ডায়াবেটিস-পূর্ব লক্ষণ: আপনার কি ডায়াবেটিস আছে? রাতে দেখা যাওয়া এই ৫টি লক্ষণ উপেক্ষা করবেন না

চিনি বা ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা ধীরে ধীরে শরীরের ক্ষতি করে। যদি এর লক্ষণগুলি সময়মতো বোঝা না যায়, তাহলে এটি মারাত্মক রূপ নিতে পারে। বিশেষ করে রাতে, কিছু লক্ষণ রয়েছে যা এই রোগ প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করতে সাহায্য করতে পারে।
প্রি-ডায়াবেটিস হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে শরীরে চিনির মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কিন্তু ডায়াবেটিসের মাত্রার চেয়ে কম থাকে। এটি টাইপ-২ ডায়াবেটিসের একটি প্রধান লক্ষণ। যদি এই অবস্থা সময়মতো নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তাহলে ভবিষ্যতে এটি একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে উঠতে পারে। ভারতকে ‘ডায়াবেটিস রাজধানী’ বলা হয় কারণ এখানকার মানুষের মধ্যে চিনির সমস্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেকেই এর প্রাথমিক লক্ষণগুলি চিনতে পারেন না, যার কারণে তারা পরে সমস্যার সম্মুখীন হন। আসুন জেনে নিই রাতে দেখা যাওয়া ৫টি লক্ষণ এবং যা প্রি-ডায়াবেটিস এর ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
রাতে দেখা যাওয়া ৫টি লক্ষণ যা ডায়াবেটিসের ইঙ্গিত দেয়
১. রাতে অতিরিক্ত ঘাম (রাতের ঘাম)
যদি আপনি রাতে অতিরিক্ত ঘাম পান, তাহলে এটি রক্তে শর্করার ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ হতে পারে। যখন চিনির মাত্রা বেশি থাকে, তখন শরীর এটি ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করে, যার ফলে ঘাম হতে পারে।
২. পায়ে ঝিনঝিন বা অসাড়তা
যদি রাতে আপনার পায়ে ঝিনঝিন বা অসাড়তার সমস্যা হয়, তাহলে এটিকে হালকাভাবে নেবেন না। এটি উচ্চ রক্তে শর্করার কারণে হতে পারে এবং এটি প্রাক-ডায়াবেটিসের লক্ষণও হতে পারে।
৩. অস্থির ঘুম
যদি আপনার রাতে ঘুমাতে সমস্যা হয়, ঘন ঘন ঘুম থেকে ওঠে অথবা অস্থির বোধ হয়, তাহলে রক্তে শর্করার ওঠানামার কারণে এটি হতে পারে। কম ঘুম ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
৪. রাতে ঝাপসা দৃষ্টি
যদি আপনি রাতে স্পষ্ট দেখতে না পান অথবা জিনিসপত্র ঝাপসা দেখায়, তাহলে এটি উচ্চ রক্তে শর্করার লক্ষণও হতে পারে। চিনির মাত্রা বৃদ্ধি চোখের লেন্সের উপর প্রভাব ফেলে, যা দৃষ্টিশক্তির উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
৫. রাতে ঘন ঘন ক্ষুধা লাগা (রাতের বেলায় ক্ষুধা)
যদি আপনি ভালো রাতের খাবার খেয়ে থাকেন কিন্তু তবুও রাতে বারবার ক্ষুধা লাগে এবং কিছু খাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন, তাহলে এটিও চিনির ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ হতে পারে।
ডায়াবেটিস এড়াতে কী করবেন?
উপরের লক্ষণগুলি লক্ষ্য করলে, অবিলম্বে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। এছাড়াও, নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে আপনি আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন:
ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন: স্থূলতা ডায়াবেটিসের একটি প্রধান কারণ হতে পারে। তাই আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন: আপনার খাদ্যতালিকায় ফাইবার, আস্ত শস্য, সবুজ শাকসবজি এবং ফলমূল অন্তর্ভুক্ত করুন।
মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলুন: চিনি বেশি থাকে এমন খাবার এবং পানীয় গ্রহণ কমিয়ে দিন।
ধূমপান এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন: এই দুটি জিনিসই রক্তে শর্করার ভারসাম্যহীনতার কারণ হতে পারে।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন: প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন অথবা হাঁটুন।
ঘুমের সময়সূচী বজায় রাখুন। পর্যাপ্ত, গভীর ঘুম গুরুত্বপূর্ণ।