ভারত ও নিউজিল্যান্ডের দলগুলো শনিবার আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মুখোমুখি হবে। যদিও ক্রিকেট দুনিয়ায় এই দুই দেশ সমানে-সমান লড়াই করে, তবে অন্যান্য ক্ষেত্রে ভারত অনেক বেশি শক্তিশালী।

জিডিপি থেকে জনসংখ্যা—সব ক্ষেত্রেই ভারতের তুলনায় নিউজিল্যান্ড কোথাও দাঁড়াতে পারে না। বাস্তবতা হলো, সম্প্রতি মহাকুম্ভে যত মানুষ ডুব দিয়েছে, তার এক শতাংশও নিউজিল্যান্ডের মোট জনসংখ্যা নয়।

ভারতীয়দের কাছে অপরিচিত নয় নিউজিল্যান্ড

নিউজিল্যান্ড ভারতীয় ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে নতুন কোনো নাম নয়। বছরের পর বছর এই দুই দেশ একে অপরের সঙ্গে খেলে আসছে। মাত্র চার মাস আগে নিউজিল্যান্ড দল ভারত সফরে এসে স্বাগতিক দলকে ৩-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছিল। ২৫ বছর আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল হোক বা ২০২১ সালের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (WTC) ফাইনাল—নিউজিল্যান্ডের দল ভারতকে হারিয়ে দিয়েছে। অন্তত আইসিসি টুর্নামেন্টে ভারতীয় দল নিউজিল্যান্ডের তুলনায় দুর্বল বলে মনে হয়। সম্ভবত এটি একটি কারণ, যার ফলে ভারতীয়দের মধ্যে নিউজিল্যান্ড সম্পর্কে কৌতূহল বেশি থাকে।

তিনবার রাগবি বিশ্বকাপ জয়ী

আমরা ভারতীয়রা নিউজিল্যান্ডকে প্রধানত ক্রিকেটের জন্য চিনি, তবে এটি তাদের দ্বিতীয় জনপ্রিয় খেলা। নিউজিল্যান্ডে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা হলো রাগবি, যেখানে তারা তিনবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তাদের হকি দলও বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দলগুলোর মধ্যে গণ্য হয়। তবে নিউজিল্যান্ড একটি ছোট দেশ হওয়ায় সব খেলায় তার প্রকৃত শক্তি প্রকাশ পায় না।

৫১% মানুষ বলেছে—‘নো রিলিজিয়ন’

নিউজিল্যান্ডের মোট জনসংখ্যা প্রায় ৫২ লাখ। ভারতের তুলনায় এটি খুবই কম; দিল্লি-মুম্বাইসহ ভারতের অন্তত ৯টি শহরের জনসংখ্যাই নিউজিল্যান্ডের চেয়ে বেশি। সম্প্রতি ভারতে মহাকুম্ভ অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যা বিশ্বব্যাপী আলোচিত হয়। প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত এই মহাকুম্ভে ৬৫ কোটির বেশি মানুষ যোগ দিয়েছিল, যা নিউজিল্যান্ডের মোট জনসংখ্যার এক শতাংশেরও কম। এছাড়া নিউজিল্যান্ডের মানুষের ধর্মের প্রতি তেমন আগ্রহ নেই। একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যখন নিউজিল্যান্ডে জনসংখ্যা সংক্রান্ত সমীক্ষা চালানো হয়, তখন ৫১% মানুষ তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের স্থানে ‘নো রিলিজিয়ন’ চিহ্নিত করে।

মহিলাদের ভোটাধিকার দেওয়া প্রথম দেশ

নিউজিল্যান্ডের মানুষ ধর্মকে খুব বেশি গুরুত্ব না দিলেও, মানবিক মূল্যবোধকে তারা সর্বোচ্চ স্থানে রাখে। নারীর অধিকারের দিক থেকে, বিশ্বের মধ্যে নারীদের ভোটাধিকার প্রদানকারী প্রথম দেশ হল নিউজিল্যান্ড। ভারতের স্বাধীনতার ৫৪ বছর আগেই নিউজিল্যান্ড তার দেশের নারীদের ভোটাধিকার প্রদান করেছিল।

মাথাপিছু আয় ভারতের তুলনায় ১৮ গুণ বেশি

যদি মাথাপিছু আয়ের (Per Capita Income) কথা বলা হয়, তাহলে নিউজিল্যান্ড অনেক দেশের তুলনায় ভালো অবস্থানে রয়েছে। নিউজিল্যান্ডের মাথাপিছু আয় প্রায় ৪৩.৪৫ লাখ টাকা, যেখানে ভারতের মাথাপিছু আয় মাত্র ২.৩৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ, নিউজিল্যান্ডের মাথাপিছু আয় ভারতের তুলনায় ১৮ গুণ বেশি। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, নিউজিল্যান্ডের একজন নাগরিক মাত্র ২০ দিনে যতটা আয় করে, ভারতের একজন নাগরিক সেই পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পুরো এক বছর সময় নেয়।

O