ভারত বাংলাদেশ সেনাপ্রধানকে রক্ষা করল! জানুন কিভাবে

গত সপ্তাহে বাংলাদেশে এক অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়েছিল। সেনাপ্রধান জেনারেল ওকার-উজ-জামানের বিরুদ্ধে এই অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে, ভারত এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। বাংলাদেশি গোয়েন্দা সংস্থা, ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স মহাপরিচালকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে একাধিক তথ্য পাওয়া গেছে।
জেনারেল ওকার-উজ-জামান বাংলাদেশে উগ্রপন্থীদের চাপে মাথা নত করেননি।
বরং, তিনি একাধিকবার উগ্রপন্থীদের সতর্ক করেছেন। তিনি তার কথা এবং কার্যকলাপের মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে সেনাবাহিনীকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে জড়িত হতে বাধ্য করা উচিত নয়। একই সঙ্গে, তিনি পাকিস্তানের সঙ্গে সামরিক চুক্তির ফাইলেও তাড়াহুড়া করে স্বাক্ষর করতে চাননি।
পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই তাকে অপসারণের পরিকল্পনা করেছিল। এই কারণে, বাংলাদেশি সেনাবাহিনীর বহু উগ্রপন্থী ও পাকিস্তানপন্থী কর্মকর্তাকে নির্বাচিত করা হয়েছিল। এই অভ্যুত্থানের মূল দায়িত্ব লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুহাম্মদ ফাইজুর রহমানকে দেওয়া হয়। তবে, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি এই খবর আগেই জানতে পারে। তারা ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশ সেনাপ্রধানকে সতর্ক করে। বিষয়টি আমেরিকা ও ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশকেও জানানো হয়। দিল্লি যখন এই বিষয়টি জানতে পারে, তখন তারা এর গুরুত্ব উপলব্ধি করে। পশ্চিমা বিশ্ব থেকে মুহাম্মদ ইউনুসের কাছে একটি বার্তা পৌঁছায়, যেখানে বলা হয় যে আপনার সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান হতে চলেছে। এরপর তা প্রতিহত করা হয়। ঢাকায় অবস্থানরত ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ওকার-উজ-জামানের সঙ্গে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎ করান।
জানা গেছে, বাংলাদেশ সেনাপ্রধানের যোগাযোগ যন্ত্রের ওপর ট্যাপিং শুরু হয়েছিল। ভারতের পরামর্শে, জেনারেল ওকার-উজ-জামান ১৩ মার্চ মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র সফর করেন। বলা হয়েছিল যে তিনি সেখানে মোতায়েন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের সঙ্গে কথা বলতে যাচ্ছেন। প্রকৃতপক্ষে, শীর্ষ মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা সেখানে তার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করেন। তারা নিশ্চিত করতে চায় যে মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায়। জেনারেল ওকার-উজ-জামান মার্কিন সেনাবাহিনীকে এই বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। এরপর, সেনাপ্রধানকে রক্ষা করার জন্য ইউনুস সরকারের ওপর চাপ বাড়তে থাকে। তবে, বাংলাদেশে পাকিস্তানপন্থী সামরিক কর্মকর্তারা সব কিছু জানত। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, ৬ মার্চ ঢাকা ফেরার পর ওকার-উজ-জামানকে গ্রেপ্তার করা হবে।
তবে, এবারও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি আগেভাগেই এ তথ্য জেনে যায়। তাদের পরামর্শে, বাংলাদেশ সেনাপ্রধান ঢাকার পরিবর্তে তেজগাঁও বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করেন। সেখানে তার বিশ্বস্ত সামরিক কর্মকর্তারা তাকে অভ্যর্থনা জানান। সেই সময়, সেনাদের বিশেষ প্রস্তুত রাখা হয় যাতে কর্মকর্তাদের দেওয়া যেকোনো আদেশ কার্যকর করা যায়। এরপর, ওকার-উজ-জামান বিশাল নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর সঙ্গে ঢাকায় প্রবেশ করেন। বিশ্বস্ত কর্মকর্তারা তার বাড়ি এবং কার্যালয় ঘিরে ফেলে। ঠিক সেই সময়, আমেরিকা থেকে ইউনুসের কাছে একটি চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি পাঠানো হয়। সব মিলিয়ে, অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। তবে, বাংলাদেশ সেনাপ্রধানের জীবনের ঝুঁকি এখনো কাটেনি। ভবিষ্যতে কী ঘটবে, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।