গোয়া ঘুরতে যাওয়ার চেয়ে দুবাই সফর সস্তা! পর্যটন শিল্প নিয়ে চমকপ্রদ দাবি…

ভাবুন, আপনি কোনো উইকএন্ডে রিল্যাক্স করার পরিকল্পনা করছেন এবং আপনার সামনে দুটি অপশন আছে – গোয়া বা দুবাই। এখন একটু চমকে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হন, কারণ দুবাই ভ্রমণ এখন গোয়া থেকে সস্তা হয়ে যাচ্ছে!
এটি কোনো মজাক নয়, বরং অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টর উজ্জ্বল সুতারিয়া জানিয়েছেন যে ভারতে ভ্রমণ এখন এত ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে যে মানুষ বিদেশ সফরকে ভালো বিকল্প হিসেবে দেখছে। তাহলে কি ভারত নিজেই তার পর্যটন শিল্পের পতন ঘটাচ্ছে?
চলুন দেখি কীভাবে রিয়েল এস্টেটের মূল্যবৃদ্ধি থেকে শুরু করে হোটেল-রেস্তোরাঁর উচ্চমূল্যবান ট্যারিফ পর্যন্ত, কীভাবে ভারতের পর্যটন খাত সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
ভারতের পর্যটন খাত কি নিজেই নিজের ক্ষতি করছে?
অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টর উজ্জ্বল সুতারিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন – “ভারত কি তার নিজস্ব পর্যটন খাতকে ব্যয়বহুল করে নিজেকে এর বাইরে সরিয়ে দিচ্ছে?” তার মতে, বর্তমানে দুবাই বা জর্জিয়ার মতো আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ভ্রমণ গোয়া, মানালি বা মুম্বাইয়ের তুলনায় সস্তা হয়ে যাচ্ছে। যা এক সময় সাধারণ মানুষের জন্য সাশ্রয়ী পর্যটন বিকল্প (affordable travel options) ছিল, এখন তা কেবল তাদের জন্য সীমাবদ্ধ যারা উচ্চমূল্য পরিশোধ করতে প্রস্তুত। তবে এর কারণ কেবল ₹400 মূল্যের বিমানবন্দরের চা বা ব্যয়বহুল হোটেল ভাড়া নয়।
রিয়েল এস্টেটের দাম বৃদ্ধির প্রভাব
সুতারিয়ার মতে, ভারতের পর্যটন খাত রিয়েল এস্টেটের দাম বৃদ্ধির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গত এক দশকে সম্পত্তির মূল্য ব্যাপকভাবে বেড়েছে, যার ফলে হোটেল এবং রেস্তোরাঁগুলো তাদের বিনিয়োগের ভারসাম্য রক্ষার জন্য তাদের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে।
- হোটেল: জমি ও সম্পত্তির মূল্যবৃদ্ধির কারণে হোটেল মালিকরা খরচ সামলাতে রুম ভাড়া বাড়াচ্ছেন।
- রেস্তোরাঁ: উচ্চমূল্যের ভাড়ার কারণে খাবার ও পানীয়র দাম বেড়ে গেছে।
- রিটেইল দোকানদার: পর্যটনস্থলগুলিতে দোকান ভাড়ার মূল্য বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাজারেও উচ্চমূল্যের প্রভাব পড়েছে।
পর্যটন শিল্পের মূল্যবৃদ্ধির চমকপ্রদ পরিসংখ্যান
সুতারিয়া কিছু চমকপ্রদ তথ্যও প্রকাশ করেছেন, যেমন:
- পর্যটনকেন্দ্রের জমির দাম অ-পর্যটন এলাকাগুলির তুলনায় ১৫০% বেশি।
- অযোধ্যায় জমির দাম কয়েক বছরের মধ্যে ১০ গুণ বেড়েছে।
- বেঙ্গালুরু ও হায়দরাবাদে ২০১৯ সালের তুলনায় ৯০% মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে।
- অনুমান করা হচ্ছে যে ভারতের রিয়েল এস্টেট বাজার ২০৩০ সালের মধ্যে ১ ট্রিলিয়ন ডলার ছুঁতে পারে।
সংকট না নতুন সুযোগ?
যদিও সুতারিয়া এই পরিস্থিতিকে কেবলমাত্র সংকট হিসেবে দেখছেন না, বরং তিনি এটি স্টার্টআপ এবং উদ্যোক্তাদের জন্য একটি নতুন সুযোগ হিসেবেও ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি মনে করেন, সাশ্রয়ী থাকার ব্যবস্থা, অফবিট গন্তব্য এবং উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারে।
শেষে তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন রেখেছেন – “এই পরিবর্তন কি ভারতীয় পর্যটনকে আরও ভালো করবে, নাকি এটিকে আরও ব্যয়বহুল করে তুলবে?”