কর্ণাটকের বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র হাম্পিতে একটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও উদ্বেগজনক ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এই ঘটনায়, একজন ইসরায়েলি মহিলা পর্যটক এবং একজন হোমস্টে অপারেটরকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল।

এই মামলায়, পুলিশ দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে, এবং তৃতীয় অভিযুক্তের খোঁজ চলছে।

কোপ্পাল জেলার পুলিশ সুপার রাম এল আরসিদ্ধি জানিয়েছেন যে এই মামলায় মল্লেশ এবং চেতন সাই নামে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের দুজনেরই বয়স ২১ বছর এবং তারা গঙ্গাবতীর সাই নাগরা এলাকার বাসিন্দা। অভিযুক্ত দুজনেই রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। পুলিশ তৃতীয় পলাতক অভিযুক্তকে খুঁজছে।

এই ঘটনার পর, কর্ণাটকের বিরোধী দল বিজেপি কংগ্রেস সরকারকে নিশানা করেছে এবং রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এই ঘটনাকে নিন্দনীয় বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে তাঁর সরকার রাজ্যে আগত পর্যটক সহ সকল নাগরিকের নিরাপত্তা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আগামী ৪৮ ঘন্টায় বজ্রপাত ও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা, পশ্চিমা ঝড়ের প্রভাব ১৩ মার্চ পর্যন্ত থাকবে, আইএমডি সতর্কতা

বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে যখন হোমস্টে অপারেটর, ২৭ বছর বয়সী একজন ইসরায়েলি পর্যটক এবং তিনজন পুরুষ পর্যটক তুঙ্গভদ্রা খালের তীরে বসে গিটার বাজিয়ে সঙ্গীত উপভোগ করছিলেন এবং তারাভরা আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। তারপর তিনজন লোক মোটরসাইকেলে করে সেখানে পৌঁছায় এবং পেট্রোল পাম্পের ঠিকানা জিজ্ঞাসা করতে থাকে। হোমস্টে অপারেটর তাদের জানান যে কাছাকাছি কোনও পেট্রোল পাম্প নেই এবং তাদের সানাপুরে গিয়ে পেট্রোল আনতে পরামর্শ দেন। এরপর অভিযুক্তরা ১০০ টাকা দাবি করে, যা হোমস্টে অপারেটর প্রত্যাখ্যান করে।

অভিযুক্তরা যখন টাকা দাবি করার জন্য জোর দিচ্ছিল, তখন ওড়িশার এক পুরুষ পর্যটক তাদের ২০ টাকা দিয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও অভিযুক্তরা ঝগড়া শুরু করে এবং গালিগালাজ শুরু করে। এরপর তারা তিন পুরুষ পর্যটকের উপর আক্রমণ করে এবং পাথর ছুঁড়ে মারার হুমকি দেয়। এরপর অভিযুক্তরা তিন পুরুষ পর্যটককে খালে ঠেলে দেয়। এ সময় একজনের মৃত্যু হয়, এবং দুজন আহত হন।

বর-কনের মধ্যে দারুন যুদ্ধ!

এফআইআর অনুসারে, অভিযুক্তরা হোমস্টে অপারেটরকে লাঞ্ছিত করে এবং তারপর তাকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণ করে। একইভাবে, একজন ইসরায়েলি পর্যটককেও লক্ষ্যবস্তু করে ধর্ষণ করা হয়েছিল। ঘটনার পর অভিযুক্তরা তাদের জিনিসপত্র লুট করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এই ঘটনার পর, পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নেয় এবং দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে এবং তৃতীয় অভিযুক্তকে ধরার জন্য একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এই ঘটনাকে জঘন্য অপরাধ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে পুলিশকে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার পর্যটক এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ নেবে যাতে এই ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি না হয়। এই ঘটনার পর, কর্ণাটক বিজেপি সভাপতি বি. ওয়াই। বিজয়েন্দ্র কংগ্রেস সরকারকে আক্রমণ করে বলেন যে রাজ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সরকার এই বিষয়ে উদাসীন। তিনি বলেন, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে হাম্পিতে এমন ঘটনা ঘটেছে, যা তার গৌরবোজ্জ্বল অতীত এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত।

অসাবধান বাবা-মা! একটি নিষ্পাপ শিশু লিফটে আটকে গেল, কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে এল না।

তিনি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ লিখেছেন যে এই ঘটনার পর এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে অপরাধীরা এখন কোনও ভয় ছাড়াই রাজ্যে অপরাধ করছে। তিনি সরকারের কাছে দাবি জানান যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক। বর্তমানে পুলিশ বিষয়টি তদন্তে ব্যস্ত এবং আহত মহিলারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ এই ঘটনার সকল দিক পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করছে যাতে দোষীদের শাস্তি দেওয়া যায় এবং রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা আরও জোরদার করা যায়।