বিমান-গোরস্থান: ৪৪০০-এর বেশি বিমান এখানে পার্ক করা আছে… জায়গাটি হলো ডেভিস-মন্থান এয়ার ফোর্স বেস

বিমান-গোরস্থান: ৪৪০০-এর বেশি বিমান এখানে পার্ক করা আছে… জায়গাটি হলো ডেভিস-মন্থান এয়ার ফোর্স বেস

আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন অব্যবহৃত বিমানগুলোর কী হয়? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা রাজ্যের মরুভূমি শহর টুকসনে (Tucson) রয়েছে ডেভিস-মন্থান এয়ার ফোর্স বেস (Davis-Monthan Air Force Base), যা বিশ্বের বৃহত্তম বিমান গোরস্থান নামে পরিচিত।

আনুষ্ঠানিকভাবে ৩০৯তম অ্যারোস্পেস রক্ষণাবেক্ষণ ও পুনর্জন্ম গোষ্ঠী (309th Aerospace Maintenance and Regeneration Group – AMARG) নামে পরিচিত এই বিশাল সাইটটিতে ৪,৪০০টিরও বেশি অবসরপ্রাপ্ত বিমান রয়েছে। পুরনো ফাইটার জেট থেকে শুরু করে বিশাল পরিবহন বিমান পর্যন্ত, সবগুলোই এখানে খোলা আকাশের নিচে সারি সারি করে রাখা হয়েছে।

কেন টুকসনে এত বিমান?
টুকসনকে এই বিশেষ স্থানের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে এর শুষ্ক এবং রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়ার কারণে। এখানে প্রায় কোনো বৃষ্টি বা আর্দ্রতা নেই, যার মানে বিমানগুলো মরিচা এবং ক্ষয় থেকে সুরক্ষিত থাকে। এখানকার মাটিও শক্ত এবং দৃঢ়, তাই বিমানগুলো ডুবে না গিয়ে পার্ক করা যায়, যা সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণকে সহজ করে তোলে।

এই বিমানগুলোর কী হয়?
এখানে সব বিমান শুধু পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখা হয় না। প্রতিটি বিমানের একটি উদ্দেশ্য আছে: কিছু বিমান মেরামত করে প্রয়োজনে আবার উড়ানোর জন্য প্রস্তুত করা হয়, কিছু বিমান থেকে মূল্যবান যন্ত্রাংশ খুলে নেওয়া হয় যা অন্য বিমানে ব্যবহার করা যায়, এবং বাকিগুলো ধীরে ধীরে খুলে স্ক্র্যাপ ধাতু হিসেবে বিক্রি করা হয়।

সংরক্ষণের আগে, বিমানগুলো একটি সতর্ক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়। সেগুলোকে পরিষ্কার করা হয়, সব জ্বালানি বের করে নেওয়া হয় এবং ধুলো, তাপ ও সূর্যালোক থেকে রক্ষা করার জন্য প্লাস্টিক ও বিশেষ স্প্রে দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়।

কারা টুকসনে তাদের বিমান পাঠায়?
বেশিরভাগ বিমানই মার্কিন সামরিক বাহিনীর, অর্থাৎ বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী এবং কোস্ট গার্ডের। তবে শুধু মার্কিন বিমানই নয়, নাসা (NASA) এবং এমনকি বন্ধুত্বপূর্ণ বিদেশি দেশগুলোর বিমানও এখানে সংরক্ষণ করা হয়।

নীরব ডানাগুলোর শহর
এই বিশাল “বিমান শহর”-এর মধ্যে দিয়ে হাঁটলে মনে হয় যেন ইতিহাসে পা রেখেছেন। প্রতিটি বিমান বিভিন্ন মিশনে কাজ করেছে, বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে উড়েছে, এবং এখন নীরবতায় বিশ্রাম নিচ্ছে। এটি শুধু একটি গোরস্থান নয়, এটি স্মৃতি, মেরামত এবং পুনর্ব্যবহারের একটি স্থান।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *