মধ্যপ্রদেশের ধার জেলায় তৈরি হবে ডাইনোসর ন্যাশনাল পার্ক, পর্যটকদের সংখ্যা বাড়বে

মধ্যপ্রদেশের ধার জেলায় একটি ডাইনোসর ন্যাশনাল পার্ক তৈরি করা হবে। পাশাপাশি, এখানে সরদারপুর ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারিও গড়ে তোলা হবে। জানিয়ে রাখি, ধার জেলার বাগ তহসিলে এই ডাইনোসর ন্যাশনাল পার্ক স্থাপিত হবে।
এই পার্কের চারপাশে রয়েছে বোরকুরি, রিসাওয়ালা, পাডলিয়া এবং গঙ্গকুই (জামনিয়াপুরা) গ্রাম। এটি অন্যান্য জাতীয় উদ্যানের মতোই ইকো-সেন্সিটিভ জোনের আওতায় থাকবে। এটি একটি সংরক্ষিত এলাকা যেখানে বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ রক্ষার বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ন্যাশনাল পার্কটি ভোপাল ও মেঘনগর রোডের মধ্যে অবস্থিত হবে। মেঘনগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে এর দূরত্ব হবে ৯৫ কিলোমিটার, ইন্দোর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ১৫২ কিলোমিটার এবং ভোপাল রেলওয়ে স্টেশন থেকে ৩৫০ কিলোমিটার।
পর্যটকদের সংখ্যা বাড়বে
এই ন্যাশনাল পার্কের আশপাশে রয়েছে বড়কেশ্বর মহাদেব মন্দির, হনুমান মন্দির, ঐতিহাসিক বাগ গুহা ও দুর্গ, যা পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে। এখানে শীশম, নিম, আমলকি-সহ হাজার হাজার ঔষধি ও আয়ুর্বেদিক উদ্ভিদের প্রজাতি থাকবে। এছাড়া, এখানে সিয়াল, শিয়াল এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণীও দেখা যাবে।
কবে ভ্রমণ করা যাবে?
পর্যটকদের জন্য এই পার্ক বিশেষ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হবে। প্রতি বছর এখানে প্রায় ১৫ হাজারেরও বেশি পর্যটক আসেন। পার্কটি তৈরি হয়ে গেলে পর্যটকদের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বাড়বে। এই অঞ্চলে ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে ভালো সময় অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই সময় ৩-৪ গুণ বেশি পর্যটক এখানে আসেন। বিশেষ করে ছুটির দিনে এখানে মানুষের ভিড় আরও বেড়ে যায়।
আদিবাসী সমাজের জন্য কর্মসংস্থান
ডাইনোসর ন্যাশনাল পার্ক নির্মাণের সময় নিশ্চিত করা হবে যে, এতে আদিবাসী সমাজের অধিকার ক্ষুণ্ন না হয়। কারণ, এই অঞ্চলে প্রচুর আদিবাসী জনগোষ্ঠী বসবাস করে। তাদের ঐতিহ্য, উৎসব ও সাংস্কৃতিক জীবনধারা সংরক্ষিত রাখার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হবে। এই পার্কের মাধ্যমে প্রকৃতির সংরক্ষণকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হবে এবং পরিবেশের ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব না পড়ে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। এই পার্কের মাধ্যমে আদিবাসীদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি, এখানকার বাগ প্রিন্ট শিল্পকে উৎসাহিত করা হবে এবং তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্যাংচুয়ারিতে কী কী বন্যপ্রাণী পাওয়া যাবে?
এছাড়াও, সরদারপুর ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এটি ইকো-সেন্সিটিভ জোনের অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এখানে বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণী যেমন শিয়াল, বানর, লাঙ্গুর এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখি থাকবে। বিশেষ করে, এখানে বিরল প্রজাতির খরমোর পাখির সংরক্ষণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে, কারণ এই অঞ্চলে এই পাখির উপস্থিতি বেশি। এছাড়া, এখানে টিক, বাবুল, পলাশ, অঞ্জনসহ বিভিন্ন ধরনের গাছপালার বিস্তৃত পরিসর থাকবে। পরিবেশ সংরক্ষণের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হবে এবং পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য নানাবিধ উদ্যোগ নেওয়া হবে। মালওয়া ও নিমাড় অঞ্চলের দৃষ্টিকোণ থেকে সরদারপুর ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠবে। এছাড়া, এটি প্রাণীবিদ্যা (জুলজি) বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্যও শেখার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হতে পারে।