ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সুখবর, ওষুধের দাম ৯০% পর্যন্ত কমবে, কোটি কোটি মানুষের উপকার

ডায়াবেটিস সারা বিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। কোটি কোটি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়, যা জীবনভর নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়।
ডায়াবেটিস যে কোনো বয়সের মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে। যাদের শরীরে অতিরিক্ত ওজন থাকে এবং যারা শারীরিকভাবে কম সক্রিয়, তাদের মধ্যে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। এরই মধ্যে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি বড় স্বস্তির খবর এসেছে। সরকার ডায়াবেটিসের ওষুধের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। ওষুধের দাম ৯০% পর্যন্ত কমে যাবে।
এম্পাগ্লিফ্লোজিন ওষুধের দাম হবে মাত্র ৯ টাকা
এখন পর্যন্ত যে ব্লকবাস্টার ওষুধ এম্পাগ্লিফ্লোজিন (Empagliflozin) উচ্চ মূল্যে পাওয়া যেত, তা খুব শিগগিরই দেশীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক কো ম্পা নিগুলো অত্যন্ত কম দামে বিক্রি করবে। এখন পর্যন্ত প্রতি ট্যাবলেটের দাম ছিল ৬০ টাকা, যা ১১ মার্চ থেকে মাত্র ৯ টাকায় পাওয়া যাবে।
৯০% পর্যন্ত কমবে ওষুধের দাম
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ১১ মার্চ জার্মান ওষুধ কো ম্পা নি বোয়েরিঙ্গার ইঙ্গেলহাইম (Boehringer Ingelheim)-এর পেটেন্টের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এরপর ভারতীয় কো ম্পা নিগুলো তাদের নিজস্ব ব্র্যান্ডের অধীনে এই ওষুধ বাজারে আনতে প্রস্তুত। এতে ম্যানকাইন্ড ফার্মা, টরেন্ট, আল্কেম, ডক্টর রেড্ডি এবং লুপিনের মতো বড় ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বিশেষ বিষয় হলো, ম্যানকাইন্ড ফার্মা এই ওষুধটি ইনোভেটর কো ম্পা নির তুলনায় ৯০% কম দামে বিক্রি করবে। ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা ম্যানকাইন্ড ফার্মা, এম্পাগ্লিফ্লোজিন ওষুধটি ৬০ টাকার পরিবর্তে মাত্র ৯ টাকায় বিক্রি করবে। বেশিরভাগ জেনেরিক ওষুধের দাম ৯ থেকে ১৪ টাকার মধ্যে থাকবে।
ভারতে ১০ কোটিরও বেশি ডায়াবেটিস রোগী
ভারতে বর্তমানে ১০ কোটিরও বেশি ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে। এই রোগের ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ দেশে পরিণত হয়েছে। এই মূল্য হ্রাস বিশেষ করে সেইসব রোগীদের জন্য উপকারী হবে, যারা ওষুধ এবং ইনসুলিনের ওপর নির্ভরশীল।
বিভিন্ন বয়সে রক্তে শর্করার স্বাভাবিক মাত্রা কত হওয়া উচিত?
- ফাস্টিং ব্লাড সুগার: ৮০-১০০ mg/dL স্বাভাবিক ধরা হয়।
- প্রিডায়াবেটিস: ১০০-১২৫ mg/dL হলে এটি প্রিডায়াবেটিস হিসেবে বিবেচিত হয়।
- ডায়াবেটিস: ১২৬ mg/dL বা তার বেশি হলে এটি ডায়াবেটিস হিসেবে গণ্য হয়।
ডায়াবেটিস নিশ্চিত করতে HbA1c টেস্ট করা হয়, যা গত তিন মাসের গড় ব্লাড সুগার মাত্রা দেখায়। যদি এই মান ৫.৭% – ৬.৪% থাকে, তবে এটি প্রিডায়াবেটিস হতে পারে। ৬.৫% বা তার বেশি হলে এটি ডায়াবেটিস হিসেবে ধরা হয়।
৪০-৬০ বছর বয়সীদের প্রিডায়াবেটিসের লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত।
ডায়াবেটিস আছে কিনা, কীভাবে বুঝবেন?
✅ অचानक ওজন বৃদ্ধি:
যদি হঠাৎ করে ওজন বাড়তে থাকে, বিশেষ করে পেট ও কোমরের চারপাশে চর্বি জমতে শুরু করে, তবে এটি ইনসুলিন প্রতিরোধের লক্ষণ হতে পারে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
✅ অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা:
যদি বেশি পরিশ্রম না করেও দুর্বল বা ক্লান্ত বোধ করেন, তবে এটি প্রিডায়াবেটিসের লক্ষণ হতে পারে। শরীরে ইনসুলিনের পরিমাণ কমে গেলে এমনটি হতে পারে। যদি এমন কোনো সমস্যা হয়, তবে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।