UPSC সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা (CSE) দেশের অন্যতম কঠিন নিয়োগ পরীক্ষা। এটি পাশ করতে তীক্ষ্ণ মস্তিষ্ক এবং দৃঢ় ইচ্ছাশক্তির প্রয়োজন হয়। এমনই এক অনুপ্রেরণামূলক গল্প হল IAS হেমন্ত পারিকের।

তিনি দেখেছিলেন যে দারিদ্র্য দরিদ্রদের জন্য কতটা অপমানজনক হতে পারে এবং তাই UPSC CSE পাশ করে IAS অফিসার হয়ে নিজের জীবন বদলানোর সিদ্ধান্ত নেন।

IAS হেমন্ত পারিক কে?

রাজস্থানের একটি ছোট গ্রামে এক অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন হেমন্ত পারিক। পরিবারের দারিদ্র্যের কারণে তাকে কঠিন শৈশব পার করতে হয়েছে। পারিকের বাবা ছিলেন স্থানীয় মন্দিরের পুরোহিত, আর তার মা MNREGA প্রকল্পে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন, যাতে সংসারের খরচ চালানো যায়।

এছাড়াও, হেমন্ত পারিকের এক হাতে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, যা তাকে শারীরিক শ্রমের জন্য অযোগ্য করে তোলে। ফলে, তার মা-ই সংসার চালানোর জন্য কাজ করতেন, কারণ তার বাবা ও বোনের শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না।

কীভাবে একটি ঘটনা হেমন্ত পারিকের জীবন বদলে দিল?

যখন তাদের আর্থিক অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে, তখন পরিবারটি ভালো সুযোগের সন্ধানে হরিয়ানায় চলে যায়। সেখানে গিয়েও তার মা MNREGA প্রকল্পে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সারাদিন কঠোর পরিশ্রমের পর সন্ধ্যায় খেতেও কাজ করতেন, যাতে সংসার চলতে পারে।

একদিন, যখন তার মা MNREGA প্রকল্পে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন, তখন এমন একটি ঘটনা ঘটে যা হেমন্ত পারিকের জীবন বদলে দেয়। সেই ঘটনায় তিনি উপলব্ধি করেন যে দারিদ্র্য কতটা অপমানজনক হতে পারে।

একজন স্থানীয় MNREGA ঠিকাদার তার মায়ের দৈনিক ২২০ টাকার মজুরি আটকে রেখেছিল। যখন হেমন্ত সেই টাকা চাইতে যান, তখন সেই ঠিকাদার তাকে ব্যঙ্গ করে বলে, “তুমি কি শহরের কালেক্টর?”

এই একটি বাক্যই হেমন্ত পারিককে IAS অফিসার হওয়ার লক্ষ্যে অগ্রসর করে। তিনি UPSC CSE-কে তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য বানিয়ে নেন।

দারিদ্র্য থেকে IAS পর্যন্ত

হেমন্ত স্মরণ করেন যে কলেজে থাকার সময় তার সিনিয়র ও সহপাঠীরা প্রায়ই তার IAS হওয়ার “শিশুসুলভ স্বপ্ন” নিয়ে ব্যঙ্গ করতেন, কারণ তার ইংরেজি ততটা ভালো ছিল না। কিন্তু ব্যঙ্গবিদ্রূপে তিনি নিরাশ না হয়ে নিজের সংকল্প আরও দৃঢ় করেন এবং কঠোর অধ্যয়নে মনোনিবেশ করেন।

মনোযোগ দিতে পারছেন না পড়াশোনায়? কারণ জানুন এবং ফোকাস ফিরে পাওয়ার উপায় শিখুন!

অ্যাগ্রিকালচারে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি পাওয়ার পর, হেমন্ত UPSC পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করেন। কিন্তু অর্থ ও প্রয়োজনীয় সংস্থানের অভাবে এটি অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে।

তিনি স্কলারশিপের জন্য আবেদন করেছিলেন, কিন্তু পাননি। ফলে তাকে পড়াশোনার জন্য অর্থের ব্যবস্থা করতে নানা উপায় অবলম্বন করতে হয়েছিল। এমনকি রোববার কলেজের মেস বন্ধ থাকার কারণে তাকে অনাহারেও কাটাতে হয়েছে।