সোমবার থেকে সংসদের বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হচ্ছে, যেখানে ‘EPIC’ ইস্যুতে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিরোধী দল ভোটার তালিকার অভিযোগ, মণিপুরে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনা এবং ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে ভারতের অবস্থানের মতো বিষয়গুলি উত্থাপন করার পরিকল্পনা করেছে।

সরকারের লক্ষ্য থাকবে অনুদানের দাবির জন্য সংসদের অনুমোদন পাওয়ার পাশাপাশি বাজেট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা, মণিপুর বাজেটের অনুমোদন পাওয়া এবং ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাস করা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন ঘোষণার জন্য সংসদের অনুমোদনের জন্য একটি বিধিবদ্ধ প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারেন। সোমবার অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন মণিপুরের বাজেটও উপস্থাপন করবেন। ন. বীরেন সিং মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করার পর ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন বলবৎ রয়েছে। বিরোধী দল জানিয়েছে যে তারা ভোটার ফটো আইডেন্টিটি কার্ড (EPIC) নম্বরের নকলের ইস্যুতে সরকারকে কোণঠাসা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তৃণমূল কংগ্রেস এই বিষয়টি উত্থাপনে নেতৃত্ব দেয়, যার পরে নির্বাচন কমিশন বলে যে তারা আগামী তিন মাসের মধ্যে সংশোধনমূলক পদক্ষেপ নেবে। নির্বাচন কমিশন তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি খারিজ করে দিয়েছে যে অন্যান্য রাজ্যের ভোটারদের পশ্চিমবঙ্গে ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য ভোটার তালিকা কারচুপি করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন আরও স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে কিছু ভোটারের ভোটার আইডি নম্বর “একই” থাকতে পারে তবে জনসংখ্যার তথ্য, বিধানসভা নির্বাচনী এলাকা এবং ভোটকেন্দ্রের মতো অন্যান্য বিবরণ ভিন্ন হতে পারে। সোমবার তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করবেন। বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে সংসদের উভয় কক্ষে বিষয়টি উত্থাপনের জন্য তিনি কংগ্রেস, ডিএমকে, শিবসেনা (ইউবিটি) সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলিকেও একত্রিত করেছেন।

একই সাথে, ওয়াকফ সংশোধনী বিলটি শীঘ্রই পাস করা সরকারের অগ্রাধিকার। গত সপ্তাহে ‘ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভ’-এ সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেছিলেন যে সরকার শীঘ্রই ওয়াকফ সংশোধনী বিলটি পাস করতে আগ্রহী কারণ এটি মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেক সমস্যার সমাধান করবে। বিরোধীদের তীব্র বিরোধিতার মধ্যে সংসদের যৌথ কমিটি বিলটির উপর তাদের প্রতিবেদন লোকসভায় উপস্থাপন করে। মণিপুরে নতুন করে সহিংসতা, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পারস্পরিক শুল্ক আরোপের হুমকি, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে রাজনৈতিক হট্টগোলের মতো বিষয়গুলিও সংসদে উত্থাপিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেছেন যে বিরোধী ‘ভারত’ জোটের নেতারা ওয়াকফ বিলের যৌথ বিরোধিতা করার জন্য “বিস্তৃত আলোচনা” করবেন। রমেশ আরও বলেন যে কংগ্রেস নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অনিয়মের বিষয়টি উত্থাপন করতে থাকবে এবং অভিযোগ করবে যে নির্বাচন “আর অবাধ ও সুষ্ঠু ছিল না”।

তিনি বলেন, বাজেট অধিবেশনে কংগ্রেস ট্রাম্পের পারস্পরিক শুল্ক আরোপের হুমকির বিষয়টি উত্থাপন করবে এবং এই হুমকি মোকাবেলায় দ্বিদলীয় সম্মিলিত সংকল্পের আহ্বান জানিয়েছে। সংসদের বাজেট অধিবেশনের প্রথম অংশ ৩১ জানুয়ারী থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে। দ্বিতীয় পর্বটি ১০ মার্চ থেকে শুরু হবে এবং ৪ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে।