চিনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে ইউনূসের বড় পদক্ষেপ, ভারতের চিন্তা বাড়ল?

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মোহাম্মদ ইউনূস আগামী ২৬ মার্চ চিন সফরে যাচ্ছেন। এই সফরে তিনি চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। ইউনূস ২৯ মার্চ পর্যন্ত বেজিংয়ে অবস্থান করবেন বলে জানা গেছে। গত বছর অগাস্টে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ইউনূস চিনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহ দেখিয়েছেন। তাঁর এই সফরকে বাংলাদেশ-চিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশে নিযুক্ত চিনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনও ইউনূসের এই সফর নিয়ে আলোচনা করেছেন।
ইউনূসের এই সফরের একটি বড় লক্ষ্য হলো বাংলাদেশ-চিন সম্পর্ককে আরও গভীর করা। তিনি ২৭ মার্চ বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে ভাষণ দেবেন, যেখানে এশিয়ার পরিবর্তনশীল ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হবে। এই ফোরামে এশিয়ার ২৫টি দেশ ও অস্ট্রেলিয়া অংশ নেয়। ২৮ মার্চ ইউনূস চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন, যেখানে দুই দেশের মধ্যে কিছু বড় ঘোষণা আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, বাংলাদেশে চিনের বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং সৌর শক্তি খাতে সহযোগিতার বিষয়টি আলোচনায় থাকতে পারে।
বাংলাদেশের জন্য এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৪ সালের অগাস্টে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে চিনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বাংলাদেশের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে, চিনও বাংলাদেশে তার প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছে। বিশেষ করে, বাংলাদেশকে একটি উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চিনের সহায়তা অপরিহার্য। এই সফরে চিনের কাছ থেকে বড় বিনিয়োগের প্রত্যাশা করা হচ্ছে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন গতি আনতে পারে।
তবে বাংলাদেশ-চিন সম্পর্কের এই উন্নতি ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা বেড়েছে, বিশেষ করে ইউনূসের চিন ও পাকিস্তানের প্রতি নরম মনোভাবের কারণে। ভারতের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু ইউনূসের নীতিগত পরিবর্তন দিল্লির জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এই প্রেক্ষাপটে, ইউনূসের চিন সফর শুধু বাংলাদেশ-চিন সম্পর্কই নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।