মহারাষ্ট্রের নাগপুরে সোমবার আওরঙ্গজেবের সমাধিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এই সংঘর্ষে প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে ১৫ জন পুলিশকর্মী রয়েছেন। সূত্রের খবর, উত্তেজিত জনতা প্রায় ২৫টি বাইক এবং ৩টি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়।

পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭ জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।

এই সহিংসতা মূলত সাম্ভাজি নগরে আওরঙ্গজেবের সমাধিকে ঘিরে তৈরি হওয়া বিরোধের কারণে হয়েছে। বজরং দল ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এই সমাধি ধ্বংস করার দাবি করেছিল। সোমবার সকালে এই দুই সংগঠন নাগপুরে বিক্ষোভ করেছিল, আর এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, এই সংঘর্ষের পুরো ঘটনা।

১. পুলিশের নিয়ন্ত্রণ এবং মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দফতর জানিয়েছে যে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে। মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবীস নাগরিকদের প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে, নাগপুরের পুলিশ কমিশনার ডঃ রবীন্দর সিংগল জানিয়েছেন যে বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তিনি জানান, এই সহিংসতা রাত ৮টা থেকে ৮:৩০টার মধ্যে ঘটে, যেখানে দুইটি যানবাহন পোড়ানো হয় এবং পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটে।

২. নিতিন গড়কড়ির শান্তির আহ্বান

নাগপুরের সংসদ সদস্য নিতিন গড়কড়ি শহরের বাসিন্দাদের শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “কিছু গুজবের কারণে নাগপুরে ধর্মীয় উত্তেজনার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।” তিনি আরও বলেন যে সরকার দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

৩. কংগ্রেসের সমালোচনা

মহারাষ্ট্র কংগ্রেস প্রধান হর্ষবর্ধন সাপকাল নাগপুরের সহিংসতার জন্য রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরকে দায়ী করেছেন এবং এটিকে তাদের ব্যর্থতা বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি সম্প্রতি কিছু মন্ত্রীদের “উসকানিমূলক ভাষণ” দেওয়ার অভিযোগও তুলেছেন।

৪. বিজেপির প্রতিক্রিয়া

মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী এবং বিজেপির রাজ্য প্রধান চন্দ্রশেখর বাওনকুলে রাজনৈতিক দল ও নেতাদের শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন এবং আশ্বস্ত করেছেন যে দোষীদের চিহ্নিত করা হবে। তিনি ঘটনাটিকে রাজনৈতিক রঙ না দিতে সতর্ক করেছেন এবং নাগপুরের সুনাম রক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন।

৫. ভাইরাল ভিডিও

সহিংসতার সময় এলাকায় সরকারি সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিভিন্ন ভিডিওতে জ্বলন্ত যানবাহন ও ধ্বংসস্তূপ দেখা গেছে। এক ভিডিওতে দেখা যায় যে বিক্ষোভের সময় একটি জেসিবি মেশিনেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।

৬. শিবসেনা (ইউবিটি) এবং কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া

শিবসেনা (ইউবিটি) বিধায়ক আদিত্য ঠাকরে, কংগ্রেস নেতা পবন খেরা এবং শিবসেনা (ইউবিটি) সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছেন এবং নাগপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

৭. তদন্ত ও নজরদারি

পুলিশ আধিকারিকরা সিসিটিভি ফুটেজ এবং অন্যান্য ভিডিও ক্লিপ পর্যালোচনা করছে, যাতে সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা যায়।