১১ বছরের সিরিয়াল কিলার : ইংল্যান্ডে মেরি বেলের চাঞ্চল্যকর হত্যা কাহিনি

সময়টা ১৯৬৮ সালের মে মাস। ইংল্যান্ডের স্কটউডে চার বছর বয়সী মার্টিন ব্রাউন নামের এক শিশুর ক্ষতবিক্ষত দেহ একটি পরিত্যক্ত বাড়ির নিচ থেকে উদ্ধার হয়। প্রাথমিকভাবে পুলিশ একে ছাদ থেকে পড়ে যাওয়া দুর্ঘটনা বলে ধারণা করে। কিন্তু এর কয়েক সপ্তাহ পরেই, ৩১ জুলাই, ব্রায়ান হাওয়ে নামের তিন বছর বয়সী আরও এক শিশুর নৃশংস হত্যাকাণ্ড পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। দ্বিতীয় শিশুটির শরীরে নৃশংস আঘাতের চিহ্ন ছিল, তার চুল কেটে ফেলা হয়েছিল এবং পেটে ব্লেড দিয়ে ‘এম’ অক্ষরটি খোদাই করা ছিল।
এই দুটি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে পুলিশ হতবাক হয়ে যায় যখন তারা জানতে পারে যে এর পেছনে রয়েছে মাত্র ১১ বছর বয়সী এক বালিকা, যার নাম মেরি বেল। মেরি প্রথমে চার বছর বয়সী মার্টিন ব্রাউনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং পরে তার দেহ ছাদ থেকে ফেলে দেয়। প্রথম হত্যাকাণ্ডের পর সে একটি হাতে লেখা কাগজ মৃতদেহের পাশে রেখে যায়, যা পরবর্তীতে দুটি খুনের যোগসূত্র প্রমাণ করে। মেরির সঙ্গে এই কাজে ১৩ বছর বয়সী নরমা বেলও জড়িত ছিল, যদিও তাদের মধ্যে কোনো আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল না।
তদন্তকারীরা মেরি ও নরমার অদ্ভুত আচরণ দেখে তাদের সন্দেহ করেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময় দুজনেই খুনের ঘটনাকে হালকাভাবে নিচ্ছিল এবং নতুন নতুন তথ্য যোগ করছিল। অবশেষে নরমার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পুলিশ মেরিকে গ্রেপ্তার করে। মেরির শৈশব ছিল ভয়াবহ; তার মা একজন যৌনকর্মী ছিলেন এবং ছোটবেলা থেকেই তাকে অবহেলা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। এই নির্মম অভিজ্ঞতাই তাকে একজন সিরিয়াল কিলারে পরিণত করে। ১২ বছর জেল খাটার পর ১৯৮০ সালে মেরি মুক্তি পায় এবং নতুন নামে জীবন শুরু করে, কিন্তু তার অতীত সবসময় তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। ২০০৩ সালে আদালতের এক রায়ে তার পরিচয় গোপন রাখার আবেদন মঞ্জুর হয়, যা পরবর্তীতে ‘মেরি বেল নির্দেশ’ নামে পরিচিতি লাভ করে।