বলিউড সঙ্গীতের বিবর্তন: তিন দশকে কীভাবে বদলাল গানের ধরন

বলিউড সঙ্গীতের বিবর্তন: তিন দশকে কীভাবে বদলাল গানের ধরন

সঙ্গীত মানুষের হৃদয়কে একত্রিত করার এক অপূর্ব মাধ্যম। এটি যুগ যুগ ধরে মানুষের আবেগ, সংগ্রাম ও উৎসবের সঙ্গী হয়ে এসেছে। বলিউড সঙ্গীতও তার ব্যতিক্রম নয়। গত তিন দশকে বলিউডের গানের ধরন, শৈলী এবং উপস্থাপনায় এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। কাওয়ালি ও গজলের সুর থেকে শুরু করে আধুনিক রিমিক্স ও র‌্যাপ, বলিউড সঙ্গীত বিশ্বব্যাপী শ্রোতাদের মন জয় করেছে। এই বিবর্তন শুধু প্রযুক্তির উন্নতিই নয়, সাংস্কৃতিক মিশ্রণ এবং নতুন প্রজন্মের পছন্দের প্রতিফলন।

নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে বলিউডের গানে কাওয়ালি ও গজলের প্রভাব ছিল সবচেয়ে বেশি। ‘হামে তো লুট লিয়া মিলকে হুসন ওয়ালোনে’ (১৯৫৮) বা ‘লাগা চুনরি মে দাগ’ (১৯৬৩)-এর মতো গানে হারমোনিয়াম, তবলা, বুলবুল তরঙ্গের মতো বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে হাততালির ব্যবহার ছিল উল্লেখযোগ্য। এই সময়ে মান্না দে, আশা ভোঁসলে, সুধা মালহোত্রার মতো শিল্পীরা তাদের কণ্ঠে গানগুলোকে অমর করে রেখেছেন। নব্বইয়ের শেষ দিকে এসে রোমান্টিক গানের যুগ শুরু হয়। উদিত নারায়ণ, লতা মঙ্গেশকর, অলকা ইয়াগনিকের মতো গায়করা ‘চুরা কে দিল মেরা’ বা ‘ইয়ে কালি কালি আঁখে’-এর মতো গানে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেন। সিন্থেসাইজার, বেস গিটার, ড্রামের ব্যবহার গানে আধুনিকতার ছোঁয়া যোগ করে।

দুই হাজারের দশকে বলিউড সঙ্গীত বাণিজ্যিকীকরণের দিকে ঝুঁকে। আইটেম সং, রিমিক্স এবং পাশ্চাত্য সঙ্গীতের প্রভাব গানে স্পষ্ট হয়। শান, সোনু নিগম, এ আর রাহমানের মতো শিল্পীরা ‘জারা জারা’, ‘ছাইয়া ছাইয়া’-এর মতো গানে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মিশেল ঘটান। ২০২০-এর দশকে এসে র‌্যাপ, হিপ-হপ এবং রিমেকের প্রাধান্য বাড়ে। ‘ও সাকি সাকি’, ‘রাতান লাম্বিয়ান’-এর মতো গানে নতুন প্রজন্মের শিল্পী যেমন নেহা কক্কর, অরিজিৎ সিং উঠে আসেন। তবে পুরনো গানের রিমেকের প্রবণতা মৌলিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুললেও, কিছু সঙ্গীতশিল্পী ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সেতুবন্ধন তৈরি করছেন, যা শ্রোতাদের কাছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *