পাকিস্তানের ১৫০ সেনাকে হত্যা, মামা কাদির বালুচের বড় দাবি, সবচেয়ে বড় বিপদে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী

পাকিস্তানের ১৫০ সেনাকে হত্যা, মামা কাদির বালুচের বড় দাবি, সবচেয়ে বড় বিপদে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী

পাকিস্তান সত্যিই এক অদ্ভুত দেশ। এবার বালুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) পাকিস্তানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন জাফর এক্সপ্রেস দখল করে নিয়েছে এবং ৪০০ যাত্রীকে জিম্মি করেছে। বিএলএ-র মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই অভিযান বিএলএ মজিদ ব্রিগেড, ফতেহ স্কোয়াড এবং এসটিওএস যৌথভাবে চালাচ্ছে।

ট্রেনের দখল হওয়ার খবর পাওয়া মাত্রই পাকিস্তানের সরকার এবং সেনাবাহিনীর টনক নড়ে গেছে। জিম্মিদের মুক্ত করতে চেষ্টা চলছে। আসুন, জেনে নেওয়া যাক সর্বশেষ আপডেট…

১৫০ পাকিস্তানি সেনার মৃত্যু দাবি

সিএনএন-নিউজ১৮-কে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বেলুচিস্তানের নেতা মামা কাদির বালুচ দাবি করেছেন যে, জাফর এক্সপ্রেসে যাত্রারত ১৫০ পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিএলএ স্বাধীনতার জন্য বারবার এমন অভিযান চালিয়ে এসেছে। আগেও তারা বহু লোককে বন্দি করেছে। এবার তারা জানতে পারে যে ঈদের ছুটিতে থাকা অনেক সেনা এই ট্রেনে যাচ্ছিল। তাদের আলাদা করে হত্যা করা হয়েছে। এটি এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় অপারেশন।

বালুচিস্তানে জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনের উপর বালুচ বিদ্রোহীদের হামলার কারণে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী চরম সংকটে পড়েছে। কারণ বালুচ বিদ্রোহীরা ঘোষণা করেছে, যতক্ষণ না তাদের দাবি মানা হবে, ততক্ষণ সেনাদের হত্যা করা হবে।

সেনারা পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করলে হত্যা

সিএনএন-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ট্রেনে থাকা যেসব সেনা বালুচ বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করার চেষ্টা করেছিল, তাদের হত্যা করা হয়েছে।

স্থানীয় পুলিশের বরাতে জানা গেছে, এখনো প্রায় ৩৫০ জন লোক বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে। তবে বিদ্রোহীরা কেবল সেনাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে। বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মির দাবি অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৩০ জন সেনা নিহত হয়েছে।

পাকিস্তান সরকারের অনুরোধ ও সেনাবাহিনীর পাল্টা হামলার প্রস্তুতি

পাকিস্তান সরকার বালুচ বিদ্রোহীদের অনুরোধ করেছে যাতে তারা জিম্মিদের ছেড়ে দেয়। কিন্তু সেনাবাহিনী রাতের মধ্যেই বড় অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করছে। অন্যদিকে বালুচ লিবারেশন আর্মিও পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা তোপ ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করে আক্রমণের পরিকল্পনা করছে।

৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম

বিএলএ দাবি করেছে যে, এখন পর্যন্ত ৩০ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। তারা পাকিস্তানের সঙ্গে বন্দি বিনিময়ের জন্য ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে। এটি চতুর্থবার যখন বিএলএ বন্দি বিনিময়ের প্রস্তাব দিল, কিন্তু পাকিস্তানি সেনারা বলপ্রয়োগের পথ বেছে নিয়েছে।

গোলাগুলির ভয়াবহতা ও ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ

এপি ও রয়টার্স-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিদ্রোহীরা একটি ট্রেনে হামলা চালিয়েছে এবং শত শত যাত্রীর ভাগ্য অনিশ্চিত। তাদের উদ্ধার করতে অভিযান শুরু করা হয়েছে, পাশাপাশি ব্যাক চ্যানেল যোগাযোগও চলছে।

রয়টার্স আরও জানিয়েছে, একটি টানেলের কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে এবং পুরো পাহাড়ি এলাকা গুলির শব্দে কেঁপে উঠছে। দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র গুলি বিনিময় হচ্ছে। মনে হচ্ছে, বালুচ বিদ্রোহীরা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েই এসেছে। তাদের কাছে তোপ রয়েছে, যা দিয়ে তারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে।

ফিদায়িন বাহিনীর দখলে সব জিম্মি

বিএলএ-র ফিদায়িন ইউনিট মজিদ ব্রিগেড সব জিম্মিকে নিয়ন্ত্রণ করছে। বিএলএ-র মুখপাত্র জিয়ান্দ বালুচ জানিয়েছেন, যদি পাকিস্তানি সেনারা আক্রমণ চালায়, তাহলে সমস্ত জিম্মিকে হত্যা করা হবে এবং বিদ্রোহীরা শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যাবে।

২০ সেনার মৃত্যু, সেনাদের জন্য আলটিমেটাম

বিএলএ একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ২০ পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করা হয়েছে, এবং আরও অনেক আহত হয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বিদ্রোহীদের আলটিমেটাম দিয়েছে।

বিএলএ বলেছে, ‘আমরা সব সাধারণ নাগরিকদের মুক্ত করে দিয়েছি, তবে ১০০-এর বেশি পাকিস্তানি সেনা এবং আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য আমাদের দখলে রয়েছে।’ তারা বলেছে, ‘এটি প্রমাণ করে যে, বালুচিস্তানের বিদ্রোহ আর নিম্ন স্তরের বিদ্রোহ নয়।’

পাকিস্তানি সেনার মৃত্যু ও আতঙ্কিত হেলিকপ্টার অভিযান

বিএলএ-র হামলার একটি ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে, যেখানে পাকিস্তানি সেনার হেলিকপ্টারগুলো তাদের সেনাদের বাঁচানোর জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে।

বিএলএ-র সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে জাফর এক্সপ্রেস

বিএলএ স্পষ্ট করেছে যে, জিম্মিদের মধ্যে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, পুলিশ, আইএসআই ও এএটিএফ-এর সক্রিয় সদস্যরা রয়েছে, যারা ছুটিতে ভ্রমণ করছিল। সাধারণ নাগরিকদের নিরাপদে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

তারা সতর্ক করেছে যে, ‘যদি সামরিক অভিযান চালানো হয়, তাহলে সমস্ত জিম্মিকে হত্যা করা হবে।’

অভিযানের বর্তমান অবস্থা

সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এখনও ১৮২ জন যাত্রী বিএলএ-র নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দাবি করা হচ্ছে যে, বালুচ যোদ্ধারা ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।

নারী ও শিশুদের ছেড়ে দেওয়া, সেনা ও আইএসআই কর্মকর্তারা আটক

বিএলএ নারী ও শিশুদের ছেড়ে দিয়েছে, কিন্তু ১০০-এর বেশি সেনা এবং আইএসআই কর্মকর্তাদের আটক রেখেছে।

সংঘর্ষে ১১ সেনা নিহত

এখন পর্যন্ত পাকিস্তানি বাহিনীর ১১ জন সেনা নিহত হয়েছে।

শেষ মুহূর্তের আপডেট

পাকিস্তানি মিডিয়ার বরাতে জানা গেছে, বিদ্রোহীদের হামলায় ৬ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে, যারা ট্রেনের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল।

বিএলএ হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যদি তাদের ওপর হামলা করা হয়, তাহলে তারা সমস্ত জিম্মিকে হত্যা করবে।

পাকিস্তানি সংবাদপত্র ডন জানিয়েছে, মঙ্গলবার বালুচিস্তানে পেশোয়ারগামী ট্রেনে হামলা হয়েছে। সেনাবাহিনী অ্যালার্ট জারি করেছে।

টানেলে ট্রেন থামিয়ে বিদ্রোহীদের হামলা

পাকিস্তান রেলওয়ে জানিয়েছে, যখন ট্রেনটি টানেল-৮ এর মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল, তখনই সশস্ত্র বিদ্রোহীরা ট্রেন থামিয়ে দেয়।

এখনও পর্যন্ত জিম্মিদের অবস্থা সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই। হাসপাতালগুলোতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। সেনা বাহিনী ও অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।

এই অভিযান পাকিস্তানের জন্য এক বিরাট সংকটের জন্ম দিয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *