সৌদিতে স্বামী তার বন্ধুকে ধর্ষণ করত, ভিডিও কলে লাইভ দেখত, বন্ধুর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিত!

সৌদিতে স্বামী তার বন্ধুকে ধর্ষণ করত, ভিডিও কলে লাইভ দেখত, বন্ধুর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিত!

উত্তর প্রদেশের বুলন্দশহর জেলা থেকে এমন একটি ঘটনা সামনে এসেছে, যা সকলকে অবাক করে দিয়েছে। এখানে ৩৫ বছর বয়সী এক মহিলা তার স্বামী এবং তার বন্ধুর বিরুদ্ধে অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ করেছেন। মহিলাটি জানিয়েছেন যে তার স্বামীর বন্ধু গত তিন বছর ধরে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে আসছে।

এই সবকিছু এত ভয়াবহভাবে ঘটছে যে সৌদি আরবে বসবাসকারী তার স্বামীও তা জানেন। মহিলাটি বলেন যে তার স্বামী কেবল এটি সম্পর্কে অবগত নন, বরং তিনি এই ঘটনার ভিডিওও দেখেন এবং বিনিময়ে তার বন্ধুর কাছ থেকে টাকা নেন। এই বিষয়টি সমাজে নতুন বিতর্কের সূত্রপাত করেছে যে, সম্পর্কের পবিত্রতা ও বিশ্বাস কীভাবে এভাবে ভেঙে ফেলা যায়।

তিন বছর ধরে নির্যাতন চলছিল।

মহিলার এই যন্ত্রণার কথা শুনে যে কেউ কেঁপে উঠবে। তিনি বলেন যে এই ঘটনাক্রম গত তিন বছর ধরে চলে আসছে। তার স্বামী বিদেশে থাকেন এবং তিনি তার শ্বশুরবাড়িতে একা থাকতেন। এই সময়ে, তার স্বামীর বন্ধু তাদের বাড়িতে আসা শুরু করে। প্রথমদিকে সে স্বাভাবিকভাবেই তার সাথে দেখা করত, কিন্তু ধীরে ধীরে সে মহিলার উপর চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করে। মহিলার অভিযোগ, তিনি এর বিরুদ্ধে অনেকবার প্রতিবাদ করেছিলেন, কিন্তু ভয় এবং বাধ্যবাধকতার কারণে তিনি চুপ ছিলেন। সে জানতও না যে তার শোষণ কেবল তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, তার স্বামীও এই নোংরা খেলায় জড়িত ছিল। যখন সে সত্যটা জানতে পারল, তখন তার পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেল।

স্বামী ভিডিও দেখত আর টাকা নিত

মহিলার মতে, তার স্বামী সৌদি আরবে বসে ছিলেন এবং এই পুরো ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি জানান যে শোষণের পর প্রতিবারই তার স্বামীর বন্ধু তার একটি ভিডিও তৈরি করে তার স্বামীর কাছে পাঠাত। অবাক করার বিষয় হলো, এই ভিডিওগুলো দেখার পর তার স্বামী তার বন্ধুকে এর জন্য টাকা দিতেন। কেউ তার নিজের স্ত্রীর সাথে এত জঘন্য আচরণ করতে পারে তা বিশ্বাস করা কঠিন। মহিলাটি বলেন যে, একদিন ফোনে তার স্বামীর সাথে কথা বলার সময় তিনি এই বিষয়টি জানতে পারেন। তার স্বামীর উত্তর থেকে তার কাছে স্পষ্ট হয়ে গেল যে সে এই সবকিছুতে সমান অংশীদার।

গর্ভাবস্থার কারণে বর্ধিত অসুবিধা

পুরো ঘটনাটি আরও গুরুতর মোড় নেয় যখন মহিলা জানতে পারেন যে তিনি এক মাসের গর্ভবতী। এই খবর তাকে আরও বেশি বিচলিত করে। সে বলল যে সে এখন এই পরিস্থিতিতে আছে এবং পরবর্তীতে কী করবে তা জানে না। একদিকে, তার উপর যে শোষণ চলছে, অন্যদিকে, তার গর্ভাবস্থার খবর তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙে দিয়েছে। সে তার স্বামী এবং তার বন্ধুকে এতটাই ভয় পায় যে, সে এমনকি তার জীবনও ঝুঁকির মধ্যে পড়ে বলে মনে করে। মহিলাটি বলেন যে তিনি এখন এই নিপীড়ন থেকে মুক্তি পেতে চান এবং এর জন্য তিনি সাহস সঞ্চয় করে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন।

পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের

এই বিষয়ে বুলন্দশহর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই মহিলা। তিনি তার স্বামী এবং তার বন্ধুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ এই বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে নিয়েছে এবং তদন্ত শুরু করেছে। মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ উভয় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। বর্তমানে, এটি কতদিন ধরে চলছে এবং এর সাথে আরও কারা জড়িত থাকতে পারে তা তদন্ত করা হচ্ছে। পুলিশ মহিলাকে আশ্বস্ত করেছে যে তিনি অবশ্যই ন্যায়বিচার পাবেন। এই ঘটনাটি পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এবং মানুষ আলোচনা করছে কিভাবে কেউ এত নিচে নেমে যেতে পারে।

সমাজে উত্থাপিত প্রশ্ন

এই ঘটনা সমাজে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। মানুষ ভাবতে বাধ্য হয় যে সম্পর্কের কি কোন অর্থ অবশিষ্ট আছে? কেউই মেনে নিতে পারে না যে একজন স্বামী, যার তার স্ত্রীকে রক্ষা করার কথা, সে নিজেই তাকে শোষণে জড়িয়ে পড়বে। এই ঘটনাটি আরও দেখিয়েছে যে প্রযুক্তির অপব্যবহার কতটা বিপজ্জনক হতে পারে। ভিডিও তৈরি করে দূরে বসে থাকা কাউকে পাঠানো এবং তা থেকে অর্থ উপার্জন করা, আজকের সময়ে এই সবকিছুই একটি নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ এখন দাবি করছে যে এই ধরনের ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, যাতে আর কেউ এটি করার সাহস না করে।

ভুক্তভোগীর জীবনের উপর প্রভাব

মহিলার জীবন এখন সম্পূর্ণ বদলে গেছে। যে ঘরটি তার ভরসা ছিল, সেটি এখন তার জন্য দুঃখের পাহাড় হয়ে উঠেছে। স্বামীর দ্বারা কেবল বিশ্বাসঘাতকতাই হয়নি, তিনি সমাজের চোখকেও ভয় পান। গর্ভাবস্থার কারণে তার সমস্যা আরও বেড়েছে। সে এখন একাই এই যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং তার ভবিষ্যৎ সন্তানকে সে কী উত্তর দেবে তা জানে না। এই ঘটনা তাকে এতটাই ভেঙে দিয়েছে যে সে এখন ন্যায়বিচারের আশায় বেঁচে আছে। পুলিশের পদক্ষেপ এবং সমাজের সমর্থনই এখন তার একমাত্র ভরসা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *