ব্রিকসের নতুন রূপ দেখাবে ভারত! ছোট দেশগুলোকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বড় ঘোষণা

ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত ১৭তম ব্রিকস সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি জোরালোভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন যে, ভারত যখন ব্রিকসের সভাপতিত্ব গ্রহণ করবে, তখন এই সংগঠনটি ‘সহযোগিতা এবং স্থিতিশীলতার জন্য শক্তি ও উদ্ভাবনের’ নতুন ধারণা নিয়ে এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ভারতের ব্রিকস সভাপতিত্বে ‘গ্লোবাল সাউথ’ বা উন্নয়নশীল দেশগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, ব্রিকসের অর্থ হবে— সহযোগিতা এবং স্থিতিশীলতার জন্য স্থিতিস্থাপকতা ও উদ্ভাবন তৈরি করা। ভারত এই মঞ্চকে ‘মানবতা প্রথমে’ এবং ‘জন-কেন্দ্রিক’ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন যে, ভারতের নেতৃত্বে ব্রিকস একটি নতুন উদ্দেশ্য পাবে, যা বিশ্বে সহযোগিতা, দৃঢ়তা এবং স্থায়িত্বের প্রচার করবে। এটি কেবল একটি মঞ্চ থাকবে না, বরং সমস্ত উন্নয়নশীল দেশের আশার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে বলেন যে, যেখানে কিছু দেশ জলবায়ু পরিবর্তনকে কেবল পরিসংখ্যান দিয়ে পরিমাপ করে, সেখানে ভারত এটিকে তার সংস্কৃতিতে ধারণ করে। ভারতের জন্য জলবায়ু ন্যায়বিচার কোনো বিকল্প নয়, বরং একটি নৈতিক কর্তব্য, কারণ পৃথিবী এবং মানুষের স্বাস্থ্য একে অপরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। তিনি জোর দিয়েছিলেন যে, উন্নত দেশগুলোতে ভবিষ্যতের প্রতি যে আত্মবিশ্বাস দেখা যায়, একই ধরনের আত্মবিশ্বাস উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও থাকা উচিত। কোভিড মহামারীর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন যে, এই সংকট আমাদের শিখিয়েছে যে, ভাইরাস ভিসা নিয়ে আসে না এবং সমাধানও পাসপোর্ট দেখে নির্বাচিত হয় না।
ছোট দেশগুলোর কণ্ঠস্বর হবে জোরালো
মোদী জোর দিয়ে বলেছেন যে, এখন সময় এসেছে বিশ্বের প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছোট এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর কথাও শোনা হোক। তিনি বলেন যে, ভারত সমর্থন করে যে সবার সমান অধিকার এবং অংশগ্রহণ থাকা উচিত। বৈঠকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) মতো নতুন প্রযুক্তি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন যে, এই প্রযুক্তি কেবল ধনী দেশগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়, বরং সবার এর সুবিধা পাওয়া উচিত।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে মোদীর কড়া বার্তা
প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, সন্ত্রাসবাদ আজ সমগ্র মানবজাতির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। তিনি এই বছর জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে হামলার কথা উল্লেখ করে বলেন, এটি কেবল ভারতের উপর নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের উপর হামলা ছিল। তিনি বলেছেন যে, যে দেশগুলো সন্ত্রাসবাদকে অর্থ, প্রশিক্ষণ বা আশ্রয় দেয়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এই ইস্যুতে কোনো দ্বৈত নীতি চলবে না। ভারত ব্রিকসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে যে, তারা পহেলগামের হামলার তীব্র নিন্দা করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী সমস্ত দেশের কাছে আবেদন করেছেন যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কোনো রকম সহনশীলতা দেখানো উচিত নয়। তিনি বলেন যে, এই লড়াই কেবল ভারতের নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের দায়িত্ব।