রাজকুমারের গোপনীয় শেষকৃত্যের ইচ্ছা, কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন?

বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা রাজকুমার তাঁর স্পষ্টবাদী স্বভাব ও অসাধারণ অভিনয়ের জন্য সুপরিচিত ছিলেন। তিনি আমিতাভ বচ্চন, সলমান খান থেকে গোবিন্দার মতো তারকাদের মুখের উপর সমালোচনা করে সংবাদের শিরোনামে এসেছেন। তবে তাঁর জীবনের একটি অজানা দিক ছিল তাঁর শেষ ইচ্ছা, যা শুনে অনেকেই বিস্মিত। গলার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৯৬ সালের ৩ জুলাই, মাত্র ৭০ বছর বয়সে মুম্বইয়ে তিনি প্রয়াত হন। মৃত্যুর আগে তিনি পরিবারকে বলেছিলেন, “আমার মৃত্যুর খবর কাউকে জানিও না। আমাকে দাহ করে তারপর সবাইকে জানাবে।” “এই ইচ্ছা তাঁর গোপনীয়তার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে,” বলেন চলচ্চিত্র ইতিহাসবিদ রাহুল ভার্মা।
রাজকুমারের এই অস্বাভাবিক ইচ্ছার পেছনে ছিল তাঁর স্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি। তিনি চাননি তাঁর মৃত্যুকে ঘিরে কোনো হইচই বা মিডিয়ার তামাশা হোক। তাঁর পরিবার তাঁর ইচ্ছা মেনে গোপনে শেষকৃত্য সম্পন্ন করে। তাঁর শেষকৃত্যের স্থান বা সময় সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশিত হয়নি। “তিনি সবসময় জীবনকে নিজের শর্তে বেঁচেছিলেন, মৃত্যুও তাঁর নিয়ন্ত্রণে ছিল,” বলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সহকর্মী প্রিয়া মেহতা। রাজকুমারের এই সিদ্ধান্ত তাঁর ব্যক্তিত্বের গভীরতা ও স্বাধীন মনোভাবের প্রতিফলন।
১৯২৬ সালে পাকিস্তানের লোরালাইয়ে জন্ম নেওয়া রাজকুমার মুম্বই পুলিশে সাব-ইন্সপেক্টর হিসেবে কাজ করতেন। এক পরামর্শে তিনি চাকরি ছেড়ে বলিউডে পা রাখেন এবং ‘মাদার ইন্ডিয়া’, ‘তিরঙ্গা’, ‘পৈগাম’, ‘সৌদাগর’-এর মতো ছবিতে অভিনয় করে অমর হয়ে যান। তাঁর ডায়লগ ডেলিভারি ও অভিনয় ফ্যানদের মুগ্ধ করত। তবে, তাঁর অকাল মৃত্যু ভক্তদের জন্য গভীর শোকের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাঁর শেষ ইচ্ছা তাঁর জীবনের মতোই অনন্য ছিল, যা আজও আলোচনার বিষয়।