30 বছরের পর মহিলাদের অবশ্যই করানো উচিত এই মেডিকেল স্ক্রিনিং টেস্ট, স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমবে
গ্লোবাল গবেষণার তথ্য
একটি গ্লোবাল গবেষণা অনুযায়ী, প্রায় এক বিলিয়ন মহিলা যারা ২০২২ সালে সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে তিনজনের একজন বলেছেন যে তারা গত দিনটির বেশিরভাগ সময় শারীরিক ব্যথায় কাটিয়েছেন। এছাড়াও, প্রতি চারজন মহিলার মধ্যে একজন, অর্থাৎ প্রায় ৭০০ মিলিয়ন মহিলা, এমন স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হন যা তাদের দৈনন্দিন কাজ করতে বাধা দেয়।
এই তথ্য আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে আমরা মহিলাদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে কতটা অনবগত। তাই শুধুমাত্র মহিলাদের বিশেষ দিন উদযাপন করাই যথেষ্ট নয়, বরং তাদের সুস্থ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করাও জরুরি।
৩০ বছরের পর করানো উচিত গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা
মহিলাদের সুস্থতা নিশ্চিত করতে নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ করানো গুরুত্বপূর্ণ। কিছু রোগ এবং স্বাস্থ্যগত সমস্যা আছে, যা প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত করা গেলে প্রতিরোধ বা চিকিৎসা করা সম্ভব।
৩০-এর দশক একজন মহিলার জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সময়। এই সময়ে কিছু রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। তবে যদি এগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা যায়, তাহলে প্রতিরোধ করা সম্ভব। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করালে রোগ দ্রুত শনাক্ত করা যায়, ফলে সময়মতো চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হয়।
লাইফস্টাইল পরিবর্তন করা প্রয়োজন
গুরুতর রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত মহিলাদের অবশ্যই ৫টি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত।
মহিলারা সাধারণত পরিবারের সকলের যত্ন নেন, কিন্তু নিজেদের স্বাস্থ্য নিয়ে কম ভাবেন। তাই আজ আমরা এমন কিছু মেডিকেল চেকআপের কথা বলবো যা প্রত্যেক মহিলার প্রতি বছর করানো উচিত।
স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে বিএরসিএ জিন মিউটেশন টেস্ট
৩৫ বছর বয়সের পর মহিলাদের বিএরসিএ (BRCA) জিন মিউটেশন টেস্ট করানো জরুরি। এই জেনেটিক টেস্টের মাধ্যমে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি সম্পর্কে জানা যায়। পরিবারের কারও যদি আগে স্তন ক্যান্সার হয়ে থাকে, তবে এই পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জেনেটিক রোগ শনাক্ত করার পরীক্ষা
এটি একটি বিশেষ মেডিকেল পরীক্ষা, যার মাধ্যমে মহিলার জিনগত রোগের ঝুঁকি বা সম্ভাবনা নির্ণয় করা যায়। যদি পরিবারে কোনও গুরুতর রোগ থেকে থাকে, তবে এই পরীক্ষা মহিলাকে সেই রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে পারে।
এই জেনেটিক পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যান্সারের ঝুঁকিও চিহ্নিত করা যায়।
হৃদরোগ সম্পর্কিত জেনেটিক পরীক্ষা
বয়স বাড়ার সাথে সাথে হৃদযন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই মহিলাদের হৃদরোগ সংক্রান্ত পরীক্ষা করানো উচিত।
এর মাধ্যমে হাইপারকোলেস্টেরোলেমিয়া (Hypercholesterolemia) এবং হাইপারট্রফিক কার্ডিওমায়োপ্যাথি (Hypertrophic Cardiomyopathy) এর মতো জেনেটিক হৃদরোগ নির্ণয় করা সম্ভব।
৩৫ বছর বয়সের পর আলঝাইমার টেস্ট করানো জরুরি
আলঝাইমার (Alzheimer’s Disease) সাধারণত বয়স বাড়ার সাথে সাথে দেখা যায়।
এই রোগের মূল কারণ হলো শরীরে APOE জিন থাকা। জেনেটিক পরীক্ষার মাধ্যমে মহিলারা এই রোগের ঝুঁকি আগেভাগেই জানতে পারেন এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে পারেন।
সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার স্ক্রিনিং বাধ্যতামূলক
৩৫ বছর বয়সের পর মহিলাদের অবশ্যই সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার স্ক্রিনিং করানো উচিত।
এই স্ক্রিনিং-এর মাধ্যমে সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার শনাক্ত করা যায় এবং HPV জেনোটাইপিং টেস্ট করানো হয়।
বিশ্বব্যাপী মহিলাদের মধ্যে সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের হার বাড়ছে, বিশেষত ভারতে এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। তাই মহিলাদের অবশ্যই নিয়মিত স্ক্রিনিং করানো উচিত।