পাকিস্তানে ট্রেন হাইজ্যাক: সেনাবাহিনীর দাবি ও বাস্তবতার সংঘর্ষ

পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন হাইজ্যাকের ঘটনায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা সফলভাবে সব বন্দিকে মুক্ত করেছে। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আহমদ শরীফ চৌধুরী জানান, অভিযানে ৩৩ বিদ্রোহী নিহত এবং ২১২ জন বন্দিকে মুক্ত করা হয়েছে। তবে, বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) সেনাবাহিনীর এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, এখনও তাদের কাছে ১৫০ জনেরও বেশি বন্দি রয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক পাঞ্জাবি সেনা সদস্য জানান, তিনি নিজ চোখে ৫০ থেকে ৬০ জন পাকিস্তানি সেনাকে বিএলএ বিদ্রোহীদের হাতে নিহত হতে দেখেছেন। এই বিবৃতি সেনাবাহিনীর দাবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক, যা পরিস্থিতি সম্পর্কে নতুন প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।
জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনে মোট ৪৪০ জন যাত্রী ছিলেন, যাদের মধ্যে ২১ জনকে ট্রেন দখলের সময়ই হত্যা করা হয়, এদের মধ্যে চারজন পাকিস্তানি সেনা সদস্যও ছিলেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অভিযানে ২০০ জনেরও বেশি বন্দিকে মুক্ত করা হয়। বিএলএ দাবি করেছে, তারা এখনও ১৫০ জনেরও বেশি বন্দিকে ধরে রেখেছে।
বিএলএ-এর এই হামলা পূর্বপরিকল্পিত ছিল। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় কোয়েটা থেকে পেশোয়ারের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া ট্রেনটি দুপুর ১.৩০ টায় সিব্বিতে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু বলানের মাশফাক টানেলে হামলার সময় ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয় এবং বিএলএ সেটিকে হাইজ্যাক করে। বিএলএ-এর মজিদ ব্রিগেড এবং ফাতেহ গ্রুপ এই অভিযানে অংশ নেয়। বলান পাসের মাশফাক টানেলের কাছে এই হামলা ঘটে, যা একটি দুর্গম পাহাড়ি এলাকা এবং সেখানে ট্রেনের গতি ধীর ছিল, যা বিএলএ তাদের সুবিধার্থে ব্যবহার করে।
বেলুচিস্তান, পাকিস্তানের সবচেয়ে অশান্ত প্রদেশ, যেখানে ১৯৪৮ সাল থেকে পাকিস্তানি সেনা ও বেলুচদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। বেলুচিস্তানের মানুষ পাকিস্তান থেকে আলাদা হওয়ার দাবি করে আসছে এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের এই অঞ্চলে প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় হামলার ঘটনাও বেড়েছে।