারি স্কিমের (Govt Scheme) আরেকটি বিশেষত্ব হলো, এতে যেকোনো ব্যক্তি যত খুশি কেভিপি (KVP) অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। অর্থাৎ, এর জন্য কোনো সীমা নির্ধারণ করা হয়নি এবং যদি একজন বিনিয়োগকারী দুটি অ্যাকাউন্ট রাখতে চান, তবে রাখতে পারেন বা এর চেয়ে বেশি অ্যাকাউন্টও খুলতে পারেন। এই স্কিমের অধীনে ১০ বছরের বেশি বয়সী বাচ্চাদের নামেও এই কিসান বিকাশ পত্র স্কিমে অ্যাকাউন্ট খোলা যেতে পারে।

টাকা দ্বিগুণ হওয়ার সহজ ক্যালকুলেশন
এবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যার জন্য এই স্কিম বিনিয়োগকারীদের প্রথম পছন্দ হয়ে উঠেছে। হ্যাঁ, আমরা কথা বলছি কীভাবে এই স্কিমে টাকা দ্বিগুণ হয়। জানিয়ে রাখি যে, এই সরকারি স্কিমে বিনিয়োগের অর্থের উপর সুদের গণনা কম্পাউন্ডিং (Compounding) ভিত্তিতে হয়। ১ লাখ টাকার বিনিয়োগের উদাহরণ দিয়ে বোঝা যাক: এত টাকা বিনিয়োগ করলে ৭.৫ শতাংশ সুদের ভিত্তিতে প্রথম বছরের শেষে এতে প্রাপ্ত সুদ হবে ৭৫০০ টাকা এবং এই অর্থ পরের বছরের জন্য মূল অঙ্কে যোগ হয়ে ১,০৭,৫০০ টাকা হয়ে যাবে।

এখন এই অঙ্কের উপর দ্বিতীয় বছরে সুদ হবে ৮,০৬২ টাকা। এরপর এই অর্থ তৃতীয় বছরের জন্য মূল রাশিতে যোগ হয়ে ১,১৫,৫৬২ টাকা হয়ে যাবে। একইভাবে পরবর্তী বছরগুলিতেও অর্থ বাড়তে থাকবে। এখন ধরুন বিনিয়োগকারী ৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন, এই হিসাব অনুযায়ী এই অর্থের উপরও বছর-বছর লাভ পাওয়া যাবে এবং মেয়াদ পূর্তিতে বিনিয়োগকারীরা ১০ লাখ টাকা পাবেন।