ভারতীয় সিনেমার গ্লোবাল গেটওয়ে, জানুন এর কনসেপ্ট ও পূর্ণ পরিকল্পনা

ভারতীয় সিনেমার গ্লোবাল গেটওয়ে, জানুন এর কনসেপ্ট ও পূর্ণ পরিকল্পনা

মুম্বই: ভারতীয় সিনেমা রাজ কাপুরের যুগ থেকেই বিশ্ব মঞ্চে উজ্জ্বল। তাঁর চলচ্চিত্র প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন, চীন ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এর আগে দেবিকা রানী ও হিমাংশু রায়ের মতো ব্যক্তিত্ব লন্ডন থেকে প্যারিস পর্যন্ত প্রভাব ফেলেছিলেন। সত্তর ও আশির দশকে অমিতাভ বচ্চন, মিঠুন চক্রবর্তী, রজনীকান্ত, শাহরুখ খান, সলমান খান, হৃতিক রোশন, প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার মতো তারকাদের হাত ধরে ভারতীয় সিনেমা আরও আন্তর্জাতিক হয়ে ওঠে। এই পটভূমিতে, ওয়ার্ল্ড অডিও ভিজ্যুয়াল অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট সামিট (WAVES) ২০২৫ একটি যুগান্তকারী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। মুম্বইয়ে ১-৪ মে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলন ভারতীয় সিনেমাকে গ্লোবাল গেটওয়ে হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, “ভারতীয় সিনেমা গত শতাব্দীতে বিশ্বের প্রতিটি কোণে ভারতের জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে। রাজ কাপুরের রাশিয়ায় জনপ্রিয়তা, সত্যজিৎ রায়ের কান-এ সাফল্য এবং RRR-এর অস্কার জয় তার প্রমাণ।”

WAVES-এর মূল লক্ষ্য হল ভারতীয় সিনেমা ও মিডিয়া শিল্পকে ‘ক্রিয়েট ইন ইন্ডিয়া, ক্রিয়েট ফর দ্য ওয়ার্ল্ড’ মন্ত্রের মাধ্যমে বিশ্ব নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত করা। এই সম্মেলনের ট্যাগলাইন “কানেক্টিং ক্রিয়েটরস, কানেক্টিং কান্ট্রিস” ভারতের সাংস্কৃতিক কূটনীতি ও সৃজনশীল অর্থনীতির প্রতিফলন। দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমা, বিশেষ করে SS রাজামৌলির মতো নির্মাতাদের কাজ, হলিউডের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রয়েছে। অভিনেতা আল্লু অর্জুন WAVES-এ বলেন, “আমরা বিশ্ব মঞ্চে দ্রুত এগোচ্ছি। ভারতীয় সিনেমা শীঘ্রই গ্লোবাল বক্স অফিসে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।” সম্মেলনে শাহরুখ খান, দীপিকা পাড়ুকোন, আমির খান, আলিয়া ভট্টের মতো তারকারা উপস্থিত ছিলেন, যাঁরা ভারতীয় সিনেমার সম্ভাবনার প্রশংসা করেন। শাহরুখ বলেন, “ছোট শহরে সহজ ও সস্তা থিয়েটারের প্রয়োজন, যাতে ভারতীয় ছবি বৃহত্তর দর্শকের কাছে পৌঁছায়।”

ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি বর্তমানে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বছরে ৫০০-এর বেশি ছবি নির্মিত হলেও, বক্স অফিসে সফল ছবির সংখ্যা হাতে গোনা। WAVES এই নিরাশার পরিবেশ দূর করে সিনেমা সংস্কৃতিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে। এই সম্মেলন গল্প বলার শিল্পকে উৎসাহিত করছে, যেখানে অ্যানিমেশন, গেমিং, ভিআর, এআই-এর মতো নতুন প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটছে। ভারত প্যাভিলিয়নের মাধ্যমে WAVES ভারতীয় গল্প, সংস্কৃতি ও প্রযুক্তির সংমিশ্রণ প্রদর্শন করছে। মুকেশ আম্বানি বলেন, “ভারতের মিডিয়া ও বিনোদন শিল্প ২৮ বিলিয়ন ডলারের। আগামী দশকে এটি ১০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে।” ভবিষ্যতে WAVES পুরস্কার চালু করার পরিকল্পনাও রয়েছে, যা তরুণ স্রষ্টাদের আরও উৎসাহিত করবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *