১৫ বছরের মেয়ে ওরাল সেক্সের মাধ্যমে গর্ভবতী হয়েছিল… ডাক্তাররা জানালেন কীভাবে এই অলৌকিক ঘটনাটি ঘটেছে-

১৫ বছরের মেয়ে ওরাল সেক্সের মাধ্যমে গর্ভবতী হয়েছিল… ডাক্তাররা জানালেন কীভাবে এই অলৌকিক ঘটনাটি ঘটেছে-

দক্ষিণ আফ্রিকার লেসোথোতে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীর সাথে ঘটে যাওয়া এক অদ্ভুত ঘটনা চিকিৎসা জগৎকে হতবাক করে দিয়েছে। এই কিশোরীর যোনিপথের স্বাভাবিক ছিদ্র ছিল না, তবুও সে ওরাল সেক্সের মাধ্যমে গর্ভবতী হয়েছিল। ঘটনাটি এতটাই অস্বাভাবিক ছিল যে এটি ব্রিটিশ জার্নাল অফ অবস্টেট্রিক্স অ্যান্ড গাইনোকোলজিতে রিপোর্ট করা হয়েছিল।

আসুন, এই অনন্য ঘটনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।

হঠাৎ ব্যথা শুরু হওয়া
ঘটনাটি ১৯৮৮ সালের, যখন এই কিশোরীকে তীব্র পেট ব্যথার অভিযোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ব্যথাটা এতটাই অদ্ভুত ছিল যে প্রসববেদনার মতো অনুভূত হচ্ছিল। যখন ডাক্তাররা তদন্ত শুরু করলেন, তখন তারা যে সত্য আবিষ্কার করলেন তা ছিল চমকপ্রদ। এই কিশোরী আসলে গর্ভবতী ছিল এবং প্রসব বেদনার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ছিল যোনিপথ ছাড়াই সে কীভাবে গর্ভবতী হল?

যোনিপথে কোন পথ ছিল না
তদন্তের সময়, দেখা গেছে যে কিশোরটির ‘ভ্যাজাইনাল অ্যাট্রেসিয়া’ নামক একটি বিরল জন্মগত সমস্যা ছিল। এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে যোনিপথে কোনও প্রাকৃতিক পথ থাকে না। এই সমস্যাটি ৪,০০০ থেকে ১০,০০০ নবজাতক কন্যার মধ্যে একজনকে প্রভাবিত করে। এই পরিস্থিতিতে, ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (IVF) এর মতো কৌশল ব্যবহার না করা হলে স্বাভাবিক গর্ভাবস্থা আসাম্ভব বলে মনে করা হয়। কিন্তু এই কিশোরের এমন কোনও প্রক্রিয়া হয়নি।

সিজারিয়ানের মাধ্যমে জন্ম
যেহেতু কোনও যোনিপথ ছিল না, তাই ডাক্তারদের সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে শিশুটির প্রসব করতে হয়েছিল। অস্ত্রোপচার সফল হয়েছিল এবং ৬.২ পাউন্ড ওজনের একটি সুস্থ শিশুর জন্ম হয়েছিল। কিন্তু এই গর্ভাবস্থা কীভাবে সম্ভব হয়েছিল তা নিয়ে রহস্য এখনও রয়ে গেছে।

গোপন কথা প্রকাশ করা

কিশোরীটি জানিয়েছে যে গত কয়েক মাস ধরে সে তার শরীরে পরিবর্তন লক্ষ্য করেছে, কিন্তু সে কখনও গর্ভাবস্থার সন্দেহ করেনি কারণ তার যোনিপথ ছিল না এবং ঐতিহ্যবাহী সহবাসও ছিল না। ডাক্তাররা যখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন, তখন এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। নয় মাস আগে, পেটে ছুরির আঘাতের চিকিৎসার জন্য তিনি হাসপাতালে এসেছিলেন। তার প্রাক্তন প্রেমিক যখন তাকে আক্রমণ করে তখন সে এই আঘাত পায়। আক্রমণের আগে সে তার নতুন সঙ্গীর সাথে ওরাল সেক্সে লিপ্ত হচ্ছিল।

তুমি কিভাবে গর্ভবতী হলে?
ডাক্তাররা বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করে একটি সম্ভাবনায় পৌঁছেছেন। তারা বিশ্বাস করত যে ওরাল সেক্সের সময় গিলে ফেলা শুক্রাণু কোনওভাবে তার পেটে আঘাতের মাধ্যমে তার প্রজনন অঙ্গে পৌঁছেছিল। আক্রমণের সময় যে আঘাত লেগেছিল তা শুক্রাণুকে জরায়ুতে পৌঁছানোর এবং ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করার জন্য একটি পথ তৈরি করে। এই সিদ্ধান্তটি আরও দৃঢ় হয়েছিল কারণ শিশুটি তার বাবার মতো দেখতে ছিল, অলৌকিক গর্ভাবস্থার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছিল।

পাকস্থলীর অ্যাসিড এবং অপুষ্টি
সাধারণত পাকস্থলীর অ্যাসিড এতটাই শক্তিশালী যে তাৎক্ষণিকভাবে শুক্রাণু ধ্বংস করে দেয়, কিন্তু ডাক্তাররা বিশ্বাস করেছিলেন যে কিশোরীটি সেই সময় অপুষ্টিতে ভুগছিল। অপুষ্টির কারণে, তার পেটে অ্যাসিডের পরিমাণ কম ছিল, যার কারণে শুক্রাণু বেঁচে থাকতে পারে এবং আঘাতের মাধ্যমে জরায়ুতে পৌঁছাতে পারে। এটি ছিল এমন একটি পরিস্থিতি যা চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য অত্যন্ত বিরল এবং আশ্চর্যজনক ছিল।

একটি অনন্য ঘটনা
যদিও এই ঘটনাটি ১৯৮৮ সালের, সম্প্রতি স্কটল্যান্ডের এক মহিলার গল্পের পর এটি আবার আলোচনায় এসেছে। সেই স্কটিশ মহিলা ভেবেছিলেন যে তার অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে গেছে, কিন্তু ৪০ মিনিট পরে তিনি একটি সন্তানের জন্ম দেন। এই দুটি ঘটনাই প্রমাণ করেছে যে প্রকৃতি এবং মানবদেহ মাঝে মাঝে এমন গোপন রহস্য প্রকাশ করে যা বিশ্বাস করা কঠিন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *