এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে কেন যায় ডায়াবেটিস, কী সম্পর্ক জিন ও ডায়াবেটিসের মধ্যে?

এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে কেন যায় ডায়াবেটিস, কী সম্পর্ক জিন ও ডায়াবেটিসের মধ্যে?

ভারতে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১০ কোটির বেশি। এই সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়ছে। কম বয়সেও মানুষ ডায়াবেটিসের শিকার হচ্ছে। এর প্রধান কারণ হলো খারাপ জীবনযাপন এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। ডায়াবেটিস দুই ধরনের হয়ে থাকে।

এর মধ্যে একটিকে বলা হয় টাইপ-১ এবং অন্যটি টাইপ-২। টাইপ-২ ডায়াবেটিস মূলত অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, খারাপ জীবনযাপন ও মানসিক চাপের কারণে হয়, আর টাইপ-১ ডায়াবেটিস জেনেটিক হয়ে থাকে। এটি এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে চলে যেতে পারে। কিন্তু কেন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে যায়? জিন ও ডায়াবেটিসের মধ্যে কী সম্পর্ক রয়েছে? এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত জানি।

ডায়াবেটিস ও জিনের সম্পর্ক

ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে যেতে পারে, এবং এর প্রধান কারণ হলো জিন। আমাদের শরীরে ইনসুলিন উৎপাদনের জন্য জিন দায়ী। কিন্তু যখন জিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে, তখন শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বিঘ্নিত হয়, যার ফলে ডায়াবেটিস হতে পারে।

দিল্লির শ্রী বালাজি অ্যাকশন মেডিকেল ইনস্টিটিউট-এর প্রধান পরামর্শক, এন্ডোক্রাইনোলজি ও ওবেসিটি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ড. সাকেত কান্ত বলেন, জিন ও ডায়াবেটিসের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

জিন পরিবর্তনের ফলে ডায়াবেটিস হয়

ড. সাকেত কান্ত জানান, যদি কোনো ব্যক্তির জিনে পরিবর্তন ঘটে, তবে তা তাকে ডায়াবেটিসের প্রতি সংবেদনশীল করে তুলতে পারে। তবে এটি কেবল টাইপ-১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ঘটে। অন্যদিকে, টাইপ-২ ডায়াবেটিস মূলত খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম ও মানসিক চাপের কারণে হয়ে থাকে।

গত কয়েক বছরে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রধান কারণ হলো জীবনযাত্রার পরিবর্তন। আগে টাইপ-২ ডায়াবেটিস সাধারণত ৫০ বছর বয়সের পরে দেখা যেত, কিন্তু এখন এটি ৩০ বছর বয়সেই দেখা যাচ্ছে।

ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার উপায়

যে ডায়াবেটিস জিনের কারণে হয়, তা প্রতিরোধ করা কঠিন। তবে টাইপ-২ ডায়াবেটিস সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব। এর জন্য কিছু বিষয় মেনে চলা প্রয়োজন:

  • সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা
  • খাদ্যতালিকায় প্রোটিন ও ভিটামিন অন্তর্ভুক্ত করা
  • চিনি ও অতিরিক্ত ময়দাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা
  • প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা
  • মানসিক চাপ কমানো
  • প্রতিদিন যোগব্যায়াম করা

এই নিয়ম মেনে চললে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *