আইটিআর দাখিলকারীদের দুই-তৃতীয়াংশ কর প্রদান করেনি

আইটিআর দাখিলকারীদের দুই-তৃতীয়াংশ কর প্রদান করেনি

দেশে আয়কর রিটার্ন (ITR) দাখিলকারীদের সংখ্যা প্রতি বছর বাড়ছে। তবে, আয়কর সংগ্রহ সেই অনুপাতে বৃদ্ধি পাচ্ছে না, যতটা ITR দাখিলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এর প্রধান কারণ হলো বেশিরভাগ রিটার্ন দাখিলকারীদের কর দায় শূন্য থাকা। আয়কর বিভাগের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুসারে, অর্থবছর ২০২৪-২৫ (৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত) সময়ে দাখিল করা মোট ৮.৪ কোটি আয়কর রিটার্নের মধ্যে ৫.৫৮ কোটি ফাইলারের কর দায় শূন্য ছিল। অর্থাৎ, মাত্র এক-তৃতীয়াংশ করদাতা সরকারকে কর প্রদান করেছেন।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আয়কর রিটার্ন দাখিলকারীদের মধ্যে কর প্রদানকারীদের হার ২০২০-২১ সালে ২৭.৮৮% ছিল, যা ২০২৪-২৫ সালে বেড়ে ৩৩.৫৫% হয়েছে। ২০১৯-২০ সালে এই হার ছিল ৫৫%, যখন ৬.৪৭ কোটি ব্যক্তি রিটার্ন দাখিল করেছিলেন। এরপর থেকে এই শতাংশ দ্রুত হ্রাস পেতে থাকে। এর প্রধান কারণ ছিল কোভিড-১৯ মহামারী ও তার সঙ্গে সম্পর্কিত অর্থনৈতিক প্রভাব। ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ অর্থবছরে করোনা মহামারী ও লকডাউনের কারণে করদাতাদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তবে, পরবর্তী বছরগুলোতে সরকার আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রক্রিয়া সহজ করা, করদাতাদের রিটার্ন দাখিলের জন্য উৎসাহিত করা এবং প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর ফলে কর পরিপালন (tax compliance) বৃদ্ধি পেয়েছে।

কর সংগ্রহ এবং করদাতা ভিত্তির বৃদ্ধি

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অর্থবছর ২০২৫-এর প্রথম নয় মাসে (১ এপ্রিল ২০২৪ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত) মোট ৮,৩৯,৭৩,৪১৬ জন ব্যক্তি আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন। এর মধ্যে ৫,৫৭,৯৫,৩৯১ জনের কর দায় শূন্য ছিল। ফলে, মাত্র ২,৮১,৭৮,০২৫ জন প্রকৃতপক্ষে কর প্রদান করেছেন।

কর বিশেষজ্ঞদের মতে, করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য সরকার বিভিন্ন নতুন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আয়কর বিভাগ ফর্ম ২৬এএস (Form 26AS) এবং নির্দিষ্ট আর্থিক লেনদেন (SFT) ডেটার মাধ্যমে করদাতাদের তাদের আর্থিক লেনদেনের পূর্ণ বিবরণ প্রদান করছে। এতে করদাতারা তাদের প্রকৃত আয় সঠিকভাবে জানাতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

বিদেশি সম্পত্তির ঘোষণায় বৃদ্ধি

কেন্দ্রীয় প্রত্যক্ষ কর পর্ষদ (CBDT) সম্প্রতি চালু করা একটি প্রচারণার আওতায় প্রায় ৩০,১৬০ জন করদাতা ₹২৯,০০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের বিদেশি সম্পত্তির ঘোষণা করেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার কর পরিপালন সহজ করা, প্রযুক্তিগত উন্নতি আনা এবং করদাতাদের রিটার্ন দাখিলের জন্য উৎসাহিত করার ফলে আগামী বছরগুলোতে আয়কর রিটার্ন দাখিলকারীদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *