আমেরিকা -এর ট্রেড ওয়ার থেকে হাহাকার! মন্দার আশঙ্কা, ভারতীয় শেয়ার বাজারের মুড কেমন থাকবে?

নাসডাক-এ ৭২৭ পয়েন্ট বা ৪% এর বিশাল পতন রেকর্ড করা হয়েছে। এটি আতঙ্ক তৈরি করেছে যে ট্রেড ওয়ার অর্থনৈতিক মন্দার দিকে ঠেলে দিতে পারে। ওয়াল স্ট্রিটের এই বড় পতনের প্রভাব ভারতীয় শেয়ার বাজারেও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ট্রেড ওয়ার-এর কারণে মার্কিন শেয়ার বাজারে ধস

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ট্রেড ওয়ার-এ জোর দেওয়ার পর মার্কিন শেয়ার বাজারে ব্যাপক পতন হয়েছে। সোমবার নাসডাক ৭২৭ পয়েন্ট (৪%) হ্রাস পেয়েছে। এর ফলে অর্থনৈতিক মন্দার ভয় আরও বেড়েছে। ওয়াল স্ট্রিটের এই বড় পতনের প্রভাব ভারতীয় শেয়ার বাজারেও পড়তে পারে। আজ ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।

মন্দার বিষয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য

S&P 500 – ১৫৫.৬৪ পয়েন্ট (-২.৭০%) কমে ৫,৬১৪.৫৬-এ বন্ধ হয়েছে।
ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ – ৮৯০.০১ পয়েন্ট (-২.০৮%) কমে ৪১,৯১১.৭১-এ বন্ধ হয়েছে।
বন্ড মার্কেটেও পতন – ১০ বছরের ট্রেজারি ইল্ড ৪.৩২% থেকে কমে ৪.২১%-এ নেমে এসেছে।

সপ্তাহের শেষে একটি সাক্ষাৎকারে যখন ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ২০২৫ সালে কি মন্দা আসতে পারে? তিনি উত্তর দেন, “আমি এমন ভবিষ্যদ্বাণী করতে পছন্দ করি না, তবে আমরা এখন একটি পরিবর্তনশীল সময়ের মধ্যে রয়েছি। আমেরিকা আবার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে এগোচ্ছে, এবং এটি সময় সাপেক্ষ।”
ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বলেছেন, “মার্কিন অর্থনীতি শক্তিশালী, তবে সতর্কতা প্রয়োজন।”

বিনিয়োগকারীদের বিশাল ক্ষতি – কোন শেয়ারে পতন?

Nvidia – ০.৭০% পতন।
Meta Platforms এবং Amazon – যথাক্রমে ০.৪৪% ও ০.৩৫% কমেছে।
Apple স্টক – ০.৬০% হ্রাস।
Elon Musk-এর Tesla – ০.৮১% পতন (UBS প্রথম ত্রৈমাসিকের ডেলিভারি পূর্বাভাস কমিয়েছে)।
JP Morgan Chase এবং Goldman Sachs – যথাক্রমে ০.২৫% এবং ০.০৬% বেড়েছে।

ক্রিপ্টো মার্কেটেও ব্যাপক পতন

Bitcoin-এর পতনের প্রভাব ক্রিপ্টো শেয়ারগুলিতেও পড়েছে।
MicroStrategy – ১১.৭% পতন।
Coinbase – ১০.২% পতন।
Riot Platforms – ৫.২% হ্রাস।

সোনার ও রূপার দামে পতন

স্পট গোল্ড – ০.২% কমে ২,৯০৫.০৫ ডলার প্রতি আউন্স।
আমেরিকান গোল্ড ফিউচারস – ২,৯১১.৬০ ডলারে স্থিতিশীল।
হাজির রূপা – ৩২.৫৫ ডলার প্রতি আউন্সে স্থিতিশীল।

কাঁচা তেলের দামে পতন

বিশ্বের দুটি প্রধান অর্থনীতির দুর্বলতার কারণে কাঁচা তেলের দাম কমেছে।
West Texas Intermediate (WTI) crude oil – ৬৭ ডলার প্রতি ব্যারেলের নিচে।
এই বছর জানুয়ারি থেকে ১৫% এরও বেশি পতন হয়েছে।

মার্কিন শেয়ার বাজারে বিশাল পতন, ভারতীয় বাজারে প্রভাব?

Dow Jones – ৪৪৬ পয়েন্ট (-১%) কমেছে।
S&P 500 ফিউচারস – ১.৩% কমেছে।
Nasdaq – ৬৭৩ পয়েন্ট কমেছে।

হঠাৎ শেয়ার বাজারে বড় পতনের কারণ?

বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অর্থনৈতিক ডেটা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।
শুল্ক (Tariffs), মুদ্রাস্ফীতি (Inflation) এবং বিশ্বব্যাপী মন্দার ভয়ে বাজারে ব্যাপক বিক্রি চলছে।
যদি মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে, তবে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমাতে দ্বিধাগ্রস্ত হতে পারে, যা শেয়ার বাজারের জন্য নেতিবাচক হতে পারে।
মুদ্রাস্ফীতির ভয়ে বিনিয়োগকারীরা দ্বিধাগ্রস্ত রয়েছেন, তাই বাজারে অস্থিরতা থাকতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্য কবে প্রকাশিত হবে?

এই সপ্তাহে কিছু বড় অর্থনৈতিক তথ্য প্রকাশিত হবে –

বুধবার – ফেব্রুয়ারি মাসের ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) তথ্য।
বৃহস্পতিবার – প্রযোজক মূল্য সূচক (PPI) প্রতিবেদন।

ভারতীয় শেয়ার বাজারের ওপর প্রভাব কেমন হবে?

মার্কিন বাজারের বড় পতনের ফলে ভারতীয় শেয়ার বাজারেও চাপ পড়তে পারে।
FII (Foreign Institutional Investors) বিক্রয় বাড়াতে পারে, যার প্রভাব নিফটি (Nifty) এবং সেনসেক্স (Sensex)-এ দেখা যেতে পারে।
মিডক্যাপ এবং স্মলক্যাপ শেয়ারগুলিতে বেশি দুর্বলতা দেখা যেতে পারে।
যদি মার্কিন মন্দার লক্ষণ বাড়তে থাকে, তবে ভারতীয় বাজারও নেতিবাচক চাপে পড়তে পারে।

একঝলক