বাবা বরফানির দর্শনে রেকর্ড ভিড়! অমরনাথে চতুর্থ দিনে ২১ হাজারের বেশি পুণ্যার্থী, টোকেন সংখ্যাও বাড়ল

বাবা বরফানির দর্শনে রেকর্ড ভিড়! অমরনাথে চতুর্থ দিনে ২১ হাজারের বেশি পুণ্যার্থী, টোকেন সংখ্যাও বাড়ল

অমরনাথ তীর্থযাত্রার চতুর্থ দিনে, রবিবার দক্ষিণ কাশ্মীরের হিমালয়ে ৩,৮৮০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত পবিত্র অমরনাথ গুহা মন্দিরে প্রাকৃতিক বরফের শিবলিঙ্গের দর্শন করেছেন ২১,৫১২ জন পুণ্যার্থী। কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই তীর্থযাত্রীদের মধ্যে ১৫,৭৫৮ জন পুরুষ, ৪,৭২৩ জন মহিলা, ৩০০ জন শিশু, ১২৯ জন সাধু, ১৭ জন সাধ্বী, তিনজন রূপান্তরকামী এবং ৫৮২ জন নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ান ছিলেন।

চার দিনে মোট ৬৯,৪৮৪ জন পুণ্যার্থী দর্শন করেছেন। ৩৮ দিনের এই তীর্থযাত্রায় প্রথম চার দিনে মোট ৬৯,৪৮৪ জন তীর্থযাত্রী গুহা মন্দিরে দর্শন করেছেন। এদিকে, এই তীর্থযাত্রার সময় একটি দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে; উত্তরপ্রদেশের পান্ত নগরের বাসিন্দা রাকেশ কুমার সোনি (৪৯) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

তীর্থযাত্রায় তিনজনের মৃত্যু ও পুণ্যার্থীদের উৎসাহ বৃদ্ধি
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, বালটালে তার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তাকে শ্রীনগরের একটি হাসপাতালে রেফার করা হয়, যেখানে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর সাথে এই তীর্থযাত্রায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে তিনজনে দাঁড়িয়েছে। অমরনাথ তীর্থযাত্রা ভগবান শিবের ভক্তদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এই যাত্রা কঠোর নিরাপত্তা এবং সুসংগঠিত ব্যবস্থাপনার সাথে অব্যাহত রয়েছে।

অন্যদিকে, শ্রী অমরনাথ যাত্রার জন্য পুণ্যার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। সারাদেশ থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্ত জম্মু পৌঁছাচ্ছেন। ক্রমবর্ধমান পুণ্যার্থীর সংখ্যা বিবেচনা করে টোকেন কোটা বাড়িয়ে প্রতিদিন ৫,০০০ করা হয়েছে। এছাড়াও, তিনটি রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্রে চারটি নতুন কাউন্টার স্থাপন করা হয়েছে, যার ফলে মোট কাউন্টারের সংখ্যা বেড়ে ২৪ হয়েছে। এতে যাত্রীদের সুবিধা হচ্ছে।

রেজিস্ট্রেশন কাউন্টার বৃদ্ধি ও আবহাওয়ার অনুকূল পরিস্থিতি
গত ৩ জুলাই ২,০০০ টোকেন জারি করা হয়েছিল, কিন্তু পুণ্যার্থীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার কারণে এটি ক্রমাগত বাড়ানো হয়েছে। এখন রবিবার এই সংখ্যা ৫,০০০ এ পৌঁছেছে। একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, টোকেন বাড়ানোর উদ্দেশ্য হলো যত বেশি সম্ভব পুণ্যার্থীকে তাৎক্ষণিক রেজিস্ট্রেশনের সুবিধা দিয়ে তাদের বালটাল এবং পহেলগামের দিকে পাঠানো। আমরা মহাজন হল শালামার রোডে দুটি, রেলস্টেশনের কাছে বৈষ্ণবী ধাম এবং পঞ্চায়েত ভবনে একটি করে রেজিস্ট্রেশন কাউন্টার বাড়িয়েছি। এখন মহাজন হলে আটটি এবং বৈষ্ণবী ধামে সাতটি কাউন্টার রয়েছে।

যাত্রীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে এবং আবহাওয়াও এখনো পর্যন্ত পুরোপুরি অনুকূল রয়েছে। লখনপুর থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত আবহাওয়ায় কোনো বড় পরিবর্তন হয়নি এবং এখনো পর্যন্ত একদিনের জন্যও যাত্রা ব্যাহত হয়নি। জম্মু শহরে পুণ্যার্থীরা ‘বাম-বাম ভোলে’ এবং ‘জয় শিব শংকর’ ধ্বনিতে এক ভক্তিময় পরিবেশ তৈরি করছেন। টোকেন এবং রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিন হাজার হাজার পুণ্যার্থী ভিড় করছেন। এদের মধ্যে অনেকে যাত্রী নিবাস ভগवती নগর থেকে দলবদ্ধভাবে রওনা হচ্ছেন, আবার বড় সংখ্যক সরাসরি বালটাল এবং পহেলগামে পৌঁছাচ্ছেন।

রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিনামূল্যে ট্যাক্সি পরিষেবা শুরু
ট্যাক্সি অপারেটর ইউনিয়ন জম্মু রেলওয়ে স্টেশন থেকে যাত্রী নিবাস ভগবর্তী নগর পর্যন্ত বিনামূল্যে ট্যাক্সি পরিষেবা শুরু করেছে। এর মাধ্যমে পাঁচটি ট্যাক্সি যাত্রীদের যাত্রী নিবাস পর্যন্ত পৌঁছে দেবে। এতে রেলপথে আসা যাত্রীরা স্বস্তি পেয়েছেন। ইউনিয়ন প্রধান দেবেন্দ্র চৌধুরী জানিয়েছেন যে, যোগাযোগ করলে যাত্রীদের এই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। আরটিও জম্মু জাসমিত সিং এই পদক্ষেপের প্রশংসা করে বলেছেন যে, এতে যাত্রীরা উপকৃত হবেন। তিনি আরও বলেছেন যে, ট্রাফিক বিভাগ বেশি ভাড়া আদায়কারী চালকদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করেছে এবং কঠোর জরিমানা করা হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *