পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫-এর আয়োজক হওয়ার কারণে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন: প্রকাশিত হল চমকপ্রদ পরিসংখ্যান

পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫-এর আয়োজক হওয়ার কারণে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন: প্রকাশিত হল চমকপ্রদ পরিসংখ্যান

পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫-এর আয়োজন থেকে বিশাল মুনাফার আশা করেছিল, কিন্তু ভারতের সাফল্য তাদের বড় ক্ষতির মুখে ফেলেছে। এখানে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে কীভাবে দুবাইয়ে ভারতের ম্যাচ আয়োজনের কারণে পাকিস্তানের আর্থিক অবস্থার উপর প্রভাব পড়েছে।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫:

সম্প্রতি, ভারতীয় দল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫-এর শিরোপা জিতে ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস সৃষ্টি করেছে। মজার ব্যাপার হলো, পাকিস্তান আয়োজক দেশ হওয়া সত্ত্বেও ভারতীয় দল পাকিস্তানের মাটিতে পা না রেখেই শিরোপা জিতে নিয়েছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (PCB) আশা করেছিল যে এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি তাদের সমস্যা কমাবে এবং দেশে ক্রিকেটকে আরও জনপ্রিয় করবে। তবে তাদের সব আশা ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।

অন্য সব দেশ এই টুর্নামেন্টে অংশ নিলেও ভারত পাকিস্তানে খেলতে না আসায় দেশটি বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। শুধু তাই নয়, পাকিস্তান দলও বাজে পারফরম্যান্স দেখিয়েছে এবং লিগ পর্বেই বাদ পড়ে গেছে। তারা এমন এক দলের কাছে হেরেছে, যাদের বিরুদ্ধে তারা হারতে চায়নি, আর সেই দল হলো ভারত। এই হারের পর পাকিস্তান দলের কঠোর সমালোচনা হয়েছে তাদের নিজস্ব সমর্থকদের কাছ থেকে।

শেষ পর্যন্ত, ভারত পাকিস্তানকে সেমিফাইনাল ও ফাইনালের আয়োজন থেকে বঞ্চিত করেছে, যার ফলে তাদের ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে।

পাকিস্তান পেল ২৯ বছর পর আইসিসি টুর্নামেন্টের আয়োজনের সুযোগ, তবু লভ্যাংশ পেল না

বাস্তবে, পাকিস্তান ২৯ বছর পর কোনো আইসিসি টুর্নামেন্টের আয়োজক হওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় দলের কারণে পুরো টুর্নামেন্ট পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হতে পারেনি।

ভারত-পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণে ক্রিকেটীয় সম্পর্কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই কারণেই ভারত সরকার দলকে পাকিস্তানে যেতে অনুমতি দেয়নি। ফলে ভারত হাইব্রিড মডেলের অধীনে টুর্নামেন্টে অংশ নেয়। অর্থাৎ, অন্য দেশগুলোর সব ম্যাচ পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হলেও, ভারতীয় দলের ম্যাচগুলো দুবাইয়ে আয়োজন করা হয়। ভারতের লিগ পর্ব, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল ম্যাচ দুবাইতে হওয়ায় পাকিস্তান বিশাল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

ভারতের অনুপস্থিতির কারণে পাকিস্তানের ক্ষতি

ভারতীয় ক্রিকেট ভক্তরা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে আছে। যেখানে আইসিসি টুর্নামেন্ট হয়, সেখানে ভারতীয় সমর্থকরা বিপুল পরিমাণে উপস্থিত থেকে টিকিট কেনে ও অন্যান্য খরচ করে, যা স্থানীয় অর্থনীতিকে চাঙা করে।

পাকিস্তানও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজনে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছিল, কিন্তু ভারত না আসার ফলে তাদের আশার গুড়ে বালি পড়ে। আরও খারাপ হলো, পাকিস্তান দল লিগ পর্বেই বাদ পড়ে যাওয়ায় বাকি ম্যাচগুলোতে দর্শক উপস্থিতি একেবারে কমে যায়। ফলে টিকিট বিক্রির আশা ব্যর্থ হয়, এবং পাকিস্তান ও তাদের ক্রিকেট বোর্ড ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে।

পাকিস্তান কত টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে?

১৯৯৬ সালের পর থেকে পাকিস্তানে কোনো আইসিসি টুর্নামেন্ট হয়নি। তাই তারা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ থেকে বড় অঙ্কের আয়ের প্রত্যাশা করেছিল।

এই টুর্নামেন্টের জন্য করাচি, লাহোর এবং রাওয়ালপিন্ডির স্টেডিয়ামগুলো পুনর্নির্মাণ করা হয় এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়। পাকিস্তানের কিছু মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য প্রায় ৬৪ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৫৫৮ কোটি টাকা) খরচ করা হয়। পাশাপাশি, আতিথেয়তা ও পরিবহন বাবদ আরও ৯ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়। তবে এই বিশাল বিনিয়োগের পরও পাকিস্তান লাভের মুখ দেখেনি, বরং বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

পাকিস্তানের ম্যাচের পারফরম্যান্স ও ক্ষতির পরিমাণ

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫-এ পাকিস্তান দল তাদের দেশের মাটিতে মাত্র দুটি ম্যাচ খেলেছে। প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বড় পরাজয় হয়, আর দ্বিতীয় ম্যাচে ভারত তাদের পরাজিত করে।

এই দুই হারের পর পাকিস্তান সেমিফাইনালেও পৌঁছাতে পারেনি। বাংলাদেশ বিরুদ্ধে তাদের শেষ ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে বাতিল হয়ে যায়। এরপর পাকিস্তানের স্টেডিয়ামগুলো ফাঁকা হয়ে পড়ে।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ আয়োজনের জন্য পাকিস্তান আইসিসি থেকে ৬ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৫২ কোটি টাকা) পাবে। কিন্তু দর্শকদের কম উপস্থিতির কারণে টিকিট বিক্রি খুবই কম হয়েছে, ফলে মোট আয় ব্যয়ের তুলনায় অনেক কম হয়েছে।

একটি আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫-এর আয়োজনের ফলে পাকিস্তান প্রায় ১৯৫ কোটি টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *