ভারতে অবৈধভাবে বসবাসকারী বিদেশী নাগরিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) লোকসভায় অভিবাসন ও বিদেশী বিল ২০২৫ পেশ করার ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, যার আওতায় ভারতে অবৈধভাবে বসবাসকারী বিদেশী নাগরিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বিলটি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্বের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে এবং এটি ভারতে বিদেশীদের প্রবেশ এবং অবৈধভাবে থাকার উপর নতুন কঠোর নিয়ম আরোপ করবে।

এই নতুন বিলে কী থাকবে?

অভিবাসন ও বিদেশী বিল ২০২৫ ভারতের নিরাপত্তা এবং দেশের সার্বভৌমত্বকে অগ্রাধিকার দেয়। এর আওতায়, ভারতে অবৈধভাবে বসবাসকারী বিদেশী নাগরিকদের ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি কোনও ব্যক্তি ভারতে অবৈধভাবে বসবাস করে দেশের জন্য হুমকি হয়ে ওঠেন বা জাল নথির মাধ্যমে নাগরিকত্ব অর্জন করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অধিকন্তু, যদি কোনও বিদেশী নাগরিকের প্রবেশ অন্য কোনও দেশের সাথে ভারতের সম্পর্ককে প্রভাবিত করে, তবে তাকে ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।

চারটি পুরনো আইন বাতিল করা হবে

এই নতুন বিলটি কার্যকর হওয়ার পর, ভারতে চারটি প্রধান পুরনো আইন বাতিল হয়ে যাবে। এর মধ্যে রয়েছে:

বিদেশী আইন ১৯৪৬
পাসপোর্ট আইন ১৯২০
বিদেশীদের নিবন্ধন আইন ১৯৩৯
অভিবাসন আইন ২০০০
এই আইনগুলি বিলুপ্ত করা হবে, এবং একটি নতুন আইন কার্যকর হবে, যেখানে অভিবাসন কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত এবং বাধ্যতামূলক বলে বিবেচিত হবে। আগেও, কর্তৃপক্ষের কাছে বিদেশী নাগরিকদের ভারতে প্রবেশে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা ছিল, কিন্তু এই ক্ষমতা স্পষ্টতই আইনি ছিল না। এখন এটি লিখিতভাবে স্পষ্ট করা হয়েছে।

জাল নথি এবং পাসপোর্টের শাস্তি

ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ফরেনার্স বিল ২০২৫-এ জাল পাসপোর্ট বা নথি নিয়ে ভারতে প্রবেশের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। যদি কোনও বিদেশী নাগরিক বৈধ পাসপোর্ট ছাড়া বা জাল নথিপত্রের মাধ্যমে ভারতে প্রবেশ করেন, তাহলে তাকে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যেতে পারে। যদি কেউ জালিয়াতি করে পাসপোর্ট তৈরি করে পরবর্তীতে ভারতে প্রবেশ করে, তাহলে তাকে ২ থেকে ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যেতে পারে।

ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার শাস্তি

এই বিলে এটাও স্পষ্ট করা হয়েছে যে, যদি কোনও বিদেশী নাগরিক তার ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও ভারতে অবৈধভাবে বসবাস করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ধরনের ক্ষেত্রে, ব্যক্তিকে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যেতে পারে।