উত্তরাখণ্ড পুলিশের দল উত্তরপ্রদেশে প্রবেশ করল: ৭০টি গাড়ি, ৩০০ জন জওয়ান, বাড়িঘরে ভাঙচুর, ১৬ জনকে গ্রেপ্তার

সোমবার ভোরে, উত্তরপ্রদেশের বरेলি জেলার ফতেহগঞ্জ পশ্চিমী ও আগরাস গ্রামে উত্তরাখণ্ড পুলিশ মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে বড় অভিযান চালায়। এই অভিযানে উদ্যম সিং নগরের এসএসপি মণিকান্ত মিশ্রের কঠোর পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়।
৭০টি গাড়ির কনভয় ও ৩০০ পুলিশ সদস্যের দল তিনটি এলাকায় হানা দেয়। অভিযানে এসপি ক্রাইম নिहारিকা তোমর, এসপি সিটি রুদ্রপুর, এসপি কাশীপুর এবং বেশ কয়েকজন সিও উপস্থিত ছিলেন। তবে, তল্লাশি চলাকালীন কোনো মাদকদ্রব্য উদ্ধার হয়নি।
এই অভিযানে পুলিশ ১৬ জনকে আটক করে এবং উত্তরাখণ্ডে নিয়ে যায়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ১৫ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়, কারণ তাদের মাদক পাচারের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। তবে আসিফ হুসেইন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুল ভট্টা থানায় এনডিপিএস আইনের একটি মামলায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। এরপর তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মহিলাদের প্রতি দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ
স্থানীয় বাসিন্দারা উত্তরাখণ্ড পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তোলেন। তাদের দাবি, পুলিশ বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়েছে, মহিলাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে এবং অনেক বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরা খুলে ফেলেছে। শুধু তাই নয়, পুলিশ ডিভিআর-ও নিয়ে যায়, যাতে অভিযানের কোনো প্রমাণ না থাকে। গ্রেপ্তারকৃতদের পরিবারের সদস্যরা তাদের মুক্তির জন্য সারাদিন ছুটোছুটি করেন। অবশেষে সন্ধ্যায় যখন ১৫ জন মুক্তি পায়, তখন স্বজনরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন এবং পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করেন।
পুলিশ থেকে বাঁচতে ছাদ থেকে লাফ, যুবকের পা ভাঙল
পুলিশি অভিযানের সময়, মোনিস নামের এক যুবক পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে ছাদ থেকে লাফ দেয়, যার ফলে তার পা ভেঙে যায়। জানা গেছে, মোনিস এক কুখ্যাত স্ম্যাক পাচারকারীর আত্মীয়। আহত মোনিসকে তার পরিবার হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এই ঘটনার পর পুরো এলাকায় আতঙ্ক ও ক্ষোভের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
উত্তরাখণ্ড ও বरेলি পুলিশের ব্যাখ্যা
এই অভিযানের পর উত্তরাখণ্ড এবং বরেলির এসএসপি নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। উদ্যম সিং নগরের এসএসপি মণিকান্ত মিশ্র জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মাদক সংক্রান্ত মামলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আরও পাচারকারীদের তথ্যও পাওয়া গেছে এবং শিগগিরই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, বরেলি এসএসপি অনুরাগ আর্য বলেন, উত্তরাখণ্ড পুলিশ ফতেহগঞ্জ পশ্চিমীতে হানা দিয়ে ১৬ জনকে আটক করেছিল, কিন্তু তাদের বাড়ি থেকে কোনো মাদকদ্রব্য উদ্ধার হয়নি। তদন্তের পর ১৫ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং একজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দায়ের করা হয়েছে।
এই বড় অভিযানের পর ফতেহগঞ্জ পশ্চিমী ও আগরাস গ্রামে আতঙ্ক ও ক্ষোভের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। হঠাৎ রাতের অন্ধকারে এত বিপুল সংখ্যক পুলিশ বাহিনী উপস্থিত হয়ে কোনো প্রমাণ ছাড়াই তাণ্ডব চালানোয় গ্রামবাসীরা ক্ষুব্ধ। তাদের অভিযোগ, পুলিশ নিরপরাধ লোকদের তুলে নিয়ে গিয়ে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে।
এদিকে, পুরো ঘটনার রিপোর্ট বারেলি এসএসপি রাজ্য প্রশাসনের কাছে পাঠিয়েছেন।