ম্যাচের পর উৎসবের মাঝে উত্তেজনা… মহুতে সংঘর্ষ ও উত্তেজনা, হায়দরাবাদ-নাগপুর-করিমনগরে লাঠিচার্জ

ম্যাচের পর উৎসবের মাঝে উত্তেজনা… মহুতে সংঘর্ষ ও উত্তেজনা, হায়দরাবাদ-নাগপুর-করিমনগরে লাঠিচার্জ

ভারত নিউজিল্যান্ডকে ৪ উইকেটে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০২৫ জয় করেছে। এই জয়ের আনন্দে গোটা দেশ উচ্ছ্বাসে মেতে উঠলেও, কিছু শহরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয়েছে।

মধ্যপ্রদেশের মহুতে উল্লাসরত জনতার উপর ব্যাপক পাথর নিক্ষেপ করা হয়েছে। অন্যদিকে, তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদ ও করিমনগর এবং মহারাষ্ট্রের নাগপুরে পুলিশ জনতার উপর লাঠিচার্জ করেছে।

মধ্যপ্রদেশ: মহুতে কীভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল?

মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর সংলগ্ন মহুতে ৯ মার্চ রাতে ভারতের জয়ের উৎসব চলাকালীন দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘটনাটি জামা মসজিদের কাছে ঘটে, যেখানে বিজয় মিছিল বের করা জনতার সঙ্গে অন্য একটি পক্ষের বিবাদ বাধে। মুহূর্তের মধ্যেই সংঘর্ষ শুরু হয়ে পাথর নিক্ষেপে রূপ নেয়, ফলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ইন্দোর: মহুতে কেন পরিস্থিতি বেকাবু হলো?

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বিজয় মিছিল যখন মসজিদের কাছে পৌঁছায়, তখনই দুই পক্ষের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়, যা দ্রুত হিংসাত্মক রূপ নেয়। দাঙ্গাবাজরা উল্লাসরত জনতার উপর পাথর ছুঁড়তে শুরু করে, ফলে বহু মানুষ আহত হয়। পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে কিছু দুর্বৃত্ত গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। দুটি গাড়ি ও দুটি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

নাগপুর: পুলিশকে রাস্তায় নামতে হলো

মহারাষ্ট্রের নাগপুরে ভারতের জয়ের পর উল্লাস করতে প্রচুর মানুষ রাস্তায় নেমে পড়ে। তবে, বিশাল জনসমাগম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে, পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে রাস্তায় নামতে হয় এবং লাঠিচার্জ করতে হয়।

জয়ের উৎসবে লাঠিচার্জ!

এদিকে, তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদে জয়ের আনন্দ উদযাপনরত জনতার উপর লাঠিচার্জ করা হয়েছে। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য এই ঘটনার একটি ভিডিও টুইট করেছেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “হায়দরাবাদ পুলিশের পক্ষ থেকে দিলসুখনগরে জনতার উপর লাঠিচার্জ করা হয়েছে। যারা বিতাড়িত হয়েছে, তারা ভারতীয় ক্রিকেট দলের জয়ের উৎসব করছিল। একই ধরনের দৃশ্য করিমনগরেও দেখা গেছে।”

উত্তরপ্রদেশ: সাহারানপুরে পুলিশকর্মীকে ঘিরে ফেলল জনতা

ভারতের ঐতিহাসিক জয়ের পর উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরের ঘণ্টাঘরে হাজার হাজার মানুষ একত্রিত হয়ে বিজয় উৎসবে মেতে ওঠে। তরুণদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। জনসমাগমের কারণে ট্রাফিক সম্পূর্ণভাবে থমকে যায়।

এই সময় ঘণ্টাঘরে কর্তব্যরত এক সাব-ইন্সপেক্টর এক যুবকের হাত থেকে জাতীয় পতাকা কেড়ে নিয়ে তাকে ধমক দেন। এরপর, তিনি সেই পতাকাকে উল্টো ধরে জনতাকে সরানোর চেষ্টা করেন। পতাকার প্রতি এই অবমাননায় যুবকদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা সাব-ইন্সপেক্টরের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়ে।

ক্রমশ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং জনতা পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে, পুলিশকর্মীদের সঙ্গে যুবকদের ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। ক্ষুব্ধ জনতা সাব-ইন্সপেক্টরকে ঘিরে ফেলে, এমনকি তার টুপিও পড়ে যায়। পরিস্থিতির অবনতি দেখে তিনি নিজেকে বাঁচাতে ঘণ্টাঘর পুলিশ চৌকিতে ঢুকে পড়েন।

এরপর ক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ চৌকি ঘিরে ফেলে ও ব্যাপক হট্টগোল সৃষ্টি করে। তারা পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে এবং জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগ তোলে। এই ঘটনার ভিডিও দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।

ঘটনার খবর পেয়ে সাহারানপুরের তিনটি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে। পুলিশ কর্মকর্তারা জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *