আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন রয়েছে এবং অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা এখন আরও কঠোর হচ্ছে। খবর অনুযায়ী, মার্কিন সরকার একটি খসড়া প্রস্তুত করেছে, যেখানে পাকিস্তানসহ ৪১টি দেশের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারির পরিকল্পনা করা হয়েছে।

এইবার নিষেধাজ্ঞা আরও ব্যাপক হবে

কর্তৃপক্ষের মতে, এবারের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আগের তুলনায় অনেক বেশি বিস্তৃত হবে। ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে সাতটি মুসলিম প্রধান দেশের নাগরিকদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন।

নিউজ এজেন্সি রয়টার্সের মতে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং ভুটান সেই ৪১টি দেশের তালিকায় রয়েছে, যাদের উপর আমেরিকা ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

সমস্যা সমাধান না হলে ভিসা বাতিল হতে পারে

মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাদের সুপারিশ সংক্রান্ত একটি খসড়া তৈরি করেছেন। এতে পাকিস্তানকে সেই ২৬টি দেশের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যারা আমেরিকান ভিসা নিষেধাজ্ঞার আংশিক স্থগিতাদেশের সম্মুখীন হতে পারে। তবে, যদি শেহবাজ শরীফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান সরকার ৬০ দিনের মধ্যে অভিবাসন সংক্রান্ত সমস্যাগুলো ঠিক করতে পারে, তাহলে বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

তালিকায় ভানুয়াতুও রয়েছে

যেসব দেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, তাদের মধ্যে তুর্কমেনিস্তান, বেলারুশ, ভুটান ও ভানুয়াতু অন্তর্ভুক্ত। উল্লেখযোগ্যভাবে, ভানুয়াতু সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে, যখন আইপিএলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং পলাতক ব্যবসায়ী ললিত মোদী দাবি করেছিলেন যে তিনি সেই দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন।

এর আগে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সংবাদকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র শফকত আলী খান বলেছিলেন যে, পাকিস্তানকে এ ধরনের কোনো আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞার ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি। তিনি আরও বলেছিলেন যে, বর্তমানে এগুলো সবই অনুমান এবং এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোর প্রয়োজন নেই।

যখন পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূতকে আমেরিকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি

সম্প্রতি আমেরিকা ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক আরও খারাপ হয়ে যায়, যখন তুর্কমেনিস্তানে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত কেকে আহসান ওয়াগনকে আমেরিকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি এবং লস অ্যাঞ্জেলস থেকে নির্বাসিত করা হয়। যদিও আমেরিকা কোনও নির্দিষ্ট কারণ জানায়নি, রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, মার্কিন অভিবাসন ব্যবস্থা বিতর্কিত ভিসা বিষয়ক কিছু তথ্য খুঁজে পাওয়ার কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়।

১০টি দেশ ‘রেড লিস্ট’-এ

নতুন খসড়া অনুযায়ী, ১০টি দেশকে ‘রেড লিস্ট’-এ রাখা হয়েছে, যাদের নাগরিকদের ভিসা সম্পূর্ণরূপে বাতিল করা হবে। এই দেশগুলো হল— আফগানিস্তান, কিউবা, ইরান, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, ভেনেজুয়েলা ও ইয়েমেন।

আরও পাঁচটি দেশ— ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার এবং দক্ষিণ সুদানকে দ্বিতীয় গ্রুপে রাখা হয়েছে। এই দেশগুলোর নাগরিকদের উপর কিছু শর্তসাপেক্ষ নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে পর্যটক, ছাত্র ভিসাসহ অন্যান্য অভিবাসী ভিসাও প্রভাবিত হতে পারে।

উল্লেখ্য, ২০ জানুয়ারি, দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন, যেখানে বলা হয়েছিল যে, নিরাপত্তা ঝুঁকি চিহ্নিত করতে আমেরিকায় প্রবেশকারী যে কোনো বিদেশি নাগরিকের ব্যাপকভাবে পরীক্ষা করা উচিত।