ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ব্যান নিয়ে তুলকালাম! ‘বিনা কারণে ছিটকে দেওয়া হচ্ছে’, ক্ষোভ ব্যবহারকারীদের

ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ব্যান নিয়ে তুলকালাম! ‘বিনা কারণে ছিটকে দেওয়া হচ্ছে’, ক্ষোভ ব্যবহারকারীদের

সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে অসংখ্য ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী অভিযোগ করেছেন যে, কোনো সুস্পষ্ট কারণ ছাড়াই তাদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিবিসিকে অনেক ব্যবহারকারী জানিয়েছেন যে, তারা তাদের অ্যাকাউন্ট ফিরে পেতে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন এবং মেটার পক্ষ থেকে কোনো পরিষ্কার উত্তর মিলছে না। এই ঘটনায় ব্যবহারকারীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

এই সপ্তাহেই মেটা স্বীকার করেছিল যে, একটি “প্রযুক্তিগত ত্রুটির” কারণে কিছু ফেসবুক গ্রুপকে ভুলবশত সাসপেন্ড করা হয়েছিল। তবে ব্যবহারকারীদের দাবি, সমস্যাটি কেবল গ্রুপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, ব্যক্তিগত প্রোফাইল, বিজনেস পেজ এবং ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টগুলোও এর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, মেটার মডারেশন সিস্টেমে মানুষের হস্তক্ষেপ ক্রমশ কমছে এবং অ্যাকাউন্ট সাসপেনশনের মতো সিদ্ধান্ত এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)-এর উপর ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। ব্যবহারকারীদের অভিযোগ, যখন তারা আপিল করেন, তখন মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই উত্তর চলে আসে, যা এই সন্দেহকে আরও গভীর করে যে পুরো প্রক্রিয়াটি মানুষের দ্বারা নয়, বরং মেশিন দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।

ব্যবহারকারীদের আসল সমস্যা
কানাডার ব্রিটনি ওয়াটসন নামের এক মহিলার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট মে মাসে নয় দিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, “এটা শুধু একটা অ্যাপ ছিল না, এটা ছিল আমার স্মৃতি, বন্ধু এবং মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা গ্রুপগুলির সাথে যুক্ত থাকার একটি মাধ্যম।” তার আপিলের পরেও মেটা তাকে কোনো সুস্পষ্ট কারণ জানায়নি। লন্ডনে একটি স্থানীয় নিউজ গ্রুপ চালানো জন ডেল-এর অ্যাকাউন্টও হঠাৎ করে সাসপেন্ড হয়ে যায়। যেহেতু তিনি একমাত্র অ্যাডমিন ছিলেন, তাই এখন সেই গ্রুপে নতুন পোস্টের অনুমতি নেই এবং পুরনো পোস্টগুলিও সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত মিশেল ডেমেলো জানান, ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম উভয়ই বন্ধ হওয়ায় তার আয়ে সরাসরি প্রভাব পড়েছে। বিবিসি-র সঙ্গে যোগাযোগ করার পরের দিনই তার অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার করা হয়, কিন্তু তিনি বলেন যে ‘মেটার মতো একটি বড় কো ম্পা নির উচিত ব্যবহারকারীদের সাহায্যের জন্য একটি মানবিক সহায়তা ব্যবস্থা রাখা।’ ইংল্যান্ডের ২১ বছর বয়সী স্যাম টল জানান যে, তার ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং আপিলের উত্তর মাত্র দুই মিনিটের মধ্যে এসেছিল, যা থেকে তিনি অনুমান করেন যে বিষয়টি AI দ্বারা পরিচালিত হয়েছে।

বাড়ছে প্রতিবাদ
এখন পর্যন্ত ২৫,০০০ এরও বেশি মানুষ একটি অনলাইন পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে মেটার কাছ থেকে জবাবদিহি চাওয়া হচ্ছে। রেডডিট এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় হাজার হাজার মানুষ এই ইস্যুতে আলোচনা করছেন এবং কেউ কেউ মেটার বিরুদ্ধে সম্মিলিত আইনি পদক্ষেপের পরিকল্পনাও করেছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *