হয়ে গেল সিদ্ধান্ত… এই রাজ্য থেকেই হবে বিজেপির জাতীয় সভাপতি, দৌড়ে রয়েছেন এই বর্ষীয়ান নেতা!

ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) শীঘ্রই তাদের নতুন জাতীয় সভাপতি নির্বাচন করতে চলেছে। এই পদে একাধিক নাম আলোচনায় রয়েছে এবং নির্বাচনী পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে, বিশেষ করে বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম এবং দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে, বিজেপি সর্বোত্তম প্রার্থী নির্বাচনের চেষ্টা করছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই সিদ্ধান্তটি একাধিক কারণের ভিত্তিতে গ্রহণ করবেন।
সভাপতি নির্বাচনের মূল কারণসমূহ
১. আঞ্চলিক ভারসাম্য:
এইবার বিজেপির সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান বিষয় হতে পারে আঞ্চলিক ভারসাম্য। দল দক্ষিণ ভারতে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে, তাই দক্ষিণ ভারতের কোনো নেতাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।
২. মহিলা নেতৃত্বের সম্ভাবনা:
এখনও পর্যন্ত বিজেপি কখনোই কোনো মহিলাকে জাতীয় সভাপতি করেনি। নারী সংরক্ষণ বিলের পাস হওয়া এবং নারী ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, তাই এবার বিজেপি কোনো মহিলাকে সভাপতি করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করতে পারে।
৩. সংগঠনের অভিজ্ঞতা ও নিষ্ঠা:
প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং অমিত শাহ এমন নেতাকে বেছে নিতে পারেন, যিনি দলের সংগঠনে গভীরভাবে কাজ করেছেন এবং নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
৪. আরএসএসের অনুমোদন:
বিজেপির জাতীয় সভাপতি নির্বাচনে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই অনুযায়ী এমন কাউকে নির্বাচিত করা হতে পারে, যিনি সংঘের সমর্থন পাবেন।
বিজেপির সভাপতি পদের সম্ভাব্য প্রার্থী
১. জি কিশান রেড্ডি (দক্ষিণ ভারতের শক্তিশালী দাবিদার)
জি কিশান রেড্ডি তেলেঙ্গানা থেকে আসেন এবং দলের একজন বর্ষীয়ান নেতা। তিনি বিজেপির যুব মোর্চা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। মোদি ও শাহের সমর্থনও তার প্রতি রয়েছে, তাই তাকে দৌড়ের শীর্ষে মনে করা হচ্ছে।
২. ধর্মেন্দ্র প্রধান (ওড়িশার প্রভাবশালী নেতা)
ধর্মেন্দ্র প্রধান ওড়িশার নেতা এবং বিজেপির কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি সংগঠনগতভাবে খুবই শক্তিশালী এবং বিভিন্ন রাজ্যের নির্বাচনী ব্যবস্থাপনায় দক্ষ। পূর্ব ভারত থেকে এখনও পর্যন্ত কোনো সভাপতি আসেননি, তাই তিনি শক্তিশালী দাবিদার হতে পারেন।
৩. ভূপেন্দ্র যাদব (সুবিজ্ঞ কৌশলী)
ভূপেন্দ্র যাদবকে বিজেপির “চাণক্য” বলা হয়। তিনি বিভিন্ন নির্বাচনে দলকে জয়ী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি রাজস্থানের বাসিন্দা এবং সংগঠনে তার দৃঢ় দখল রয়েছে।
৪. ডি পুরন্দেশ্বরী (মহিলা নেতৃত্বের সম্ভাব্য প্রার্থী)
ডি পুরন্দেশ্বরী অন্ধ্রপ্রদেশের একজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তাকে ‘দক্ষিণের সুষমা স্বরাজ’ বলা হয়। যদি বিজেপি এবার কোনো মহিলাকে সভাপতি করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তিনি অন্যতম প্রধান প্রার্থী হতে পারেন।
৫. বনাথি শ্রীনিবাসন (তামিলনাড়ুর সম্ভাব্য প্রার্থী)
বনাথি শ্রীনিবাসন তামিলনাড়ুর বিজেপি বিধায়ক এবং মহিলা মোর্চার প্রধান। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি অভিনেতা কমল হাসানকে পরাজিত করে আলোচনায় আসেন। যদি বিজেপি মহিলা নেতৃত্ব বেছে নেয়, তবে তিনি শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন।
৬. মনোহর লাল খট্টর (অভিজ্ঞ নেতা)
হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বর্তমান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোহর লাল খট্টরও এই দৌড়ে রয়েছেন। তার আরএসএসের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে এবং তাকে মোদির ঘনিষ্ঠ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
৭. শিবরাজ সিং চৌহান (অভিজ্ঞ ও জনপ্রিয় নেতা)
শিবরাজ সিং চৌহান মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং বর্তমান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সংগঠনের উপর তার শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এবং তিনি জনগণের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। তিনি আরএসএসেরও ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
বিজেপির সভাপতি নির্বাচনের সময়সীমা
বিজেপি খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কারণ, আসন্ন মাসগুলিতে একাধিক রাজ্যে নির্বাচন রয়েছে, তাই দল এমন একজন নেতাকে সভাপতি বানাতে চায়, যিনি সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে পারেন এবং আসন্ন নির্বাচনে দলকে জয় এনে দিতে পারেন।