বলিউডের বাদশা শাহরুখ খান ও তাঁর স্ত্রী গৌরী খানের প্রেমকাহিনি বরাবরই আলোচনার কেন্দ্রে। শূন্য থেকে শুরু করে বলিউডের ‘বাদশা’ হয়ে ওঠা শাহরুখ বহু নারীর কাছে আদর্শ স্বামী হলেও, একটা সময় গৌরী ও তাঁর পরিবার শাহরুখকে জামাই হিসেবে মেনে নিতে রাজি ছিলেন না। প্রাথমিকভাবে তাঁদের আপত্তির কারণ ছিল ধর্মীয় ভিন্নতা। শাহরুখ মুসলিম এবং গৌরী হিন্দু হওয়ায় পরিবার ও কিছু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এই বিয়েতে বাধা আসে। এমনকি গৌরীর ভাই বিক্রান্ত ছিব্বর শাহরুখকে পছন্দ করতেন না। শোনা যায়, তিনি নাকি শাহরুখকে মারারও পরিকল্পনা করেছিলেন।

এক সাক্ষাৎকারে শাহরুখ জানিয়েছিলেন, তখন বিক্রান্ত স্কুলে পড়তেন এবং নিজেকে বড় দাদা ভাবতেন। যখনই দেখা হতো, গুন্ডাদের মতো আচরণ করতেন। একবার তো তিনি বন্দুক নিয়ে শাহরুখকে হুমকিও দিয়েছিলেন। তবে গৌরী যেহেতু তাঁর বোন ছিলেন, তাই শাহরুখ এই বিষয়গুলিকে কখনও গুরুত্ব দেননি, বরং দেখা হলেই সমীহ করে কথা বলতেন। সব বাধা পেরিয়ে যখন তাঁরা বিয়ে করেন, তখন সমস্ত নিয়ম মেনেই সংসার পাতেন। প্রাথমিকভাবে আইনি মতে বিয়ের পর তাঁরা সামাজিক বিয়ে করেন।

ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে ফরিদা জালালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শাহরুখ খান জানিয়েছিলেন, বিয়ের কোনো রীতিতে ভুল হোক, তা তিনি চাননি। যেহেতু ধর্ম ভিন্ন ছিল, তাই তিনি এমন কিছু করতে চাননি, যা দেখে কারও মনে হয় যে তিনি গৌরীর ধর্মকে আসাম্মান করছেন। তাই বিয়ের দিন তিনি একটু বেশি সতর্ক ছিলেন এবং সময় নিয়ে সমস্ত নিয়ম মানার চেষ্টা করছিলেন। একটা সময় তা এতটাই দীর্ঘ হয়ে যায় যে, সেখানে উপস্থিত সকলে নিজে থেকেই বলে বসেন, “অনেক হয়েছে, এবার থামা হোক।” পারিবারিক আপত্তি থেকে ভালোবাসার এই জয় প্রমাণ করে যে, ভালোবাসা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ সব বাধা অতিক্রম করতে পারে।